খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার নিষেধাজ্ঞা শিথিলের দাবি বিএনপির

প্রকাশ | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে সরকারের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা শিথিলের দাবি জানিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। সোমবার সকালে জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদনের পরে তিনি এই দাবি জানান। বেলা সাড়ে ১১টায় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের নতুন কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েলের নেতৃত্বে নেতাকর্মীদের নিয়ে নজরুল ইসলাম খান দলের প্রতিষ্ঠাতার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এ সময়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের গোলাম সারোয়ার, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, সাদরেজ জামান, ইয়াসীন আলীসহ নতুন কমিটির নেতারা উপস্থিত ছিলেন। স্বেচ্ছাসেবক দলের নতুন কমিটির নেতাকর্মীরা শেরেবাংলা নগরে ব্যাপক নেতাকর্মীর শোডাউন করে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানে বড় বড় প্রতিকৃতি হাতে নিয়ে কয়েক হাজার নেতাকর্মী স্স্নেস্নাগান দিতে দিতে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতার সমাধিস্থলে প্রবেশ করেন। করোনা মহামারি শুরুর পর এ রকম নেতাকর্মীর উপস্থিতি এই প্রথম। নজরুল ইসলাম খান বলেন, খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার বিষয়টি শুধু মানবিকই না, এটা নৈতিক এবং জনগণের দাবি। কেউ একজন অসুস্থ হলে তার প্রয়োজনীয় সুচিকিৎসা হওয়া দরকার। আর বিএনপি প্রধানের চিকিৎসা আগেও বাইরে হয়েছে। কিন্তু বিদেশে চিকিৎসার ব্যাপারে যে আবেদন করা হয়েছিল সেই আবেদনটা গ্রহণ করা হয়নি। তার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য এই নিষেধাজ্ঞাটা শিথিল করার বিএনপির দাবি। 'বিএনপি নেতাদের অতিকথনের কারণে খালেদা জিয়াকে কারাগারে নেওয়ার দাবি উঠতে পারে'- তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদের এরকম বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় নজরুল ইসলাম খান বলেন, বেগম খালেদা জিয়া এই দেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী শুধু নন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের নেত্রী। অর্থাৎ স্বাধীনতার মূল চেতনার উদ্ধারকারী নেত্রী, এদেশের সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় মানুষ বেগম খালেদা জিয়াকে বিনা চিকিৎসায় অকালে দুনিয়া থেকে চলে যাওয়ার ব্যবস্থা করার অধিকার কারও নেই। সেজন্য আমরা তথ্যমন্ত্রী সাহেবকে বলব, খালেদা জিয়ার মুক্তি কিংবা তার কারাবন্দির সঙ্গে অন্য কোনো কিছুকে যুক্ত করা ঠিক হবে না। আর এটা অসুস্থতার বিষয়, চিকিৎসার বিষয়; রাজনীতির বিষয় নয়। কাজেই রাজনীতির সঙ্গে বিএনপি প্রধানের সুচিকিৎসার বিষয়টাকে সম্পৃক্ত করাটা এক ধরনের অপরাজনীতি। তিনি বলেন, এর আগেও যিনি তথ্যমন্ত্রী ছিলেন, এখনো যিনি আছেন উনারা হলেন জিয়া পরিবারের সমালোচনাবিষয়ক মন্ত্রী। কারণ তারা তাদের বিভাগের বিষয়ে যতটুকু কথা বলেন, তার চেয়ে বেশি কথা বলেন তারা শহীদ জিয়ার বিপক্ষে, বেগম খালেদা জিয়ার বিপক্ষে এবং তারেক রহমানের বিপেক্ষ। এটাই যেন তাদের মন্ত্রণালয়ের কাজ। সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরুটা জাতীয় কাউন্সিলের অংশ-গয়েশ্বর টানা পাঁচ মাস বন্ধের পর বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু হওয়াকে জাতীয় কাউন্সিলের অংশ হিসেবে দেখছেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। সোমবার সকালে শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই মন্তব্য করেন। জাতীয়তাবাদী তরুণ দলের ২৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনটির আহ্বায়ক সাঈদ আহমেদ আসলামের নেতৃত্বে নেতাকর্মীদের নিয়ে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় সকালে শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে তার আত্মা মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাতও করা হয়। গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, সাংগঠনিক কার্যক্রম কাউন্সিলের একটা অংশ। অর্থাৎ দেশব্যাপী প্রতিটা জেলা, উপজেলা বা থানার যতটা ইউনিট আছে সেগুলো কাউন্সিলের আগেই সম্পন্ন করতে হয়। সেই কাজটাই শুরু হয়েছে। বিশ্ব পরিস্থিতি ও বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে কখন কাউন্সিল করার সুযোগ সৃষ্টি হবে সেজন্য অপেক্ষা করতে হবে। একটা সময় কাউন্সিল হবে। গয়েশ্বর বলেন, বিএনপি বাংলাদেশের সর্ববৃহত রাজনৈতিক দল। এর একটা কাউন্সিল ভার্চুয়াল বা অনলাইনে হয় না। কাউন্সিল মানে হলো ব্যাপক। প্রায় চার হাজারের মতো কাউন্সিলর আছেন। তারপরে ডেলিগেট। আপনারা জানেন, আমাদের কাউন্সিলে লাখ লাখ লোক সমবেত হন। সব কিছু আপনাদের বিবেচনায় রাখতে হবে। ২০১৬ সালের ১৯ মার্চ বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিল হয় রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন প্রাঙ্গণে। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিন বছর পর পর জাতীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। গত রোববার থেকে বিএনপি তার সাংগঠনিক কার্যক্রম শুরু করে। করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাবের কারণে ২৫ মার্চ থেকে দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমসহ কমিটি গঠন ও পুনর্গঠনের কার্যক্রম বন্ধ রাখে দলটি।