মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

সেফটিপিনের চেইন গিনেস বুকে পার্থ চন্দ্র

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি
  ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০
সেফটিপিন দিয়ে চেইন বানিয়ে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নিজের নাম তুলেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার পার্থ চন্দ্র দেব -ফোকাস বাংলা

সোনালি রঙের সেফটিপিন দিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে বড় চেইন তৈরি করে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান করে নিয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার পার্থ চন্দ্র দেব। তার তৈরি চেইনের দৈর্ঘ্য ২ হাজার ৪০১ দশমিক ৮৩ মিটার বা ৭ হাজার ৮৮০ ফুট শূন্য দশমিক ২ ইঞ্চি। এই চেইন তৈরিতে ব্যবহার করা হয় ১ লাখ ৮৭ হাজার ৮২৩টি সেফটিপিন। গত ১৭ সেপ্টেম্বর ডাকযোগে স্বীকৃতির সনদ তার হাতে পৌঁছায়। এর মধ্যদিয়ে তিনি ২০১৮ সালে করা ভারতের হার্শা নান ও নাভা নামের দুজনের তৈরি করা রেকর্ড ভাঙেন। পার্থ চন্দ্র দেব নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নের ফান্দাউক গ্রামের প্রয়াত জগদীশ দেবের ছেলে। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজের বিএসএস (ডিগ্রি) শেষ বর্ষের ছাত্র। একইসঙ্গে তিনি হবিগঞ্জ জেলার সাঙ্গবেদ সংস্কৃতি কলেজের ব্যাকরণ তীর্থ ও স্মৃতিতীর্থ (আদ্য) বিভাগে পড়াশোনা করছেন। পড়াশোনার পাশাপাশি পার্থ চন্দ্র দেব ফান্দাউক বাজারে তার বাবার প্রতিষ্ঠানে বড় ভাইকে সহযোগিতা করেন। জানা গেছে, গত ২০১৯ সালের ২০ এপ্রিল পার্থ সেফটিপিনের দীর্ঘতম চেইন তৈরি করে বিশ্ব রেকর্ড গড়ার জন্য গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে আবেদন করেন। অনুমতি পাওয়ার পর গত বছরের ২৩ জুলাই থেকে টানা ৪৫ দিন তিনি সেফটিপিন দিয়ে চেইন তৈরির কাজ করেন। এ ব্যাপারে পার্থ চন্দ্র দেব বলেন, ছোটবেলা থেকেই ব্যতিক্রম কিছু করার ইচ্ছে ছিল। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস ঘেঁটে দেখেছি ২০১৮ সালের ২৩ এপ্রিল ভারতের হার্শা নান ও নাভা নান যৌথভাবে সেফটিপিন দিয়ে সবচেয়ে দীর্ঘতম চেইন তৈরির রেকর্ড গড়েছিলেন। তাদের চেইনটির দৈর্ঘ্য ছিল ১ হাজার ৭৩৩ দশমিক ১ মিটার। তাই দোকানের ছোট ছোট ২ সেন্টিমিটার আকারের সোনালি রঙের সেফটিপিন দিয়ে সবচেয়ে বড় চেইন তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করি। ১৩ হাজার ৩৭০ টাকায় ১ লাখ ৮৭ হাজার ৮২৩টি সেফটিপিন কিনে চেইন তৈরির কাজ শুরু করি। প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা কাজ করি। এতে সময় লাগে ২৪১ ঘণ্টা ৪২ মিনিট। তিনি বলেন, দুজন সাক্ষী ও সার্ভেয়ারসহ ১৪ ধরনের ডকুমেন্ট জমা দিয়েছি। ফান্দাউকের অভিজ্ঞ জরিপকারক (সার্ভেয়ার) তোফাজ্জল শাহ মারজান এই চেইন পরিমাপ করেন। নাসিরনগর উপজেলায় অবস্থিত শ্রী শ্রী পাগল শংকর মন্দিরে এই চেইন পরিমাপ করা হয়। এ সময় হবিগঞ্জ জেলার লাখাই মুক্তিযোদ্ধার সরকারি ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক রাজীব কুমার আচার্য ও ফান্দাউক পন্ডিতরাম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পলস্নব হালদার সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। পার্থ আরও বলেন, আরেকটি বিশ্ব রেকর্ড গড়তে চাই। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেটি নিয়েও কাজ শুরু করেছি। মন্দিরে এর দৈর্ঘ্য পরিমাপ করে ১৭ জিবির ভিডিও ফুটেজ দুই জিবিতে রূপান্তর করে গিনেজ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। পার্থ জানান, তার এই কাজে মা স্বপ্না দেব, বড় ভাই জয়ন্ত কুমার দেব, তার স্ত্রী, ভাগনি জয়শ্রী দেব সব সময় অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। তার বড় ভাই জয়ন্ত কুমার দেব বলেন, অনেকেই ফোন করে অভিবাদন জানাচ্ছে। ভালো লাগছে। তবে এখনো প্রশাসন বা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ধরনের অভিনন্দন জানানো হয়নি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে