ঠিকাদারিতে এমপিদের সম্পৃক্ততা বন্ধে আইন চায় টিআইবি

প্রকাশ | ১৩ আগস্ট ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ঠিকাদারিসহ উন্নয়ন কর্মযজ্ঞে সংসদ সদস্যদের সম্পৃক্ততা বন্ধ করতে আইন প্রণয়ন করা উচিত। কেননা এতে দুর্নীতির বিস্তার হচ্ছে। এছাড়া এমপির মূল দায়িত্বের সঙ্গে বিষয়টি সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। 'আসনভিত্তিক থোক বরাদ্দ : অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ' শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশকালে বুধবার তিনি এসব কথা বলেন। জুমের সাহায্যে ওয়েব সেমিনারের (ওয়েবিনার) মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হয়। ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুর্নীতির বিস্তারের অবারিত সুযোগ হচ্ছে পলিস্ন অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পগুলো। ২০০৫-০৬ সালের দিকে যা শুরু হয়েছে, তা এখনো চলছে। এটাকে অব্যাহত রাখতে হলে গত ১৫ বছরের নেতিবাচক অভিজ্ঞতা এবং আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতার আলোকে প্রাতিষ্ঠানিক নীতি, কাঠামো প্রণয়ন করা উচিত। এমপিদের মূল কাজ হলো আইন প্রণয়ন ও জনগণের কাছে সরকারের কাজের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। কিন্তু তারা উন্নয়ন কাজে সম্পৃক্ত হওয়ায় রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা বাড়ছে, যোগ করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, এমপিদের থোক বরাদ্দের ওপর যে প্রকল্পগুলো আছে সেগুলোতেও স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতার ঘাটতি রয়েছে। কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয় না। জনগণের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ নেই। তাদের প্রত্যাশারও প্রতিফলন নেই। সংসদ সদস্যদের উন্নয়ন প্রকল্পে জড়িত না হওয়াই ভালো। তার তিনটি প্রধান কাজ ছাড়া অন্য কাজে জড়িত না হওয়াই বাঞ্ছনীয়। উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্ব নিলে তা তার মূল দায়িত্বের সঙ্গে \হসাংঘর্ষিক হয়। একসময় ঠিকাদারি অনেক সম্মানজনক পেশা ছিল; কিন্তু পেশাটিকে বর্তমানে এমন পর্যায়ে আনা হয়েছে, যে ঠিকাদার শব্দটিই নেতিবাচক শব্দে পরিণত হয়েছে। রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা প্রকট হওয়ার কারণে ঠিকাদারদের দৌরাত্ম্যও বেড়েছে, উলেস্নখ করেন ড. ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, ঠিকাদার মুনাফা লাভ করবেন, এটাই তো হবে; কিন্তু রাজনীতিকরা ঠিকাদারি করতে পারবেন না। আমাদের এখানে এটাই সমস্যা। ঠিকাদারি, ক্রয়সহ উন্নয়ন কাজে এমপিরা যাতে সম্পৃক্ত হতে না পারেন, এ আইনটা থাকতে হবে। এর আগে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন টিআইবির প্রোগ্রাম ম্যানেজার জুলিয়েট রোজিয়েট। দ্বৈব চয়নের ভিত্তিতে ৫০টি সংসদীয় আসনের ওপর গবেষণাটি চালায় টিআইবি। এক্ষেত্রে ২০১৯ সালের মে থেকে ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত স্থানীয় জনগণ, মন্ত্রণালয়, প্রকৌশলী, ঠিকাদার, সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সবার কাছ থেকে তথ্য নিয়ে গবেষণা প্রতিবেদনটি করে সংস্থাটি, যেটিকে তারা মিশ্র গবেষণা বলছে। প্রতিবেদনে স্থানীয় পর্যায়ে যোগসাজশের মাধ্যমে ঠিকাদারি কাজ পাওয়া, রাজনৈতিক প্রভাব, নির্দিষ্ট ব্যক্তিদেরই কাজ পাওয়া, এমপিদের কমিশন বাণিজ্য, নিম্নমানের কাজসহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয় উঠে আসে। এরই মধ্যে টিআইবি তার প্রতিবেদনটি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনটি সরকারের বিভিন্ন দপ্তরেও পাঠাবেন বলে জানিয়েছেন ড. ইফতেখারুজ্জামান।