করোনা উপসর্গ নিয়ে প্রাণ গেল আরও ১১ জনের

প্রকাশ | ০৫ জুলাই ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
করোনা উপসর্গ নিয়ে দেশের ৫ জেলায় ১১ জনের মৃতু্য হয়েছে। শুক্র ও শনিবার রাজশাহীতে ২ জন, ফরিদপুরে ১ জন, মতলবে (চাঁদপুর) ১ জন, কুমিলস্নায় ৬ জন ও চট্টগ্রামে ১ জনসহ মোট ১১ জন মারা গেছেন। আমাদের আঞ্চলিক অফিস ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর: রাজশাহী :রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুইজনের মৃতু্য হয়েছে। শুক্রবার রাতে তারা মারা যান। জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে তারা হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছিলেন। মৃতরা হলেন, রাজশাহী নগরীর রাজপাড়া থানার সিপাইপাড়া এলাকার মেহের উদ্দিনের ছেলে গিয়াস উদ্দীন (৪৫) ও বোয়ালিয়া এলাকার মামুন-অর-রশীদের ছেলে আবদুল ওহেদ আলী ৫৭)। রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. সাইফুল ফেরদৌস জানান, দুজনেরই জ্বর ও শ্বাসকষ্টসহ করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। হাসপাতালের ২৯নং ওয়ার্ডে রেখে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। শুক্রবার রাত সোয়া ১১টায় গিয়াস উদ্দীন এবং ওহেদ রাত ৯টায় মারা যান। মৃতু্যর পর তাদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে লাশ দাফনের জন্য কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর আগে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় পাঁচজনের মৃতু্য হয়। যাদের মধ্যে দুইজন করোনা আক্রান্ত ও তিনজন করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান। ফরিদপুর :ফরিদপুরে কোভিড-১৯ (করোনাভাইরাস) উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন এক নারী। শনিবার সকাল ৮টার দিকে ফরিদপুরে করোনার জন্য নির্ধারিত হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ওই নারী গত শুক্রবার সকালে জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্টসহ করোনাভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে এ হাসপাতালে ভর্তি হন। তার বয়স হয়েছিল ৩৫ বছর। তিনি ফরিদপুর শহরের বাসিন্দা। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সিদ্দিকুর রহমান বলেন, মৃতু্যর পর ওই নারীর শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা করার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে ওই নারী কোভিডে আক্রান্ত ছিলেন কি না। মতলব দক্ষিণ (চাঁদপুর) :চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে এক দোকানির (৫৫) মৃতু্য হয়েছে। শনিবার সকাল সাড়ে আটটায় চাঁদপুর জেনারেল হাসপাতালে মারা যান তিনি। মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা নুসরাত জাহান কোভিডের উপসর্গ নিয়ে শনিবার ওই দোকানির মৃতু্যর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। নুসরাত জাহান বলেন, ওই ব্যক্তি উপজেলার ফরাজীকান্দি ইউনিয়নের বাসিন্দা। সেখানকার একটি বাজারের মুদি দোকানি ছিলেন তিনি। পাঁচ থেকে ছয় দিন ধরে নিজ বাড়িতে তিনি জ্বর, সর্দি, কাশি, গলাব্যথা ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। তীব্র শ্বাসকষ্ট নিয়ে তিনি গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটায় চাঁদপুর ৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। গতকাল সকাল সাড়ে আটটায় সেখানে মারা যান তিনি। পরে দাফনের জন্য তার লাশ বাড়িতে নিয়ে আসেন পরিবারের লোকেরা। কুমিলস্না :করোনাভাইরাসে সংক্রমিত রোগীদের চিকিৎসার জন্য স্থাপিত কুমিলস্না কোভিড-১৯ হাসপাতালে শনিবার ভোর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করোনা উপসর্গ নিয়ে ছয়জন মারা গেছেন। এ নিয়ে গত ৩১ দিনে এই হাসপাতালে ১৭৩ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে করোনায় ২৯ জন এবং উপসর্গ নিয়ে ১৪৪ জনের মৃতু্য হয়। হাসপাতালের পরিচালক চিকিৎসক মো. মুজিবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, কোভিডের উপসর্গ নিয়ে শনিবার ভোররাত চারটায় মারা যান কুমিলস্নার আদর্শ সদর উপজেলার ৬০ বছরের এক পুরুষ, শুক্রবার দিবাগত রাত ১টা ২৫ মিনিটে মারা যান চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার ৫০ বছরের এক নারী, রাত তিনটায় মারা যান গোপালগঞ্জ জেলার ৬২ বছরের এক নারী, রাত সাড়ে নয়টায় মারা যান কুমিলস্নার মনোহরগঞ্জ উপজেলার ৫৩ বছরের এক পুরুষ, রাত ২টা ৫০ মিনিটে মারা যান চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার ৭২ বছরের এক ব্যক্তি এবং রাত সাড়ে ১২টায় মারা যান কুমিলস্নার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ৭৫ বছরের এক বৃদ্ধ। চট্টগ্রাম : করোনার উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন সিনিয়র আইনজীবী আবুল কালাম আজাদ (৭৩)। শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রবীণ এই আইনজীবী মারা যান। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে চন্দনাইশে গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এএইচএম জিয়াউদ্দীন বলেন, আবুল কালাম আজাদ করোনা উপসর্গ নিয়ে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানে তিনি মারা গেছেন।