ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানার পাঁচ পুলিশের বিরুদ্ধে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (আখাউড়া) আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে আখাউড়া পৌর শহরের মসজিদপাড়ার বাসিন্দা হারুন মিয়া বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
আদালতের বিচারক আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য জেলার পুলিশ সুপার কার্যালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন।
অভিযুক্তরা হলেন- আখাউড়া থানার পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মুতিউর রহমান, এসআই হুমায়ূন, এএসআই খোরশেদ এবং কনস্টেবল প্রশান্ত ও সৈকত।
মামলার বিরণীতে জানা যায়, আখাউড়ার পৌর শহরের মসজিদপাড়ার বাসিন্দা হারুনের প্রতিবেশী হাসিনা বেগম ওরফে চিকুনী বেগম এবং তার মেয়ে তানিয়া ও তানজিনা অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা করে আসছে। হারুন মাদক ব্যবসায় বাধা দিলে চিকুনী ক্ষুদ্ধ হয়ে তার বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেন পুলিশ সদস্যদের। এর ধারাবাহিকতায় গত ২৬ মে গভীর রাতে অভিযুক্ত পাঁচ পুলিশ সদস্য নাটকীয়ভাবে চিকুনী বেগমকে গ্রেপ্তার করেন এবং পরস্পর যোগসাজশে পূর্বপরিকল্পিতভাবে ওই পুলিশ সদস্যরা হারুনের বাড়িতে প্রবেশ করে তলস্নাশির নামে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে
নির্যাতন করেন।
এ সময় ক্রসফায়ার ও হত্যার ভয় দেখিয়ে ঘরে
থাকা নগদ ৪০ হাজার টাকা বলপূর্বক ছিনিয়ে নেয়। পরবর্তীতে ওইদিনই ভোর ৪টার দিকে আবার ওই পুলিশ সদস্যরা এসে হারুন ও তার স্ত্রীকে মিথ্যা মাদক মামলা ও যাবজ্জীবন কারাদন্ডের ভয় দেখিয়ে এক লাখ টাকা দাবি করেন। তা না হলে তাদের মাদক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে চালান দেওয়া হবে বলে হুমকি দেন। ওই সময় তারা প্রাণ রক্ষায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের ৫০ হাজার টাকা দিয়ে দফারফা করেন। চলে যাওয়ার সময় বিষয়টি ঊর্ধ্বতন অফিসারদের জানালে হারুনকে ক্রসফায়ার দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়ে যান পুলিশ সদস্যরা।
এ বিষয়ে মামলার বাদী হারুন মিয়া বলেন, অভিযুক্তরা আমাকে বিভিন্ন সময় ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে ধাপে ধাপে টাকা নিয়েছে। তাদের কারণে আজকে আমি বাড়ি ছাড়া। ন্যায়বিচারের আশায় আদালতে অভিযোগ দিয়েছি।
এ ব্যাপারে আখাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রসুল আহমেদ নিজামী বলেন, এ ঘটনায় আগেও একটি অভিযোগ হয়েছিল, যা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) তদন্ত করছেন। যদি আদালত পরে কোনো নির্দেশ দেয় সে অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।