টানা বর্ষণে নদীতে পানি বৃদ্ধি, ফের বন্যার শঙ্কা

প্রকাশ | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
অতিবৃষ্টি আর উজানের ঢলের কারণে ফের বিভিন্ন নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। বগুড়া ও লালমনিরহাটের বিভিন্ন গ্রামে পানি প্রবেশ করে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে মানুষ। পানিতে তলিয়ে গেছে আমন খেতসহ বিভিন্ন ফসলের খেত। ফলে আবারো বন্যার শঙ্কায় দুশ্চিন্তার ছাপ পড়েছে এসব এলাকার কৃষকের মুখে। আমাদের স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া জানান, গত কয়েক দিন ধরে টানা বৃষ্টিপাতে বগুড়ায় নদীগুলোতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। খাল ও নদীসংলগ্ন নিচু এলাকায় পানি ওঠায় বহু স্থানে আমনের খেত পানিতে তলিয়ে গেছে বা ডুবতে শুরু করেছে। এতে চলতি মৌসুমে আমনের আবাদ নিয়ে কৃষকরা শঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বগুড়া জানিয়েছে, এখনই আমন নিয়ে শঙ্কার কিছু নেই। যদি পানি দ্রম্নত নেমে যায়, তাহলে আবাদের কোনো ক্ষতি হবে না। শুধু আমন নয় কয়েকটি এলাকায় শীতকালীন আগাম সবজি খেতে ওঠা পানিও কৃষকদের চিন্তায় ফেলেছে। পানি যাতে সবজি ক্ষেতে না জমে সে জন্য পরামর্শ দিয়েছে কৃষি বিভাগ। আবহাওয়া অফিস জানায়, গত ৩ দিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে মঙ্গলবার। এরপর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা বৃষ্টিপাত হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গত কয়েক দিনে, বাঙালি, করতোয়া ও নগোর নদীতে পানি বেড়েছে। তবে যমুনাসহ এসব নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। এর মধ্যে বাঙালি, করতোয়া ও নাগর নদীর পানি বৃদ্ধির হার বেশি। বগুড়া কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. দুলাল হোসেন জানিয়েছেন, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত জেলার ৬টি উপজেলায় ৩৮০ হেক্টর জমির আমন আবাদ পানিতে ডুবলেও তা নষ্ট হয়নি। তাদের হিসাব অনুযায়ী সারিয়াকান্দিতে ১৫০ হেক্টর, সোনাতলায় ৮০ হেক্টর, শাজাহানপুরে ৫০ হেক্টর, শেরপুরে ৫০ হেক্টর, ধুনটে ২০ হেক্টর এবং বগুড়া সদর উপজেলায় ২০ হেক্টর আমন ক্ষেতে পানি উঠেছে। তিনি জানান, আগামী ৪/৫ দিনের মধ্যে খেত থেকে পানি নেমে গেলে আবাদের কোনো ক্ষতি হবে না। লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, উজানের ঢলে আর অতিবৃষ্টির কারণে লালমনিরহাটে আবারো বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়। পানি বৃদ্ধির ফলে পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধা উপজেলার বড়খাতা, সানিয়াজান, গড্ডিমারী, কালিগঞ্জ উপজেলার শৌলমারী, চরবৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার গোবর্ধন, মহিষখোচা, লালমনিরহাট সদর উপজেলার রাজপুর, খুনিয়াগাছ, তিস্তাসহ ১৫টি গ্রামে পানি প্রবেশ করেছে। ফলে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ। পানিতে তলিয়ে গেছে আমন খেতসহ বিভিন্ন ফসলের খেত। বাড়ি-ঘরে পানি ওঠায় লোকজন সড়কের পাশে এবং উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা গ্রামের তিস্তা পাড়ের বাসিন্দা আব্দুর রশিদ, মমতাজুল হক জানান, গত রাত থেকেই তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে আমাদের বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। আমাদের রান্না-খাওয়া বন্ধ। লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, উজানে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হওয়ায় তিস্তায় পানি বাড়ছে। এতে করে নদী তীরবর্তী এলাকায় পানি প্রবেশ করে মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।