রাজধানীর কোরবানির বর্জ্য অপসারণ ২৪ ঘণ্টায়ই

প্রকাশ | ০৫ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বর্জ্য অপসারণ করছেন পরিচ্ছন্নকর্মী -ফাইল ছবি
ঘোষণা অনুযায়ী কোরবানির ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজধানীর কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করেছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। এজন্য ঢাকার দুই মেয়র, কাউন্সিলরবৃন্দ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঈদের ছুটির মধ্যে নিরলসভাবে কাজ করেছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, ঈদের দিন এবং পরের দুদিন শহরের প্রায় প্রতিটি সড়কেই কোরবানি করার নির্দিষ্ট স্থানের পাশেই রাখা হয় ময়লা-আবর্জনা জমা করার বড় বড় কন্টেইনার। পশুর চামড়া বেচাকেনার পর, ওই স্থান জীবাণুমুক্ত করতেও দেখা গেছে। তবে এমন কার্যক্রমের বিপরীত চিত্রও দেখা গেছে ঘনবসতিপূর্ণ কিছু এলাকায়। নির্ধারিত সময়ের পর কোরবানি করা কিছু পশুর বর্জ্য নগরীর অলিগলিতে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় প্রতি বছরই কোরবানির সময় তিনগুণ বেশি বর্জ্য তৈরি হয় রাজধানী শহরে। তবে এবার করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে পশু কোরবানি কম হয়েছে। সব মিলিয়ে দুই সিটি করপোরেশন ২৪ ঘণ্টায় বর্জ্য সরিয়ে নেওয়ার যে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেছিল, সে ক্ষেত্রে অনেকটাই সফল হয়েছে। এবারের ঈদে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছিল দুই সিটি করপোরেশনের সাড়ে ১৭ হাজার কর্মী। তাদের সঙ্গে বর্জ্য অপসারণে সহযোগিতা করেন অনেক এলাকার বাসিন্দারা। সবার সম্মিলিত প্রয়াসে অন্য বছরের তুলনায় খুব দ্রম্নত কোরবানি করা পশুর সব ময়লা-আবর্জনা সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়েছে বলে জানান দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ২৫৬টি পশু জবাইর স্থান নির্ধারণ করেছে। নির্ধারিত স্থানে গত বছরের তুলনায় পশু জবাইয়ের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। ডিএনসিসির বিভিন্ন সুবিধাদি বিশেষ করে কোরবানির মাংস বাসায় পৌঁছে দেওয়ার কারণে আগের তুলনায় অনেকে উৎসাহিত হয়ে নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানি দিয়েছেন। তবে নির্ধারিত স্থানে কোরবানি করার ব্যাপারে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) কাউন্সিলরদের ঘোর বিরোধিতা ছিল। এ কারণে এবার অল্পসংখ্যক নির্ধারিত স্থান করেছিল ডিএসসিসি। পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন জানায়, কোরবানি উপলক্ষে ডিএনসিসি এবার প্রায় ৯ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করেছে। আর ডিএসসিসির পক্ষ থেকে ১৪ হাজার ৯২১ মেট্রিক টন বর্জ্য অপসারণ করেছে। ডিএসসিসি প্রথম দিন ২৪ ঘণ্টায়, দ্বিতীয় দিন ১২ ঘণ্টায় এবং তৃতীয় দিন ৮ ঘণ্টায় কোরবানি পশুর বর্জ্য অপসারণ করছে। এ প্রসঙ্গে সোমবার রাতে ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর মো. বদরুল আমিন বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস নগরবাসীকে যে প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিলেন (প্রথম দিনে ২৪ ঘণ্টায়, দ্বিতীয় দিনের ১২ ঘণ্টায় ও তৃতীয় দিনের ৮ ঘণ্টায় কোরবানি পশুর বর্জ্য অপসারণ করা হবে।) তার আগেই কোরবানি পশুর বর্জ্য অপসারণ করা হয়েছে। এই সাফল্যের জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মী, কর্মকর্তা ও নগরবাসীকে অভিনন্দন জানান তিনি। ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, এবার কোরবানি হাট ও বর্জ্য নিয়ে শহরের পরিবেশের সঙ্গে করোনা এবং ডেঙ্গুর চ্যালেঞ্জ ছিল। আমরা সেসব দিক বিবেচনা করে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। নগরবাসী আমাদের কাজে সহযোগিতা করেছেন। এ কারণে আমরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আবর্জনা অপসারণ করতে সক্ষম হয়েছি। একই বিষয়ে ডিএসসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমডোর মো. বদরুল আমিন বলেন, মেয়র মহোদয়ের নির্দেশনার আলোকে আমরা সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে নিয়ে শহরের বর্জ্য পরিষ্কারের প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়েছি। যার ফলাফল নগরবাসীর কাছে পরিষ্কার। করোনা ভাইরাস এবং ডেঙ্গুর উপদ্রব রোধ মাথায় রেখে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে।