ঈদ আনন্দ নেই ৩০ হাজার পৌর কর্মচারীর ঘরে

প্রকাশ | ৩১ জুলাই ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
দেশের পৌরসভাগুলোতে করোনা সংক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে পালস্না দিয়ে বাড়ছে বেতনভাতার মহা সংকট। নিয়মিত বেতন-ভাতা না পেয়ে মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পৌরসভায় কর্মরত প্রায় ৩০ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। এর মধ্যে ঈদুল আজহার আগে বেতন-বোনাস না হওয়ায় তাদের পরিবারে ঈদ আনন্দ অনেকটাই ম্স্নস্নান হয়ে গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দেশের ৩২৮টি পৌরসভার ৩৫ হাজার কর্মচারীর মধ্যে নিয়মিত বেতন পান না অন্তত ৩০ হাজার কর্মচারী। ঈদের বোনাস তো দূরের কথা, বেতনও পাচ্ছেন না তাদের কেউ কেউ। পরিবার-পরিজনসহ ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা। পৌর-কর্মচারীদের দীর্ঘ দিনের সংকট নিরসনে কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি হয়েছে। দেশের পৌর অঞ্চলে নাগরিক সেবার মান ঠিক রাখতে বেতন-ভাতার সংকটের স্থায়ী সমাধানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন কর্মচারীরা। পৌর-কর্মচারীরা জানান, করোনাকালীন নিজেদের জীবন বাজি রেখে কাজ করেও সরকারের সহানুভূতি পাননি। সরকার নির্দেশিত সেবা কার্যক্রম পরিচালনা করতে গিয়ে মেয়র, কাউন্সিলর ও কর্মচারীদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১৪৫ কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হয়ে নিজস্ব অর্থায়নে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ৬৮ জন সুস্থ হয়েছেন। মৃতু্যবরণ করেছেন ৩ কর্মচারী। প্রণোদনা তো দূরে থাক, চিকিৎসার টাকাও পাননি তারা। এসব সমস্যা নিয়ে বারবার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলকে অবহিত করলেও স্থায়ী কোনো সমাধান পাচ্ছেন না। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, পৌর-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার সংকট সমাধানে ও করোনায় আক্রান্তদের সরকার নির্দেশিত আর্থিক প্রণোদনা, ঝুঁকিভাতা প্রদানের বিষয়ে বাংলাদেশ পৌরসভা সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ও সচিব বরাবর আবেদন করা হয়েছে। এরপর আশ্বাস পেলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি বলে অভিযোগ পৌর-কর্মচারীদের। এ প্রসঙ্গে আলাপকালে পৌরসভা সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় নেতা ম ই তুষার যায়যায়দিনকে বলেন, দেশের প্রায় ৭৫ ভাগ পৌরসভায় ২ থেকে ৬৫ মাস পর্যন্ত বেতন বকেয়া পড়েছে। অবসরে যারা গেছেন তাদের অবসরভাতা বকেয়া শতভাগ। করোনা সংকটের কারণে এখন পর্যন্ত ৮০ ভাগ পৌরসভায় বেতন-ভাতা ও বোনাস হয়নি। ফলে এবারও ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে পৌর-কর্মচারীরা। গত ঈদে সরকার বেতন-ভাতা খাতে ৪৫ কোটি টাকা (এক মাসের বেতন-ভাতা) বরাদ্দ দিলেও এ ঈদে কিছুই করা হয়নি উলেস্নখ করে তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন বেতন-ভাতা না পেয়ে স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন অনেকেই। এর মধ্যে কিশোরগঞ্জ কটিয়াদী পৌরসভার সচিব মো. আলমগীর এ কারণে স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়েছেন বলে জানান তিনি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার ও পলস্নী উন্নয়ন সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম যায়যায়দিনকে বলেন, গত ঈদে করোনার কারণে মন্ত্রণালয় থেকে একটি ফান্ড দেওয়া হয়েছিল। এবার এ ধরনের কোনো পরিকল্পনা নেই। সব সময় সরকারি অনুদানের আশা না করে পৌরসভাগুলোকে সাবলম্বী হওয়ার জন্য পৌর মেয়রদের পরমর্শ দেন তিনি।