ক্ষুব্ধ গণপরিবহণ যাত্রীরা

আসন ফাঁকা নেই, তবুও বাড়তি ভাড়া আদায়

বাড়তি ভাড়া যাতে দ্রম্নত প্রত্যাহারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয় সেজন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যাত্রীরা

প্রকাশ | ১৩ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
করোনা পরিস্থিতিতে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে বাস চলাচলের বিধান থাকলেও তা মানছেন না পরিবহণশ্রমিকরা। ছবিটি বুধবার রাজধানীর একটি সড়ক থেকে তোলা -বাংলা নিউজ
গণপরিবহণে ফাঁকা নেই কোনো সিট, এমনকি কোনো কোনো বাসে বাদুড়ঝোলা হয়েও নেওয়া হচ্ছে যাত্রী। নেই স্বাস্থ্যবিধির কোনো তোয়াক্কা। তবুও আদায় করা হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। বুধবার রাজধানীর গণপরিবহণ ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়। সব আসনে যাত্রী নিয়ে দ্বিগুণ ভাড়া আদায়কে অনৈতিক বলছেন যাত্রীরা। যাত্রীরা এও বলছেন, প্রয়োজন অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহণ চালানো যদি আরও কিছু দিন প্রয়োজন হয়, তবে তাদের বাড়তি ভাড়া দিতে আপত্তি নেই। তবে করোনাভাইরাসের অজুহাতে অনির্দিষ্টকালের জন্য দ্বিগুণ ভাড়া হোক, সেটা চান না যাত্রীরা। এই বাড়তি ভাড়া যাতে দ্রম্নত প্রত্যাহারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়, সেজন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যাত্রীরা। গত ২৪ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গণপরিবহণসহ দূরপালস্নার বাসও বন্ধ করে দেওয়া হয়। দুই মাস পর ১ জুন থেকে সীমিত পরিসরে শর্ত সাপেক্ষে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে গণপরিবহণ চলাচলের অনুমতি দেয় সরকার। তখন বাস মালিকরা ভাড়া দ্বিগুণ করার প্রস্তাব দিলে সরকার ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর অনুমোদন দেয়। সেই থেকে বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। বাড়তি ভাড়া আদায় করলেও স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করছে গণপরিবহণ সংশ্লিষ্টরা। তারা ভাড়া দ্বিগুণ নেওয়ার পরও আসন ফাঁকা রাখছেন না। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। এদিকে ঈদুল আজহার ছুটির পর থেকে অফিস আদালত আগের মতো সকাল ৯টা থেকে ৫টা, বাসায় কাজের পরিবর্তে সবার জন্য অফিসে উপস্থিত বাধ্যতামূলক করায় সকালে অফিস সময়ে গণপরিবহণে করোনার আগের মতো দৃশ্য। বাসে ওঠা যেন এ এক যুদ্ধ। ধাক্কাধাক্কি ও বাসের জন্য মানুষের অপেক্ষা। একটি বাস এলেই যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ে। বুধবার সকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, মতিঝিল, শাহবাগ, ফার্মগেট, বনানী, উত্তরা, নতুনবাজার, বাড্ডা, রামপুরা, কালশী, মিরপুর ও গাবতলী এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রত্যেক গণপরিবহণে মানুষের ভিড়। আসন পূর্ণ করেই নেওয়া হচ্ছে যাত্রী। ভাড়াও নেওয়া হচ্ছে দ্বিগুণ। ৯ নম্বর মতিঝিল পরিবহণে দেখা যায়, আসন তো ফাঁকা নেই-ই, বরং কিছু যাত্রী দাঁড়িয়েও যাচ্ছেন। সোহেল নামের এক যাত্রী বলেন, ভাড়া নেওয়া হচ্ছে দ্বিগুণ, কিন্তু আসন ফাঁকা রাখা হচ্ছে না। স্বাস্থ্যবিধিরও কোনো বালাই নেই। একই চিত্র দেখা যায়, এয়ারপোর্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ পরিবহণে। সব আসনে যাত্রী পূর্ণ করে চলতে দেখা যায়। আবির নামের এক যাত্রী বলেন, এ সেক্টরে নৈরাজ্য দেখার কেউ নেই। করোনাকালীন সংকটেও এরা নৈরাজ্য করছে। এলাইক পরিবহণের সহকারী রিপন মিয়া বলেন, যাত্রীর চাপ অনেক বেড়ে গেছে। যাত্রীরা জোরে ঠেলা দিয়েই উঠে পড়েন। এতে আমরা কী করব? এদিকে দূরপালস্নার বাসেও বাড়তি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। যাত্রীও পূর্ণ বাসে, কিন্তু ভাড়া কমানো হচ্ছে না। নন এসি বাসে সিলেটে যেখানে ভাড়া ছিল ৪৭০ টাকা, এখন সেখানে নেওয়া হচ্ছে ৭৫০ টাকা। একই অবস্থা অন্য সব রুটে। বাসগুলো ঘুরে দেখা যায়, এখন আর কেউ স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা করছে না। বাংলা নিউজ