বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

চড়া সবজির দাম, কমেছে মাছ-মুরগির

যাযাদি রিপোর্ট
  ১১ জুলাই ২০২০, ০০:০০
বাজারদর

সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম না বাড়লেও আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে অধিকাংশ সবজি। বেশিরভাগ সবজির দাম আগের মতো থাকলেও দাম বাড়ার তালিকায় যুক্ত হয়েছে কাঁচামরিচ, মুলা, লেবু, লাউ ও জালি কুমড়া। অপরিবর্তিত আছে শাকের বাজার। সব ধরনের শাক আগের দামেই বিক্রি করতে দেখা গেছে। এদিকে সপ্তাহের ব্যবধানে আকার ভেদে কেজিতে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত কম দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ ও মুরগি।

তবে স্বস্তির খবর দিচ্ছে পেঁয়াজ, পেঁপে ও কাঁকরোল। এসব পণ্যে সপ্তাহের ব্যবধানে যথাক্রমে কেজিপ্রতি পাঁচ থেকে ১০ টাকা কমেছে। আর আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে আদা, রসুন, চাল, ডাল ও ভোজ্যতেল এবং গরুর মাংসের দাম।

শুক্রবার রাজধানীর মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি, ফকিরাপুল, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা, মগবাজার, মালিবাগ, খিলগাঁও বাজার ঘুরে এসব চিত্র উঠে এসেছে।

এসব বাজারে বর্তমানে প্রতিকেজি পটল বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঝিঙা-চিচিঙ্গা-ধুন্দল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করলা ও উস্তা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কচুর ছড়া ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, কচুর লতি (ছোট) ৪০ থেকে ৫০ টাকা, লতি (বড়) ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৮০ টাকা ও মিষ্টি কুমড়া প্রতিকেজি ৩০ টাকা। প্রতিকেজি ডায়মন্ড আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা, ছোট আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা কেজি দরে। কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতিকেজি কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, প্রতিকেজি টমেটো (ছোট) বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা, টমেটো (ফ্রেশ) ১০০ থেকে ১২০ টাকা।

দাম কমেছে পেঁপে ও কাঁকরোলের। বাজারে প্রতিকেজি পেঁপে ও কাঁকরোল ১০ টাকা কমে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ৪০ থেকে ৫০ টাকা ও ৬০ থেকে ৭০ টাকা এবং ছোট কাঁকরোল ৪০ টাকা।

দাম বেড়েছে লেবু, নতুন মুলা, লাউ ও জালি কুমড়ার। হালিতে তিন থেকে পাঁচ টাকা বেড়ে প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ১২ থেকে ১৫ টাকা, কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি মুলা বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিদরে। প্রতি পিসে ১০ টাকা বেড়ে লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা ও জালি কুমড়া প্রতি পিস ৫০ টাকায়।

এদিকে, দাম অপরিবর্তিত আছে কলা, বড় কচু, পুদিনা পাতা, ধনিয়া পাতা ও কুমড়ার।

এসব বাজারে প্রতি আঁটি (মোড়া) কচুর শাক বিক্রি হচ্ছে আকারভেদে ১০ থেকে ১৫ টাকা, লাল শাক ১৫ টাকা, মুলা ১৫ থেকে ২০ টাকা, পালং শাক ২০ টাকা, লাউ ও কুমড়া শাক ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পুঁইশাক ২০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। এসব বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা, মহিষের মাংস ৬০০ টাকা, খাসির মাংস ৮০০ টাকা, বকরি ৭৫০ টাকা।

এসব বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে (মানভেদে) ৩০ থেকে ৪৫ টাকা, রসুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা। এছাড়া প্রতিকেজি আদা বিক্রি হচ্ছে (মানভেদে) ১২০ থেকে ১৩০ টাকা। খোলা সয়াবিন (লাল) বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৯৫ থেকে ১০৫ টাকা লিটার, খোলা (সাদা) সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা লিটার। খোলা সরিষার তেল বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা লিটার।

বর্তমানে প্রতিকেজি মিনিকেট (নতুন) চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা কেজি, মিনিকেট পুরান ৬০ টাকা, বাসমতি ৬০ থেকে ৬২ টাকা, গুটিচাল ৪২ থেকে ৪৪ টাকা, পায়জাম চাল ৪৬ টাকা, স্বর্ণ ৪২ থেকে ৪৪ টাকা, আঠাশ ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা কেজিদরে, আতপ চাল ৬৫ থেকে ৬৬ টাকা, সরকারি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৪২ টাকা, এক সিদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, পাইজাম ৪০ টাকা, প্রতিকেজি পোলাও চাল বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০৫ টাকা।

প্রতিকেজি ডাবলি ডাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা, অ্যাংকার ৫০ টাকা, প্রতিকেজি দেশি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, মসুর (মোটা) ৮০ টাকা কেজিদরে।

সবজির বাড়তি দাম নিয়ে ভিন্নমত দেখা গেছে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে। বিক্রেতারা বলছেন সবজির সিজন না হওয়ায় প্রতি বছর বর্তমানের এ সময়ে দাম বাড়তি থাকে। আর ক্রেতারা বলছেন, সবজির সিজন না হলেও কোনো সবজির ঘাটতি নেই, এ অবস্থায় দাম বাড়ার প্রশ্ন উঠে না।

