বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মাল্টা চাষে স্বপ্ন পূরণে আশাবাদী আফরোজা

রূপক মুখার্জি, লোহাগড়া (নড়াইল)
  ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০
নিজের বাগানে মাল্টা দেখছেন আফরোজা আক্তার -যাযাদি

পাঁচ একর জমিতে মাল্টার চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন নারী উদ্যোক্তা আফরোজা আক্তার। ইতোমধ্যে বাগান জুড়ে মাল্টা গাছে ফল এসেছে। এ বছর প্রথম গাছে থরে থরে সাজানো ফল দেখা যাচ্ছে। গাছ ভেদে ২০ থেকে ৫০টি পর্যন্ত ফল ধরেছে। আর মাত্র দেড় মাস পরেই পাকা মাল্টা বাজারজাত করতে পারবেন। চার লক্ষাধিক টাকার মাল্টা বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী। উদ্যোক্তা আফরোজা আক্তারের স্বামী লাভলু সিকদার সৌদি প্রবাসী। গ্রামের বাড়ি কালিয়া উপজেলার মাউলী ইউনিয়নের কাঠাদুরা গ্রামে। বাড়ি থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে পার্শ্ববর্তী লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের লুটিয়া গ্রামে তাদের নিজস্ব জমিতে আড়াই বছর আগে শুরু করেন মাল্টার চাষা। আফরোজা আক্তার জানান, স্বামী সৌদি প্রবাসী লাভলু সিকদারের অনুপ্রেরণায় মাল্টা চাষের সিদ্ধান্ত নেন। এরপর ইউটিউবসহ ইন্টারনেটের মাধ্যমে মাল্টা চাষ সম্পর্কে ধারণা নেন। এক পর্যায়ে ময়মনসিংহ জেলার একটি নার্সারি থেকে ১ হাজার ৩শ চারা এনে শ্রমিক দিয়ে জমিতে লাগান। আফরোজা আরও বলেন, 'মাল্টা গাছে মাঝে মধ্যে ছত্রাকের আক্রমণ হয়। তবে এ ব্যাপারে ইউটিউবের পাশাপাশি লোহাগড়া উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে ওষুধ ব্যবহার করে তা দমন করা সম্ভব হয়েছে। অন্যান্য ফসল চাষের তুলনায় মাল্টা বাগানে সঠিকভাবে পরিচর্যা ও ফলন ভালো হলে অর্থনৈতিকভাবে অনেক লাভবান হতে পারব। তবে মাল্টা বাজারজাত নিয়ে দুর্ভাবনায় আছি। মাল্টা বাগানে যাতায়াতের একমাত্র কাঁচা রাস্তাটির অবস্থা খুব খারাপ। এদিকে মাল্টা চাষের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ায় কৃষকদের মাঝে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অনেক চাষিই মাল্টার বাগান দেখতে ভিড় করছেন এবং চাষ পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা নিচ্ছেন। ইতনা গ্রামের তাজুল ইসলাম বলেন, 'খবর শোনার পর আমি বাগানটি পরিদর্শনে যাই। সেখান থেকে কাঁচা অবস্থায় মাল্টা রস করে খেয়েছি। স্বাদ খুব ভালো। তিনি বলেন, আমিও একটি বাগান করার চিন্তা-ভাবনা করছি। স্কুল শিক্ষার্থী লাবণ্য খানম বলেন, 'বাজার থেকে মাল্টা কিনে খেয়েছি। কিন্তু এই বাগানের মাল্টার স্বাদ যেন আরও ভালো এবং মিষ্টি।' লোহাগড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সমরেন বিশ্বাস জানান, তাদের তত্ত্বাবধানে আফরোজা প্রায় ৫ একর জমিতে মাল্টার চাষ করেছেন। এ বছর প্রায় ৫ লাখ টাকার মাল্টা বিক্রি করা সম্ভব হবে। পুরোপুরি উৎপাদন শুরু হলে নড়াইলের চাহিদার পাশাপাশি যশোর ও গোপালগঞ্জ জেলার চাহিদার কিছুটা হলেও পূরণ করা সম্ভব হবে। আশপাশ এলাকার অনেকেই মাল্টা চাষে উৎসাহী হবে বলে জানান তিনি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নড়াইলের উপপরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন, আফরোজা আক্তার কৃষি বিভাগের প্রত্যক্ষ নজরদারিতে থেকে নিয়ম ও পদ্ধতি মেনে মাল্টা চাষ করে সফলতার স্বপ্ন দেখছেন। তার যে পদক্ষেপ এবং কৃষি বিভাগের যে যোগসূত্র এর মাধ্যমে আগামীতে মাল্টা চাষ সম্প্রসারণ সহজ হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে