সপ্তাহে দুইদিন করোনা বুলেটিন প্রচারের পক্ষে ওবায়দুল কাদের

প্রকাশ | ১৩ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

বিশেষ সংবাদদাতা
ওবায়দুল কাদের
করোনাভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের নিয়মিত বুলেটিন একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হলে জনমানুষের মধ্যে শৈথিল্য দেখা দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সেজন্য তিনি সপ্তাহে অন্তত দু'দিন এই বুলেটিন প্রচার করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান। ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রতিদিনের আপডেট বন্ধ হলে সংক্রমণ বিস্তার রোধে মানুষের যে সচেতনতা তা হ্রাস পেতে পারে। সংক্রমণ, মৃতু্যসহ প্রতিদিনের আপডেট বন্ধ হলে মানুষের মাঝে শৈথিল্য দেখা দিতে পারে। গুজবের ডাল-পালা বিস্তারের আশঙ্কাও থাকে। সে কারণে বাস্তবতার নিরিখে বিষয়টি বিবেচনায় নিতে হবে। সিলেট জোন, বিআরটিএ ও বিআরটিসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ আহ্বান জানান সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী। ওবায়দুল কাদের গতকাল বুধবার তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ মতবিনিময় সভায় যুক্ত হন। এ সময় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের রোগমুক্তি কামনা করেন সেতুমন্ত্রী। গণপরিবহণের সাম্প্রতিক কর্মকান্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, কিছু কিছু গণপরিবহণ করোনাকালের জন্য গৃহীত ব্যবস্থা হিসেবে সমন্বিত ভাড়ার নির্দেশনা মেনে চলছে না। অভিযোগ রয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে গাড়ি চালানোরও। আবার কেউ কেউ অর্ধেক আসন খালি রাখার প্রতিশ্রম্নতি ভঙ্গ করে শতভাগ আসনে যাত্রী পরিবহণ করছেন। আগে এই প্রবণতা না থাকলেও 'ঈদের' সময় থেকে সব আসনে যাত্রী তোলার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। এটা 'অত্যন্ত দুঃখজনক'। মন্ত্রী করোনা রোধে সরকারি নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি পালনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট পরিবহণ কর্তৃপক্ষ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে আহ্বান জানান। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের 'দ্বিতীয় ধাপ শুরু হয়েছে' উলেস্নখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই অবস্থায় আমাদের সচেতনতা আরও বাড়ানো জরুরি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকায় লক্ষণ ছাড়াও সংক্রমণ ঘটছে। সেজন্য আমাদের মাস্ক পরা অতি আবশ্যক এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। অন্যদিকে প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে। যেকোনো অনিয়ম কিংবা হত্যাকান্ডের বিষয়ে সরকার দ্রম্নত ব্যবস্থা নিয়েছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনার এ সময়ে সংক্রমণ রোধের স্বার্থে সরকার জনসমাবেশ বা লোকসমাগম হয় এমন কর্মকান্ড বন্ধ ঘোষণা করেছে। এ সময় মানববন্ধন ও রাজনৈতিক কর্মসূচি করোনার সংক্রমণকে উৎসাহিত করতে পারে। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেকোনো মামলার সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। এ সময় তিনি সবাইকে ধৈর্য ও সহনশীলতা প্রদর্শনের আহ্বান জানান। প্রায় ৬ মাস টানা করোনা আপডেট নিয়ে সংবাদ সম্মেলন বা সংবাদ বুলেটিন প্রচার হয়ে এলেও গতকাল বুধবার থেকে বুলেটিন প্রচার বন্ধ করে প্রেসরিলিজের মাধ্যমে গণমাধ্যমে তথ্য পাঠানো শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে একটি গণমাধ্যমের জিজ্ঞাসার জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী \হজাহিদ মালেক বলেছেন, পরিস্থিতির 'উন্নতি' ঘটায় এখন আর বুলেটিন প্রচার করার প্রয়োজন দেখছেন না তারা। চীনে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর গত ৮ ফেব্রম্নয়ারি থেকে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলন শুরু করে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান-আইইডিসিআর। সংস্থাটির পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা তখন সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপনের পাশাপাশি নানা প্রশ্নের উত্তর দিতেন। তখন মাঝে-মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকও সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত হতেন। সেব্রিনা ফ্লোরার পরিচালনায় ওই সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক তার বাসা থেকে যুক্ত হতেন। ভার্চুয়াল ওই সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে প্রশ্ন করার সুযোগ ছিল গণমাধ্যমকর্মীদের। এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রশ্ন করার সুযোগ বাদ দিয়ে সংবাদ বুলেটিন পদ্ধতি চালু করা হয়। গত ৮ মার্চ দেশে কোভিড-১৯ রোগী শনাক্তের পর ওই মাসেই আইইডিসিআর'র বদলে সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্ত হয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।