করোনা উপর্সগে ৭ জলোয় আরও ১৭ জনরে মৃত্যু

প্রকাশ | ০৪ জুলাই ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
দেশের ৭ জেলায় করোনা উপসর্গে ১৭ জনের মৃতু্য হয়েছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার কুমিলস্নায় ৬ জন, বরিশালে ৪ জন, চাঁদপুরে ২ জন, বগুড়ায় ১ জন, রাজশাহীতে ২ জন, যশোরে ১ জন এবং রাঙামাটিতে ১ জন মারা গেছেন। আমাদের আঞ্চলিক অফিস ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর : কুমিলস্না :করোনা উপসর্গ নিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় কুমিলস্না মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ছয়জনের মৃতু্য হয়েছে। এ নিয়ে এপ্রিল থেকে এ পর্যন্ত এ হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ১৩৮ জন। শুক্রবার দুপুরে এসব তথ্য জানান কুমিলস্না মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. সাজেদা খাতুন। তিনি আরও জানান, করোনা উপসর্গে মৃতের মধ্যে চারজন পুরুষ ও দুজন মহিলা। বর্তমানে করোনা পজিটিভ ও উপসর্গ নিয়ে ভর্তি আছে ১১৫ জন। এদের মধ্যে করোনা পজিটিভ ৩৯ জন ও করোনা উপসর্গ রয়েছে ৭৬ জনের। আইসোলেশন ওয়ার্ডে উপসর্গ নিয়ে মারা যান চাঁদপুর ফরিদগঞ্জের আবদুর রশিদ (৮৫), একই এলাকার হাসিনা বেগম (২৭), কুমিলস্নার চৌদ্দগ্রামের আমানগন্ডা গ্রামের আবদুল হামিদ (৪৫)। এছাড়াও উপসর্গ নিয়ে মারা যান কুমিলস্না সদর দক্ষিণের আবুল হোসেন (৪৫), মুরাদনগরের লাভলী বেগম (৭০), চাঁদপুর ফরিদগঞ্জের মনু মিয়া (৬০)। বরিশাল :বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোভিডের উপসর্গ নিয়ে আরও চার রোগীর মৃতু্য হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল নয়টা থেকে রাত সাড়ে নয়টার মধ্যে এই চারজনের মৃতু্য হয়। হাসপাতালের পরিচালক বাকির হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। হাসপাতাল সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে বরিশাল নগরের ৬০ বছর বয়সি এক ব্যক্তি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মারা যান। তিনি গত ১৩ জুন সকালে জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে এই হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন। একই দিন সন্ধ্যা সোয়া সাতটায় পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার এক বৃদ্ধ (৭০) কোভিডের উপসর্গ নিয়ে মারা যান। তিনি সন্ধ্যায় কোভিডের উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তির পরপরই মারা যান। এর আগে সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে পটুয়াখালী সদরের এক নারী (৫৫) করোনা ওয়ার্ডে মারা যান। তিনি গতকাল বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে উপসর্গ নিয়ে এই হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার সকাল নয়টার দিকে মারা যান বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার এক বাসিন্দা (৫০)। তিনি কোভিডের উপসর্গ নিয়ে গত বুধবার বিকাল চারটায় এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের দুজনে নমুনা সংগ্রহ করে আগেই বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের করোনা পরীক্ষাগারে (ল্যাব) পাঠানে হয়েছে। বাকি দুজনের নমুনা মৃতু্যর পরে সংগ্রহ করে পাঠানো হয়। চাঁদপুর :চাঁদপুর সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে দুজনের মৃতু্য হয়েছে। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল শুক্রবার এ কথা জানান। মৃতরা হলেন- ফরিদগঞ্জের সুবিদপর ইউনিয়নের নূরুল ইসলাম মিয়াজি (৭১) ও একই উপজেলার গলস্নাক বাজারের আবু তাহের (৬০)। সুজাউদ্দৌলা বলেন, জ্বর, সর্দি ও কাশি নিয়ে বৃহস্পতিবার নুরুল ও তাহের হাসপাতালে আসেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শক্রবার সকালে তাদের মৃতু্য হয়। মৃত দুজনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে তাদের দাফন করা হবে বলে জানান তিনি। বগুড়া :বগুড়ায় কোভিড-১৯-এ (করোনাভাইরাস) আক্রান্ত হয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন প্রধান শিক্ষকের মৃতু্য হয়েছে। বেসরকারি টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শুক্রবার ভোররাত সোয়া চারটার দিকে তার মৃতু্য হয়। মৃত শিক্ষকের নাম গোলাম রব্বানী (৫৭)। বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটরা এলাকার বাসিন্দা গোলাম রব্বানী একই উপজেলার বুড়ইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং নন্দীগ্রাম উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি ছিলেন বলে বগুড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি জুলফিকার আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রাজশাহী :রাজশাহীতে করোনা উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ব্যাংক কর্মকর্তাসহ আরও দুজন। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে ২টার মধ্যে তাদের মৃতু্য হয়। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক সাইফুল ফেরদৌস এ তথ্য নিশ্চিত করেন। আর উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত ব্যক্তিরা হলেন- রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের (রাকাব) প্রিন্সিপাল অফিসার ও মহানগরীর মহিষবাথান এলাকার এখলাসুর রহমান (৪০) ও নগরের বোয়ালিয়া থানাধীন এক নারী (৪৮)। অভয়নগর (যশোর) :যশোরের অভয়নগরে করোনা উপসর্গ নিয়ে নিতীশ মজুমদার (৩২) নামে এক কৃষকের মৃতু্য হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। মৃত নিতীশ মজুমদার উপজেলার সুন্দলী ইউনিয়নের সড়াডাঙ্গা গ্রামের রবীন মজুমদারের ছেলে। পরিবার সূত্র জানায়, নিতীশ মজুমদার দীর্ঘদিন শ্বাসকষ্টজনিত রোগে ভুগছিলেন। বৃহস্পতিবার বিকালে বাড়ির পাশে মাছ শিকার করার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাত আনুমানিক ৯টার সময় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। কাপ্তাই (রাঙামাটি) :রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার চিৎমরমের বটতলী এলাকায় জ্বর, সর্দি ও কাশি নিয়ে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টায় অংসুইউ মারমা (৫৫) নামক এক ব্যক্তি মারা গেছেন। অংসুইউ মারমা চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) সিনিয়র টেকনিশিয়ান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কাপ্তাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সের করোনার ফোকাল পার্সন ডা. ওমর ফারুক রনি বলেন, নিহত অংসুইউ মারমার পারিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কিছুদিন ধরে জ্বর, সর্দি, কাশিতে ভুগছিলেন তিনি। তিনি করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান বলে দাবি করেছেন নিহতের পরিবার। নিহতের স্বজন ও সংস্পর্শে আসা সকলের নমুনা সংগ্রহ করার কথা জানান তিনি।