শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন

যুক্তরাষ্ট্রসহ শীর্ষ ৯ দেশেই কমেছে পোশাক রপ্তানি

যাযাদি ডেস্ক
  ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

করোনাকালে (এপ্রিল থেকে জুন) যুক্তরাষ্ট্রসহ শীর্ষে থাকা ৯টি দেশেই বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে এই চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।

বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক রপ্তানির শীর্ষ ৯টি দেশ হলো- জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, স্পেন, নেদারল্যান্ড, ফ্রান্স, ইতালি, কানাডা ও বেলজিয়াম।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, করোনাকালীন তিন মাসে পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৩৮৪ কোটি ৫৪ লাখ ডলার আয় করেছে। এর মধ্যে এই ৯টি দেশেই রপ্তানি হয়েছে ৩০৪ কোটি ৭৪ লাখ ডলার। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগের তিন মাসের তুলনায় রপ্তানির এ পরিমাণ হচ্ছে অর্ধেক।

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, গত জানুয়ারি থেকে মার্চ এই তিন মাসে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে জার্মানিতে। পরের তিন মাসে অর্থাৎ (এপ্রিল থেকে জুন) করোনাকালীন তিন মাসে জার্মানিতে পোশাক রপ্তানি অর্ধেকে নেমে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে আরও জানা যায়, জানুয়ারি

থেকে মার্চ এই তিন মাসে জার্মানিতে পোশাক রপ্তানি হয়েছিল ১৪৬ কোটি ২০ ডলার। কিন্তু করোনাকালে অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন এই তিন মাসে জার্মানিতে মাত্র ৬৭ কোটি ৯০ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। অর্থাৎ তিন মাসে জার্মানিতে পোশাক রপ্তানি কমেছে ৭৮ কোটি ২৪ লাখ ডলার।

পোশাক রপ্তানির দ্বিতীয় শীর্ষ দেশ যুক্তরাষ্ট্রে এপ্রিল থেকে জুন এই তিন মাসে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ৭৭ কোটি ডলার। যদিও আগের তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানি হয়েছিল ১৩৯ কোটি ৬৯ লাখ ডলার। অর্থাৎ করোনাকালে রপ্তানি কমেছে ৬২ কোটি ৬৫ লাখ ডলার।

তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সাত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি হয়েছে ২৯০ কোটি ৫৩ লাখ ডলারের। আগের বছরের একই সময়ে দেশটিতে রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৩৫৬ কোটি ৬৫ লাখ ডলারের পোশাক পণ্য।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, পোশাক রপ্তানির তৃতীয় শীর্ষ দেশ যুক্তরাজ্য। এই দেশে করোনাকালে (এপ্রিল থেকে জুন) মাত্র ৩৬ কোটি ৯৬ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি করে বাংলাদেশ।

শীর্ষ চারে থাকা স্পেনে করোনাকালীন সময়ে পোশাক রপ্তানি হয়েছে ২০ কোটি ৬৩ লাখ ডলার। তার আগের তিন মাসে দেশটিতে রপ্তানি হয়েছিল ৬০ কোটি ১৩ লাখ ডলার।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, 'করোনাকালে যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীর সব দেশই আগের দেওয়া অর্ডার বাতিল করে।' তার মতে, করোনার কারণে নতুন অর্ডার সেইভাবে হয়নি। আর ইতালিসহ ইউরোপের দেশগুলোতে করোনার প্রকোপ ছিল বেশি। যে কারণে ওই দেশগুলোতে রপ্তানি অর্ধেকে নেমে গেছে বলে জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এ বি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, 'করোনার কারণে সারা পৃথিবীর মানুষ ঘরে বন্দি। পোশাক কেনার মতো পরিস্থিতিতে অনেকেই নেই।' তিনি বলেন, 'পোশাকের চাহিদা কমে যাওয়ার কারণে এমনটি হয়েছে।' এর কারণ উলেস্নখ করে তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্রসহ সব দেশের মানুষ করোনা নামক বিপদ থেকে উদ্ধারের চেষ্টা করছে। ফলে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি কমেছে।'

প্রসঙ্গত, দেশের মোট পোশাক রপ্তানির প্রায় ৯৬ শতাংশের বেশি আয় আসে এই ৯টি দেশ থেকে। আগে দেশভিত্তিক সবচেয়ে বেশি পোশাক রপ্তানি হতো যুক্তরাষ্ট্রে। এখন সেখানে জার্মানির স্থান।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও উলেস্নখ করা হয়েছে, দেশে মোট রপ্তানির ৮৩ শতাংশ আয় হয় তৈরি পোশাক থেকে। এর মধ্যে ৪১ দশমিক ৭০ শতাংশ আয় হয় ওভেন গার্মেন্টস পণ্য থেকে। এর বাইরে ৪১ দশমিক ৩০ শতাংশ আয় হয় নিটওয়্যার পণ্য রপ্তানি করে। এছাড়া, অন্যান্য পণ্য রপ্তানি করে আয় হয় ১৭ শতাংশ।

বাংলা ট্রিবিউন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<112669 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1