আজকের যায়যায়দিন

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থা যে একেবারেই ভঙ্গুর তা শফিউল বারী বাবুর মৃতু্যতে আরেকবার উদঘাটিত হয়েছে। দেশের মানুষ যে কেন বিদেশে চিকিৎসার জন্য যায় এবং এখানে যে ডায়াগনোসিস করা সম্ভব হয় না তাও প্রমাণ হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নিউ ইস্কাটনে শাইনপুকুর অ্যাপার্টমেন্টে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সদ্যপ্রয়াত সভাপতি শফিউল বারীর বাবুর বাসায় পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা জানানোর পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন ফখরুল। বিএনপি মহাসচিব বাবুর স্ত্রী বিথীকা বিনতে হোসাইনের সঙ্গে কথা বলে সমবেদনা জানান। বাবুর ছোট দুই ছেলেমেয়ে ফাতেমা বারী তুহিন ও আয়হান বারী সাঈদকে কাছে নিয়ে ফখরুল আদর করেন।

ফখরুল বলেন, বাবুর মতো একজন জনপ্রিয়, সচেতন রাজনৈতিক নেতা এভাবে চলে যাবে এটা আমরা কল্পনাই করতে পারিনি। তার অল্প সময়ের জীবনের ক্যারিয়ার বর্ণাঢ্য। তাকে শুধু বিএনপির জন্য নয়, তাকে দেশের মানুষের জন্য প্রয়োজন ছিল। তিনি এদেশের রাজনীতির ক্ষেত্রে একটা ব্যতিক্রম। কিছুক্ষণ আগে তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলছিলাম- দুইটা বাচ্চা রেখে গেছে। মাথা গুঁজার ঠাঁইটুকু নেই, ভাড়া বাসায় থাকেন। এখন তাকে অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। সবার প্রতি একটাই অনুরোধ থাকবে যে, তার পরিবার, স্ত্রী-সন্তানদের নিজেদের মানুষ মনে করে যেন এগিয়ে আসে এবং সহযোগিতার হাত বাড়ায়।

তিনি বলেন, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও বলেছেন, এই লড়াই শুধু তার স্ত্রী একা লড়বে না, তার সঙ্গে সবাই লড়বে। আলস্নাহতায়ালা বাবুকে বেহেস্ত নসিব করুক। তার স্ত্রী ও সন্তানদেরকে এই শোক সহ্য করবার ক্ষমতা দিক।

এ সময় বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান রতন, প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, মোস্তাফিজুর রহমান, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, গোলাম সারোয়ার, ইয়াসীন আলী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এদিকে সকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে বাবুর স্মরণে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলের পরিচালনায় দোয়া মাহফিলে বিএনপির হাবিবুর রহমান হাবিব, রুহুল কবির রিজভী, হাবিব উন নবী খান জুয়েল, মীর সরফত আলী সপু, এবিএম মোশাররফ হোসেন, শহিদুল ইসলাম বাবুল, আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, আকরামুল হাসান, যুবদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ অংশ নেন।

১৩ বছরে মৃতু্য ৩৪০৭ / নতুন আতঙ্কের নাম বজ্রপাত

সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বাবুর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে রিজভী বলেন, এখন চারিদিকে যে দুর্দিন চলছে, এই দুর্দিনে শফিউল বারী বাবুও সামনের কাতারে থাকত। দুর্দিনের একজন বলিষ্ঠ সিপাহশালাকে আন্দোলনের কাফেলা থেকে হারালাম। এখনো গণতন্ত্র ফিরে আসেনি, এখনো কর্তৃত্ববাদী শাসন, এখনো গুমের আতঙ্ক, মিথ্যা মামলার আতঙ্ক, ক্রসফায়ারের আতঙ্ক। এই আতঙ্কের মধ্যে যেসব নির্ভীক তরুণ মিছিলের সামনে থাকত তার মধ্যে বাবু (শফিউল বারী বাবু) একজন। পরে বাবুর আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২৮ জুলাই শফিউল বারী বাবু ফুসফুস জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে এভার গ্রিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৫১ বছর।