অবশেষে মাকে ফিরে পেল সেই নবজাতক

প্রকাশ | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

কুমিল্লা প্রতিনিধি
কুমিল্লায় প্রাইভেট হাসপাতালে সন্তান রেখে পালিয়ে যাওয়া মা রোকেয়া বেগমকে ফিরে পেয়েছে সেই নবজাতক। জেলা পুলিশ ও গণমাধ্যমের সহযোগিতায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে তাকে। শিশুটির নাম দেয়া হয়েছে দৃষ্টান্ত। চিকিৎসার দায়িত্বও নিয়েছেন জেলা ও পুলিশ প্রশাসন। বুধবার দুপুরে নগরীর ঝাউতলা এলাকায় কুমিল্লা মা ও শিশু স্পেশালাইজড্ হাসপাতালে পেঁৗছে ওই নবজাতকের কাছে গিয়ে আবেগাপুøত হয়ে মা রোকেয়া বেগম কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। জানা যায়, গত ১৮ আগস্ট চঁাদপুরের হাজীগঞ্জের শাহআলম- রোকেয়া দম্পত্তির ঘরে জন্ম নেয় একটি পুত্র সন্তান। সাড়ে ৬ মাসে ডেলিভারি এবং ৭০০ গ্রাম ওজনের অপরিণত শিশুর জীবন সংকটাপন্ন হওয়ায় ভতির্ করা হয় কুমিল্লা মা ও শিশু স্পেশালাইজড হাসপাতালে। ৭দিন চিকিৎসার পর ২৪ আগস্ট শিশুটিকে নবজাতক নিবিড় পরিচযার্ ইউনিটে (এনআইসিইউ) রেখে হাসপাতাল থেকে উধাও হয়ে যান শিশুটির দরিদ্র বাবা-মা। এ অবস্থায় শিশুটির ব্যয়বহুল চিকিৎসা নিয়ে বিপাকে পড়ে হাসপাতাল কতৃর্পক্ষ। গণমাধ্যমে এমন সংবাদের পর পুলিশের সহযোগিতায় চঁাদপুরের হাজীগঞ্জের বাকিলা থেকে বুধবার দুপুরে শিশুটির মা রোকেয়া বেগমকে নিয়ে আসা হয় শিশুটির কাছে। হাসপাতালে মা রোকেয়া বেগম জানান, তার দুটি সন্তান জন্মের পর মারা যায়। এই শিশুটির চিকিৎসায় অনেক টাকা বিল আসায় তারা হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান। তার স্বামী একজন দিনমজুর। হাসপাতাল থেকে বাড়ি গিয়ে স্বামী শাহ আলমও নিরুদ্দেশ। এমন অবস্থায় পুলিশের সহযোগিতায় তিনি তার সন্তানকে ফিরে পেয়েছেন। শিশুটির জন্য সকলের কাছে দোয়া কামনা করেন রোকেয়া। বুধবার দুপুরে নবজাতকের কাছে মা রোকেয়া বেগমকে নিয়ে যান কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আবুল ফজল মীর, পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম ও সিভিল সাজর্ন ডা. মুজিবুর রহমান ও কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ আবু ছালাম মিয়া। এ সময় পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, গণমাধ্যমের ভ‚মিকা প্রশংসনীয়। তিনি বাচ্চাটির নাম দিয়েছেন ‘দৃষ্টান্ত’। সকলে মিলে তারা শিশুটির চিকিৎসা ব্যয় বহন করবেন এবং এটা নিয়ে তার মাকে আর দুঃশ্চিন্তা করতে হবে না। জেলা প্রশাসক মো. আবুল ফজল মীর বলেন, তারা বিত্তবানদের নিকট আহŸান করবেন যেন শিশুটির চিকিৎসায় তাদের দরিদ্র পিতা-মাতার পাশে এসে দঁাড়ান। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শিশুটিকে তার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেয়ার এ ঘটনা অবশ্যই দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এদিকে শিশুটির চিকিৎসায় বিশেষ ছাড় ঘোষণা করেছে কুমিল্লা মা ও শিশু স্পেশালাইজড হাসপাতাল কতৃর্পক্ষ। হাসপাতালের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. বদিউল আলম জানান, এ পযর্ন্ত শিশুটির চিকিৎসা ব্যয় হয়েছে প্রায় আড়াই লাখ টাকা। সে ক্ষেত্রে অক্সিজেন এবং দেশের বাইরে থেকে আনা কিছু ওষুধের দাম নেয়া হবে শিশুটির চিকিৎসায়, অন্য কোনো বিল নেয়া হবে না।