এরশাদের প্রথম মৃতু্যবার্ষিকী আজ

প্রকাশ | ১৪ জুলাই ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ
জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের প্রথম মৃতু্যবার্ষিকী আজ। গত বছরের এ দিনে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃতু্যবরণ করেন তিনি। করোনা পরিস্থিতির কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দিনটি পালনে জাতীয় পার্টি, এরশাদ ট্রাস্ট ও ব্যক্তিগতভাবে বেগম রওশন এরশাদসহ দলীয় নেতাকর্মীরা নানা কর্মসূচি পালন করছে। সকালে দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে রংপুরে এরশাদের কবর জিয়ারত করবেন জি এম কাদের। দুপুরে রংপুর থেকে ফিরে কেন্দ্রীয় কার্যালয় কাকরাইল ও বনানীতে পৃথক অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। বেলা ১১টায় গুলশানের বাসায় রওশন এরশাদ মিলাদ মাহফিল ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার আয়োজন করেছেন। এদিকে এরশাদ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে বেলা ১২টায় কাকরাইলে পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এরশাদের প্রতীকী বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। বিকালে প্রেসিডেন্ট পার্কে স্মরণসভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। ট্রাস্টের আয়োজনে তিন দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা শহরের মসজিদে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে রোববার কোরআনখানি, মিলাদ মাহফিল ও এতিমদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ করা হয়। এরশাদ ১৯৩০ সালের ১ ফেব্রম্নয়ারি অবিভক্ত ভারতের কোচবিহার জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। পরে তার পরিবার রংপুরে চলে আসেন। রংপুরেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করে ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক শেষ করেন। ১৯৫২ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এরশাদ। ১৯৬৯ সালে লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে পদোন্নতি পেয়ে ১৯৭১-৭২ সালে সপ্তম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধের পর পাকিস্তান থেকে প্রত্যাবর্তন করেন। ১৯৭৩ সালে এরশাদকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অ্যাডজুট্যান্ট জেনারেল নিয়োগ করা হয়। ১৯৭৫ সালের ফেব্রম্নয়ারিতে তিনি ব্রিগেডিয়ার পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ওই বছরই আগস্টে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি দিয়ে তাকে সেনাবাহিনীর উপপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ১৯৭৮ সালের ডিসেম্বরে সেনাবাহিনীপ্রধান হিসেবে নিয়োগ পান এরশাদ। ১৯৭৯ সালে তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদে পদোন্নতি লাভ করেন। সেনাপ্রধান থাকা অবস্থায় ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর গণঅভু্যত্থানের মুখে পদত্যাগ করেন। ১৯৯১ সালে গ্রেপ্তার হন এরশাদ। ১৯৯১ সালে জেলে অন্তরীণ থাকা অবস্থায় অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে রংপুরের পাঁচটি আসন থেকে বিজয়ী হন এরশাদ। ১৯৯৬ সালের সাধারণ নির্বাচনেও পাঁচটি আসন থেকে জয়লাভ করেন তিনি। ছয় বছর জেলে থাকার পর ১৯৯৭ সালের ৯ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জামিনে মুক্ত হন। ২০০১ সালের অক্টোবরে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এরশাদের জাতীয় পার্টি ১৪টি আসনে জয়ী হয়। এরপর ২০০৬ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে মহাজোটে গঠন করেন। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৭টি আসনে বিজয়ী হয় এরশাদের দল। এরপর দশম ও সবশেষ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সাংসদ নির্বাচিত হন। মৃতু্যর আগে চলতি জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা ছিলেন এরশাদ। এর আগে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের দায়িত্ব পালন করেন তিনি।