শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অর্থ আত্মসাৎ মামলায় ৭ দিনের রিমান্ডে সাহেদ

পদ্মা ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে সাহেদের বিরুদ্ধে ৩৫ লাখ টাকা ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে
যাযাদি রিপোর্ট
  ১১ আগস্ট ২০২০, ০০:০০
সাহেদ

পদ্মা ব্যাংকের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে রিজেন্ট গ্রম্নপ ও রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। রিমান্ড শুনানির সময় সাহেদ বিচারকের উদ্দেশে বলেন, স্যার রিমান্ডটা একটু কনসিডার করেন। রিমান্ড শুনানির আগে সাহেদকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রিমান্ড শুনানি শেষে তাকে আবার কারাগারে পাঠানো হয়। এই ঋণ নিতে সাহেদের বিরুদ্ধে ৩৫ লাখ টাকা ঘুষ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

সোমবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শুনানিতে সাহেদের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। শুনানির শুরুতে বিচারক সাহেদকে বলেন, আপনার কি কিছু বলার আছে? সাহেদ তখন বলেন, স্যার বিশ দিন ধরে রিমান্ডে আছি। সামনে আরও ২৭ দিনের রিমান্ড আছে। আমি খুব অসুস্থ। বিষয়টা বিবেচনা করেন।

সাহেদের বলার পর দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল শুনানিতে বলেন, রিজেন্ট হাসপাতালে এমআরআই মেশিন কেনার কথা বলে সাহেদ পদ্মা ব্যাংক (সাবেক দ্য ফারমার্স ব্যাংক) থেকে দুই কোটি টাকা ঋণ নেন। অথচ তিনি মেশিন কেনেননি। এমনকি তিনি মেডিকেল ইকু্যইপমেন্ট কেনার কোনো প্রমাণও দাখিল করেননি। আমরা জানতে পেরেছি, এ ঋণ পেতে তিনি ৩৫ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছেন এবং ঋণের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। এ ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে তিনি কী অনিয়ম করেছেন এবং এর সঙ্গে আর কারা জড়িত- তা জানার জন্য ১০ দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করছি।

এ সময় সাহেদ বলেন, এ ব্যাংকে আমার ৫০ লাখ টাকার এফডিআর ছিল। তার বিপরীতে আমি ১ কোটি ২০ লাখ টাকার ঋণ নিই। এটি চলমান লেনদেন ছিল। এখানে কোনো অনৈতিক কিছু ঘটেনি।

তখন দুদকের আইনজীবী বলেন, পদ্মা ব্যাংকে তার কোনো এফডিআর ছিল না। সেটা অন্য ব্যাংকে ছিল। এ সময় সাহেদ বিরোধিতা করলে আদালতে দুদকের আইনজীবীর সঙ্গে কিছুটা বাগ্‌বিতন্ডা হয়। এরপর বিচারক তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আদালতের রিমান্ডের আদেশের পরও সাহেদ

তার পুনর্বিবেচনার আবেদন জানাতে থাকেন। তবে বিচারক তার আবেদনে সাড়া দেননি।

এর আগে ৬ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে সাহেদকে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ। বিচারক তার উপস্থিতিতে রিমান্ড শুনানির জন্য ১০ আগস্ট দিন ধার্য করেছিলেন।

২৮ জুলাই সাহেদকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। আদালত ৫ আগস্ট তার গ্রেপ্তার দেখানোর বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য করে। কিন্তু সাহেদ অন্য মামলায় রিমান্ডে থাকায় এ দিন গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদনের শুনানি হয়নি।

এর আগে ২৭ জুলাই দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহজাহান মিরাজ বাদী হয়ে সাহেদসহ চারজনের বিরুদ্ধে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা ১-এ মামলাটি করেন। পরের দিন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ মামলার এজাহার গ্রহণ করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ১৬ আগস্ট দিন ধার্য করেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে ২১ জানুয়ারি সময়ে আসামিরা পারস্পরিক যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তরের মাধ্যমে ঋণের নামে পদ্মা ব্যাংক লিমিটেডের গুলশান করপোরেট শাখার এক কোটি টাকা (যা সুদাসলসহ ১৫ জুলাই পর্যন্ত স্থিতি দুই কোটি ৭১ লাখ টাকা) আত্মসাৎ করেন। আসামিদের বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারাসহ ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ ধারায় মামলা হয়।

মামলার আসামিরা হলেন- পদ্মা ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের নির্বাহী/অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী, বকশীগঞ্জ জুট স্পিনার্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাশেদুল হক চিশতি, রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ এবং হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. ইব্রাহিম খলিল।

গত ১৫ জুলাই সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে সাহেদকে গ্রেপ্তার করের্ যাব। পরে তাকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় আনা হয়। ১৬ জুলাই উত্তরা পশ্চিম থানার প্রতারণার মামলায় সাদেহের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। ২৬ জুলাই উত্তরা পশ্চিম থানায় তিন ও উত্তরা পূর্ব থানায় প্রতারণার মামলায় সাত দিন করে ২৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত। একই দিন সাতক্ষীরার অস্ত্র মামলায় তার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<108432 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1