বিক্ষোভের পর বন্ধ হলো হাটহাজারী মাদ্রাসা

প্রকাশ | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
চট্টগ্রামের হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার মহাপরিচালক ও হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানিকে অপসারণসহ ছয় দফা দাবিতে বিক্ষোভ ও উত্তেজনার মধ্যেই কওমি মাদ্রাসাটি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। এ বিষয়ে হাটহাজারীর ওই মাদ্রাসার মহাপরিচালক ও অধ্যক্ষকে বৃহস্পতিবার একটি চিঠি পাঠিয়েছে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ। সেখানে বলা হয়েছে, 'মহামারির মধ্যে কয়েকটি শর্তে কওমি মাদ্রাসাগুলোর কিতাব বিভাগের কার্যক্রম শুরু ও পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আরোপিত শর্তসমূহ যথাযথভাবে প্রতিপালিত না হওয়ায় চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার আল জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদ্রাসাটি পুনরায় আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হল।' করোনাভাইরাস মহামারির কারণে গত ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সেই ছুটি আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে বলে জানানো হয়েছে সরকারের তরফ থেকে। তবে কওমি মাদ্রাসাগুলোর আবেদনে গত আগস্টের শেষে তাদের 'স্বাস্থ্যবিধি মেনে' ডিগ্রি ও মাস্টার্স পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। যদিও অন্য সব প্রতিষ্ঠানের মতো আলিয়া মাদ্রাসাগুলো এখনও বন্ধ রয়েছে। হাটহাজারীর আল-জামিয়াতুল আহলিয়া দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা দেওবন্দের পাঠ্যসূচিতে পরিচালিত বাংলাদেশের অন্যতম পুরনো ও বড় কওমি মাদ্রাসা। সাত হাজারের বেশি শিক্ষার্থী সেখানে অধ্যয়ন করে। এ মাদ্রাসার মহাপরিচালক (মুহতামিম) শাহ আহমদ শফী বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা বোর্ড বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশেরও (বেফাক) সভাপতি। ৯৫ বছরের বেশি বয়সি শফীই ইসলামী শাসনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আন্দোলন চালিয়ে আসা হেফাজতে ইসলামের সর্বোচ্চ নেতা। দীর্ঘদিন ধরে এর মহাপরিচালকের পদে থাকা আহমদ শফীকে দেশের কওমি শিক্ষার্থীরা 'বড় হুজুর' বলে সম্বোধন করেন। তবে শফীর বয়স হওয়ায় এই মাদ্রাসার কর্তৃত্ব নিয়ে সম্প্রতি বিরোধ দেখা দেয়। গত জুন মাসে মাদ্রাসার শুরা কমিটির বৈঠকে জুনাইদ বাবুনগরীকে সহকারী পরিচালকের পদ থেকে সরিয়ে শেখ আহমদকে নিয়োগ দেওয়ার পর আহমদ শফীর সমর্থকদের সঙ্গে বাবুনগরী পক্ষের বিরোধ প্রকাশ্য হয়। তারই জের ধরে বুধবার ওই মাদ্রাসায় শফীর ছেলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয় বলে স্থানীয়দের ভাষ্য। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকরা জানান, বুধবার দুপুরে হঠাৎ করেই কয়েকশ' শিক্ষার্থী মাদ্রাসার ভেতরে বিক্ষোভ শুরু করেন। তারা মাদ্রাসার সহকারী পরিচালক (শিক্ষা) আনাস মাদানির পদত্যাগ দাবি করে স্স্নোগান দিতে থাকে। এসময় তারা ছয় দফা দাবিও তুলে ধরে। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা আনাস মাদানির কক্ষ এবং জুনাইদ বাবুনগরীর পদে নিয়োগ পাওয়া শেখ আহমদের কক্ষও ভাংচুর করে। এক পর্যায়ে তারা মাদ্রাসার সামনে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়কে অবস্থান নিলে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়।