মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
দাফন সম্পন্ন

আল্লামা শফীর জানাজায় লাখো মানুষের ঢল

যাযাদি ডেস্ক
  ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০
হেফাজতে ইসলামের আমির আলস্নামা শাহ আহমদ শফীর মরদেহবাহী গাড়ি শনিবার চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় পৌঁছালে শিক্ষার্থী ও অনুসারীরা তাকে দেখার জন্য ভিড় করেন। পরে এই মাঠেই লাখো মানুষের অংশগ্রহণে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয় -স্টার মেইল

দেশের বরেণ্য ও শীর্ষ আলেম আল্লামা শাহ আহমদ শফীর জানাজার নামাজ জনসমুদ্রে পরিণত হয়। স্মরণকালের সবচেয়ে বড় এই জানাজায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদসহ বিভিন্ন দলের রাজনীতিক, সরকারি কর্মকর্তা, আলেমসহ দেশের নানা প্রান্ত থেকে লাখো ধর্মপ্রাণ মানুষ অংশ নেন। জানাজার পর মাদ্রাসার ভেতরে উত্তর মসজিদসংলগ্ন কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়। শনিবার দুপুর ২টায় হাটহাজারী মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত জানাজায় ইমামতি করেন শাহ আহমদ শফীর বড় ছেলে মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফ। জানাজার আগে দেওয়া বক্তব্যে মাওলানা মোহাম্মদ ইউসুফ বলেন, 'বাবা আমাদের এতিম করে চলে গেছেন। আমার বাবার জন্য সবাই দোয়া করবেন। বাবা দীর্ঘ ৮০ বছর হাটহাজারী মাদ্রাসার খেদমত করেছেন। এই দীর্ঘ সময়ে তিনি কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকলে ক্ষমা করে দেবেন।' শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা ও আমির আলস্নামা শাহ আহমদ শফী। রাত ১১টার দিকে গেন্ডারিয়ার আজগর আলী হাসপাতাল থেকে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী মাদ্রাসা জামিয়া আরাবিয়া ইমদাদুল উলুম ফরিদাবাদে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গোসল এবং কাফন শেষে ভক্ত অনুসারীদের তার মরদেহ দেখার সুযোগ দেওয়া হয়। মধ্যরাতে তার মরদেহ বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসার উদ্দেশে রওনা দেয়। শনিবার সকালে সাড়ে ৯টার দিকের্ যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নর্-যাবের পাহারায় হাটহাজারী মাদ্রাসায় এসে পৌঁছায় আলস্নামা শফীর মরদেহবাহী অ্যাম্বুলেন্স। এরপর তার মরদেহ ভক্ত ও অনুসারীদের দেখার জন্য হাটহাজারী মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে রাখা হয়। আলস্নামা শফীর মৃতু্যর সংবাদ শুনে দেশের নানা প্রান্ত থেকে শুক্রবার রাত থেকেই তার ভক্ত অনুসারীরা তাকে শেষবারের মতো দেখতে এবং তার জানাজায় অংশ নিতে হাটহাজারী আসতে শুরু করেন। শনিবার সকালে হাটহাজারীতে মানুষের ঢল নামে। চট্টগ্রাম-হাটহাজারী সড়কে মানুষের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। একপর্যায়ে হাটহাজারী বাসস্ট্যান্ড থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। হাটহাজারী থেকে অক্সিজেন পর্যন্ত যানবাহনের চাপ কয়েকগুণ বেড়ে যায়। অনেকে তীব্র রোদের মধ্যে দীর্ঘপথ হেঁটে জানাজায় অংশ নেন। দেশের কওমি অঙ্গনের শীর্ষ আলেম আলস্নামা শাহ আহমদ শফীর জানাজায় অংশ নিতে আসা বিপুল জনসমাগমকে কেন্দ্র করে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে পুলিশ এবংর্ যাবের পাশাপাশি বিজিবি এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোতায়েন করা হয়। হাটহাজারীতে উপস্থিত হন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন,র্ যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মশিউর রহমান জুয়েল, পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিট্রেট ড. বদিউল আলমসহ প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা। পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক জানান, শফী হুজুরের জানাজা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে হাটহাজারীতে পুলিশ,র্ যাব এবং গোয়েন্দা সংস্থার ৫ শতাধিক সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তারা পুরো এলাকায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা বলয় তৈরি করে। অতিরিক্ত জেলা মাজিস্ট্রেট ড. বদিউল আলম জানান, জানাজা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পুলিশ,র্ যাবের পাশাপাশি হাটহাজারীসহ চট্টগ্রামের ৪ উপজেলায় ১০ পস্নাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। ৭ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করেন। হাটহাজারীতে ৪ জন এবং বাকি ৩ জন তিন উপজেলায় দায়িত্ব পালন করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে