অন্য খাতের ৪০০ কোটি টাকায় করোনা টেস্ট কিট কেনার অনুমতি

প্রকাশ | ০৯ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
সময়মতো টাকা না পেলে করোনাভাইরাস শনাক্তে কিটের সংকট হতে পারে বলে আশঙ্কা করে আসছে সিএমএসডি (সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোর ডিপো বা কেন্দ্রীয় ঔষধাগার)। এতে এ রোগ মোকাবিলায় বিপর্যয়কর পরিস্থিতিরও সৃষ্টি হতে পারে বলে ধারণা করছে প্রতিষ্ঠানটি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি কিট কেনাসহ অন্যান্য মেডিকেল সরঞ্জাম সংগ্রহের জন্য ৪০০ কোটি টাকা ছাড় করেছে অর্থ বিভাগ। চলতি অর্থবছরে স্বাস্থ্য বিভাগের অন্যান্য খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে এ পরিমাণ টাকা ছাড়া হয়েছে। অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবালয় অংশে বরাদ্দকৃত চিকিৎসা ও শল্য চিকিৎসা সরঞ্জামাদি সরবরাহ খাতে বরাদ্দকৃত ৫০০ কোটি টাকা থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুকূলে পুনঃউপযোজনে সম্মতি চাইলে গত ৩০ জুলাই তা অনুমোদন দেওয়া হয়। এ টাকা দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় ঔষধাগার টেস্টিং কিট \হকেনাসহ অন্যান্য মেডিকেল সরঞ্জাম ক্রয় করবে। অর্থ বিভাগ বলছে, চলতি (২০২০-২১) অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিবালয় অংশে চিকিৎসা ও শল্য চিকিৎসা সরঞ্জামাদি সরবরাহ খাতে ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এ বরাদ্দ অর্থ থেকে ৪০০ কোটি টাকা স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের আওতাধীন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুকূলে পুনঃউপযোজনের অনুরোধ জানানো হয়। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের পক্ষ থেকে পুনঃউপযোজনের বিষয়ে বলা হয়েছে, সারাদেশে স্থাপিত আরটি পিসিআর ল্যাবের জন্য টেস্টিং কিট, সোয়াব স্টিক ক্রয় প্রভৃতি কার্যক্রম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীন কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের মাধ্যমে কেন্দ্রীয়ভাবে ক্রয় বা সংগ্রহ করা হয়। কেন্দ্রীয়ভাবে ক্রয়কৃত সুরক্ষাসামগ্রী, টেস্টিং কিট ও অন্যান্য সামগ্রী প্রয়োজন অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে বিতরণ করা হয়। কাজেই প্রস্তাবিত অর্থ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের অনুকূলে চিকিৎসা ও শল্য চিকিৎসা সরঞ্জামাদি সরবরাহ খাতে পুনঃউপযোজন করা প্রয়োজন, যাতে সম্মতি দিয়েছে অর্থ বিভাগ। বেশকিছু শর্তজুড়ে দিয়েছে অর্থ বিভাগ। শর্তগুলো হলো- অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে দ্য পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্ট-২০০৬ এবং দ্য পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস-২০০৮ অনুসরণসহ যাবতীয় আর্থিক বিধিবিধান যথাযথভাবে পালন করতে হবে। অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে কোনো অনিয়ম উদঘাটিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবে। এ অর্থ প্রস্তাবিত খাত ব্যতীত অন্য খাতে ব্যয় করা যাবে না। অব্যয়িত অর্থ (যদি থাকে) যথাসময়ে সমর্পণ করতে হবে। পুনঃউপযোজনকৃত অর্থ চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে সংশ্লিষ্ট কোডে সমন্বয় করতে হবে। জারিতব্য সরকারি আদেশে সমন্বয় কোড উলেস্নখ করতে হবে এবং উপযোজনকৃত অর্থ অব্যয়িত অর্থের মধ্যে সীমিত রয়েছে তা নিশ্চিত করে বিল পরিশোধ করতে হবে। এদিকে সময়মতো টাকা না পাওয়ায় গত ৫ এপ্রিল কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের পরিচালক আবু হেনা মোরশেদ জামান অর্থ সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি দেন। চিঠিতে তিনি বলেন, টাকা ছাড় করা না হলে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে। তীব্র জনঅসন্তোষ তৈরি হবে। এতে সরকারের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হবে। সর্বোপরি এক বিপর্যয়কর পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটতে পারে। সিএমএসডির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, করোনা পরীক্ষা ও কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসা নিয়মিত রাখা, অত্যাবশ্যক মেডিকেল সরঞ্জামের সাপস্নাই চেইন অব্যাহত রাখা, সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানসমূহের আস্থা ধরে রাখা, সিএমএসডিসহ সরকারের ভাবমূর্তি সমুজ্জ্বল রাখা তথা অতি জরুরি জনস্বার্থে জরুরিভিত্তিতে ৪৯৮ কোটি ৫৫ লাখ ৯৮ হাজার ২০০ টাকা বরাদ্দ প্রয়োজন। সে চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৮ জুলাই ৪০০ কোটি টাকা ছাড় করে অর্থ বিভাগ। জাগো নিউজ