কলাগাছ ও আনারসের পাতা থেকে তৈরি হচ্ছে তৈজসপত্র

প্রকাশ | ০৭ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
টাঙ্গাইলের মধুপুর গড়াঞ্চালের কলা গাছের খোসা ও আনারসের পাতা থেকে তৈরি হচ্ছে উৎকৃষ্টমানের তৈজসপত্র। এসব তৈজসপত্র দেশের গন্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে বিদেশেও। জানা যায়, গড়াঞ্চালের কলাগাছের খোসা ও আনারসের পাতা সংগ্রহ করে প্রথমে সোনালি আঁশ তৈরি করা হয়। এসব আঁশ বা জুট নীলফামারী ও ঢাকার শিল্পকারখানায় প্রক্রিয়াজাত করে তৈরি করা হচ্ছে উন্নতমানের কার্পেট, পাপোস, দড়ি, ফুলদানিসহ নানারকম শৌখিন ও মূল্যবান তৈজসপত্র। কলা গাছের খোসা ও আনারসের পাতার ফাইভারে তৈরি করা এসব জিনিসপত্র রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও। কলা গাছ ও আনারসের পাতার প্রচুর চাহিদা থাকায় মধুপুর গড় এলাকায় এ শিল্পের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ব্যক্তি উদ্যোগে কাজটি শুরু করেছেন উপজেলার শোলাকুড়ি ইউনিয়নের কাকড়াগুনি গ্রামের আনোয়ার হোসেন (৪৮)। আনোয়ার হোসেন জানান, এক পরিচিত লোকের পরামর্শে তিনি প্রথমে ঢাকায় ২০১৬ সালে শুরু করেন কলা গাছের খোসা ও আনারসের পাতা থেকে গোল্ডেন ফাইভার সোনালি আঁশ উৎপাদনের কাজ। তার মাধ্যমে ঢাকা থেকে ৩টি মেশিন কিনে এলাকায় নিয়ে যান। বাড়ির আঙিনায় মেশিন বসিয়ে কাজ শুরু করেন। পরে আরও দুটি মেশিন যুক্ত করেন। স্থানীয় শ্রমিকরা কলা ও আনারসের বাগান থেকে সংগ্রহ করেন কাঁচামাল। বর্তমানে ৫টি মেশিন ও ৪০ জন দক্ষ শ্রমিক কাজ করছেন তার কারখানায়। আনোয়ার বলেন, পাহাড়ি এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা অনুন্নত ও মধুপুর শহর থেকে দূরত্ব বেশি থাকায় পরিবহণ খরচ বেশি হয়। এজন্য তিনি উৎপাদিত পণ্য কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে মোকামে পাঠান। প্রতি মাসে সব মিলিয়ে তার খরচ হয় আড়াই থেকে তিন লাখ টাকা। খরচ বাদে যে লাভ থাকে তা দিয়েই সংসার চলে। তবে অর্থের অভাবে কারখানার পরিধি বাড়াতে পারছেন না তিনি। সরকারি ও বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বড় আকারের কারখানা করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন আনোয়ার। স্থানীয় শোলাকুড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আকতার হোসেন জানান, ইউনিয়নটি আনারস ও কলার জন্য বিখ্যাত। আনোয়ার যে কাজ শুরু করেছেন এটি একটি ভালো উদ্যোগ। এর ফলে এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ হচ্ছে। মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফা জহুরা জানান, এটি একটি ভালো উদ্যোগ। খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।