শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আগস্টে ৪৪৪ দুর্ঘটনায় ৫৫৩ জনের মৃতু্য যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

চলতি বছর আগস্ট মাসে সারাদেশে সড়ক, রেল ও নৌপথে ৪৪৪টি দুর্ঘটনায় ৫৫৩ জনের মৃতু্য এবং ৬৬৯ জন আহত হওয়ার তথ্য এসেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে।

দেশের দৈনিক ও অনলাইন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে বুধবার এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।

সেখানে বলা হয়েছে, আগস্ট মাসে দেশের সড়ক-মহাসড়কে ৩৮৮টি দুর্ঘটনায় ৪৫৯ জন নিহত ও ৬১৮ জন আহত হয়েছেন।

একই সময় রেলপথে ১৫টি দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। নৌপথে ৪১টি দুর্ঘটনায় ৮০ জন নিহত, ৫২ জন আহত এবং ৩১ জন নিখোঁজ হওয়ার খবর এসেছে সংবাদমাধ্যমে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন বলছে, আগস্ট মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতদের মধ্যে ১৯৮ জন চালক, ১২৫ জন পথচারী, ৮০ জন নারী, ৪৪ জন শিশু, ৩৮ জন শিক্ষার্থী, ২২ জন পরিবহণ শ্রমিক, ছয়জন পুলিশ, একজন বিমানবাহিনীর সদস্য, একজন সিআইডির সদস্য এবং একজন সেনাবাহিনীর সদস্য রয়েছেন।

এ ছাড়া ৯ জন শিক্ষক, আটজন রাজনৈতিক কর্মী, তিনজন চিকিৎসক, একজন সাংবাদিক এবং একজন প্রকৌশলীর পরিচয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে।

নিহতদের মধ্যে ১৬৭ জন চালক, ১১০ জন পথচারী, ৬৩ জন নারী, ৩৪ জন শিশু, ৩২ জন শিক্ষার্থী, ১৭ জন পরিবহণ শ্রমিক, ছয়জন রাজনৈতিক কর্মী, ছয়জন শিক্ষক, তিনজন চিকিৎসক, একজন প্রকৌশলী, একজন সাংবাদিক এবং পাঁচজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য রয়েছেন।

আগস্টে সড়ক দুর্ঘটনার ২৮ দশমিক ৯৮ শতাংশই ঘটেছে মোটরসাইকেলে। এ ছাড়া ২১ দশমিক ৬১ শতাংশ ক্ষেত্রে ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ১৬ দশমিক ১২ শতাংশ ক্ষেত্রে বাস, ৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ ক্ষেত্রে অটোরিকশা, ৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ ক্ষেত্রে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৭ দশমিক ৭১ শতাংশ ক্ষেত্রে নছিমন-করিমন, ৭ দশমিক ০৩ শতাংশ ক্ষেত্রে কার-জিপ-মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় পড়েছে।

আগস্ট মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে ৪ আগস্ট। সেদিন ২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২ জনের মৃতু্য হয়েছে, আহত হয়েছেন ৪৬ জন।

সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনার খবর এসেছে ১৯ আগস্ট। সেদিন চারটি সড়ক দুর্ঘটনায় চরজনের মৃতু্য এবং তিনজনের আহত হওয়ার খবর এসেছে সংবাদমাধ্যমে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন বলছে, মোট দুর্ঘটনার ৫২ দশমিক ৮৩ শতাংশই ছিল গাড়িচাপা দেওয়ার ঘটনা। ২৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ ক্ষেত্রে দুই বাহনের মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ ক্ষেত্রে গাড়ি খাদে পড়ে যাওয়া, ৪ দশমিক ৮৯ শতাংশ ক্ষেত্রে অন্যান্যভাবে দুর্ঘটনা ঘটেছে।

এ ছাড়া শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ ক্ষেত্রে ট্রেনের সঙ্গে কোনো বাহনের সংঘর্ষ এবং শূন্য দশমিক ২৬ শতাংশ ক্ষেত্রে চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে।

ওই মাসে মোট দুর্ঘটনার ৪৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে এবং ১৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ ফিডার রোডে ঘটেছে।

৫ দশমিক ১৫ শতাংশ দুর্ঘটনা ঢাকা মহানগরীতে, ২ দশমিক ৬ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে এবং শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে ঘটেছে।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, 'দীর্ঘ লকডাউনে গণপরিবহণ বন্ধ থাকার সুযোগে নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক ও জাতীয় মহাসড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা-ইজিবাইক উঠে আসায় এবং বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। মোটরসাইকেলের সংখ্যা ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি এবং বেপরোয়া চলাচল সড়ক নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে দাঁড়াচ্ছে।'

এ ছাড়া সড়ক নিরাপত্তায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর 'স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতি ক্রমাগতভাবে বাড়ায় এবং জবাবদিহিতার অভাবে' সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বাড়ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

মোজাম্মেল বলেন, উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস পদ্ধতি ঢেলে সাজানো ছাড়া সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<112328 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1