এ বিষয়ে হাসি নামে খিলগাঁও বাজারের এক বিক্রেতা জানান, এখন সবজির সিজন না হওয়ায় সব কিছুর দাম বাড়তি। পাইকারি বাজারে বাড়তি দাম হলে আমাদের এখানে দাম বেশি হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে বাজারে সবজির সরবরাহ বেশি হলে দাম কমে আসবে বলে জানান তিনি।

তবে এ বিক্রেতার সঙ্গে একমত নন বাজারের ক্রেতা আয়েশা। তিনি বলেন, আপনারা দেখেন বাজারে কোনো সবজির ঘাটতি আছে কিনা। বাজারে সবজির ঘাটতি না হলেও দাম কেন বাড়বে, প্রশ্ন করেন তিনি। ব্যবসায়ীরা বেশি লাভের আশায় দাম বাড়াচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

দাম কমেছে মাছ-মুরগির

অবশেষে সপ্তাহের ব্যবধানে আকার ভেদে কেজিতে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত কম দামে বিক্রি হচ্ছে হাঁস ও মুরগি। তবে হাঁস-মুরগির দাম কমলেও আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে ডিম।

তবে দাম কমেছে সব ধরনের মাছের। মাছ ভেদে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে মাছের দাম। ইলিশের কমেছে সবচেয়ে বেশি, কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত কমে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ। শুক্রবার কারওয়ান বাজার (খুচরা বাজার), মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি, ফকিরাপুল, শান্তিনগর, সেগুন বাগিচা, মগবাজার, মালিবাগ, খিলগাঁও বাজারসহ রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন চিত্রই দেখা যায়।

সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমে এসব বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়, কেজিতে ৩০ টাকা কমে প্রতি কেজি লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২২৫ টাকায় আর সাদা লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়।

কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা কমে প্রতি কেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৭০ টাকায়, ছোট সোনালি প্রতি হালি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়, প্রতি কেজি দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ টাকায়।

প্রতিটি ডিম পাড়া হাঁস (ছোট) ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায় আর বড় হাঁস বিক্রি হচ্ছে ৩৮০ টাকায়।

তবে ডিমের দাম আছে আগের সপ্তাহের মতোই। এসব বাজারে প্রতি ডজন লাল ডিম (আকার ভেদে) ১০৫ থেকে ১১০ টাকায়, দেশি মুরগি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায়, সোনালি মুরগির ডিম ১৪০, হাঁসের ডিম ১২৫ থেকে ১৩০ টাকায়, কোয়েলের ডিম প্রতি ১০০ পিস ২০০ থেকে ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে মাছের বাজারের চিত্রও স্বস্তিদায়ক। এসব বাজারে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমে প্রতি কেজি কাঁচকি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩২০ টাকায়, প্রতি কেজি মলা বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৮০ টাকায়, ছোট পুঁটি (তাজা) ৫০০ টাকা, আর সাধারণ ছোট পুঁটির দাম ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, টেংরা (তাজা) প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায়, দেশি টেংরা ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকায়, শিং (আকার ভেদে) ২৮০ থেকে ৫০০ টাকায়, পাবদা ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায়, চিংড়ি (গলদা) ৪০০ থেকে ৬০০ টাকায়, বাগদা ৫০০ থেকে ৯৫০ টাকায়, হরিণা চিংড়ি ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়, দেশি চিংড়ি (ছোট) ৩২০ থেকে ৪৮০ টাকায়, রুই (আকার ভেদে) ২০০ থেকে ৩০০ টাকায়, মৃগেল ১৮০ থেকে ৩০০ টাকায়, চাষের পাঙ্গাস ১১০ থেকে ১৮০ টাকায়, তেলাপিয়া ১০০ থেকে ১৬০ টাকায়, থাই কৈ ১৭০ থেকে ১৯০ টাকায়, কাতল ১৮০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তবে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইলিশের বাজার অপরিবর্তিত থাকলেও এ সপ্তাহে হঠাৎ দাম কমেছে কেজিতে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। বর্তমানে এসব বাজারে প্রতি এক কেজি ওজনের একেকটি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯৫০ থেকে ১০০০ টাকায়, ৭৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৬৫০ থেকে ৭৫০ টাকায়, ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, ছোট ইলিশ আকার ভেদে ৩২০ থেকে ৪৯০ টাকা কেজি দরে।

হাসিবুল নামে মালিবাগ বাজারের এক মাছ বিক্রেতা জানান, এখন বাজারে যে পরিমাণ মাছের সরবরাহ আছে, সে তুলনায় ক্রেতা কিছুটা কম আছে। চাহিদা কমায় পাইকারি বাজারে মাছের দাম কমেছে, যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। তবে মাছের ঘাটতি দেখা দিলে দাম আবার বেড়ে যাবে।

মুরগির দাম নিয়ে খিলগাঁও বাজারের মুরগি বিক্রেতা বোরহান বলেন, এখন পাইকারি বাজারে মুরগির সংকট না থাকায় দাম কমেছে। সেখানে (পাইকারি) দাম কমায় খুচরা বাজারেও দাম কমেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<105522 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1