স্বেচ্ছাসেবক দলের আংশিক কমিটি

অসন্তোষ থাকলেও উচ্ছ্বাস বেশি

প্রকাশ | ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

হাসান মোলস্না

মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার এক বছর পর বিএনপির অঙ্গ সংগঠন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটি আংশিক ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সাবেক ছাত্রনেতাদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। বিগত দিনে যারা পদবঞ্চিত ছিলেন তাদেরকে পদায়ন করা হয়েছে। উলেস্নখযোগ্য সংখ্যক পদে এসব নেতাদের নিয়ে আসা হয়েছে। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার পরেও পূর্ণাঙ্গ না করে আংশিক কমিটি গঠিত হওয়ায় সংগঠনের সাবেক অনেক ত্যাগী নেতাকর্মীর প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। এজন্য অসন্তোষ আছে। তবে কমিটি পূর্নাঙ্গ করার সময় সবাইকে মুল্যায়ন করার হবে শীর্ষ নেতাদের এমন আশ্বাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সবমিলে করোনা মহামারীর মধ্যেই কমিটি প্রাকাশ্যে আসায় অসন্তোষ থাকলেও উচ্ছাসই বেশী। ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর প্রয়াত শফিউল বারী বাবুকে সভাপতি ও আব্দুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েলকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়েছিলো। গত ২৮ জুলাই শফিউল বারী বাবু ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এরপর ওই পদে সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করা হয়। স্বেচ্ছাসেবক দলের নিজস্ব কোনো গঠনতন্ত্র নেই। কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ হিসেবে নিজেদের মতো করে তিন বছর দাবি করেন নেতারা। সেই হিসেবে ২০১৬ সালে ঘোষিত আংশিক কমিটি তাদের পুরো মেয়াদ শেষ করেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করতে পারেনি। এবারও তারা আংশিক কমিটি ঘোষণা করেছেন বলে দলটির একটি বড় অংশ এখনো নেতৃত্বের বাইরে রয়ে গেছেন। বাকি পূর্ণাঙ্গ কমিটি কত বছর ঘোষণা করা হবে তা কেউ জানেন না। ঘোষিত কমিটিতে বিগত স্বেচ্ছাসেবক কমিটির ত্যাগী ও সক্রিয় নেতাদের বাইরে রেখে সাবেক ছাত্রনেতাদের একটি বড় অংশকে দিয়ে কোরাম পূর্ণ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। কয়েকটি ক্ষেত্রে সিনিয়র জুনিয়র কোনো ক্রমান্বয় মানা হয়নি। ঘোষিত কমিটিতে সহ সভাপতি হিসেবে রয়েছেন ৩০ জন। এর মধ্যে আজহারুল হক মিলন, এবিএম পারভেজ রেজা, চৌধুরী ওয়াহিদুর রহমান চয়ন, সুলতান মোহাম্মদ নাসিরউদ্দিন, মোস্তাকুর রহমান মোস্তাক, আসফ কবির চৌধুরী শ্বাশত, ড. শরিফূল ইসলাম দুলু স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন না। তারা সাবেক ছাত্রনেতা। অন্যদিকে যুগ্ম সম্পাদক পদে আরিফুর রহমান আরিফ, আজগর হায়াত লিমন, আহসান হাবিব প্রান্ত ও জাকারিয়া আল মামুনকে নিয়ে আসা হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটিতে সাবেক ছাত্রনেতাদের পদায়ন নিয়ে নেতাকর্মীরা উচ্ছাসিত থাকলেও কমিটির অনেক ক্ষেত্রে সিনিয়র-জুনিয়র মানা হয়নি বলে সমালোচনা করছেন। এর মধ্যে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক আক্তারুজ্জামান বাচ্চুকে যুগ্ম সম্পাদক করা হলেও বিগত কমিটির সহ সম্পাদক, সদস্যদের মধ্যে অনেককে সহ সভাপতি করা হয়েছে। বেশ কয়েকজন নিষ্ক্রিয় নেতাকে পদায়ন করে পুরস্কৃত করা হয়েছে। ভিন্নদিকে এই সংগঠনের ত্যাগী ও সক্রিয় নেতাদেরকে এখনো কোনো পদ দেওয়া হয়নি বলে নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। ছাত্রদলের রাজিব-আকরাম কমিটির সাবেক ছাত্রনেতাদের মধ্যে অনেককে এই কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। ছাত্রদলের সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ইফতেখারুজ্জামান শিমুলকে সহ সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। আর তার নীচে এর আগের কমিটির সহ সভাপতি সরদার মোহাম্মদ নুরুজ্জামান, দিপক কুমার বর্মন প্রিন্সকে রাখা হয়েছে। আবার তাদের নীচে ছাত্রদলের সাবেক সহ সভাপতি নাজমুল হাসানকে সহ দপ্তর সম্পাদক করা হয়েছে। কমিটিতে সহ সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে ২৮ জনকে। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি পদে সিনিয়র-জুনিয়র মানা হয়নি। স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক কমিটির জেড আই কামাল, আলাউদ্দিন জুয়েল, এবিএম মুকুল, মাসুম বিলস্নাহ, মুর্তজা বশির আপেলের মতো ত্যাগী আর সক্রিয় নেতাদের এখনো কোনো পদে রাখা হয়নি বলে সংগঠনের অনেক নেতাকর্মী ক্ষুব্ধ। তারা বলেন, সংগঠনের সক্রিয় নেতাদের মূল্যায়ন আগে করে অন্যান্য পদ ঘোষণা করলে এই সমস্যার সৃষ্টি হতো না। আবার কমিটি গঠনে এক নেতার এক পদ নীতি অবলম্বন না করে অনেক জেলার নেতাদেরকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ফরিদপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমানকে ফরিদপুর বিভাগীয় সহ সভাপতি করা হয়েছে। খুলনা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক তৈয়বুর রহমানকে খুলনা বিভাগীয় সহ সভাপতি করা হয়েছে। ঢাকা মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা লিটন মাহমুদ ও শাহাবুদ্দিন মুন্নাকে সহ সভাপতি করা হয়েছে। খুলনা মহানগর সহ সাধারণ সম্পাদক জামাল হোসাইন তালুকদারকে সহ সভাপতি করা হয়েছে। ###