করোনায় বড় প্রভাব পড়েছে বৈদেশিক কর্মসংস্থানে

প্রকাশ | ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
করোনাভাইরাসের কারণে চলতি বছর বৈদেশিক কর্মসংস্থানে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এ বছর আগস্ট মাস পর্যন্ত এক লাখ ৮১ হাজার ২৭৩ জনের বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছে। অথচ গত বছর এই সময়ে বৈদেশিক কর্মসংস্থান হয়েছিল ৪ লাখ ৬ হাজার ৯৬২ জনের। আর এ বছর লক্ষ্যমাত্রা ছিল সাড়ে ৭ লাখ মানুষের বৈদেশিক কর্মসংস্থান হবে। কিন্তু সেই লক্ষ্যমাত্রা এখনো অনেক দূরে। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে কোভিড-১৯ মহামারিকালে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের গৃহীত পদক্ষেপ ও ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে জানানো হয়। সেখানেই বৈদেশিক কর্মসংস্থানের এই চিত্র তুলে ধরা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই বৈঠকে যোগ দেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গত ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক লাখ ৪১ হাজার ৩৬ জন দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে ২৮ হাজার ৫৮৬ জন ট্রাভেল পাস নিয়ে এসেছেন। তাদের পুনরায় বিদেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, করোনার এই সংকটের মধ্যেও ২০১৯-২০ অর্থবছরে রেকর্ড ১৮ দশমিক ২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রবাসী আয় এসেছে। যা আগের বছরের চেয়ে ৯ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। মন্ত্রিসভার বৈঠকে সৌদিপ্রবাসীদের যাওয়া নিয়ে সৃষ্ট সমস্যার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জানান, সৌদি আরবের সঙ্গে আলোচনা করে সময় বাড়ানোর চেষ্টা করছেন তিনি। অনির্ধারিত আলোচনায় বৈদেশিক কর্মসংস্থানে নতুন জায়গা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে আগামী বৈঠকে বিস্তারিত প্রতিবেদন দিতে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে। বৈঠকে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচি অষ্টম পর্বে সম্প্রসারণের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এই পর্বে আরও ২৭ জেলায় এই কর্মসূচি বাস্তবায়ন হবে। বেসরকারি মেডিকেল-ডেন্টালে ৭৫% স্থায়ী শিক্ষক : এদিকে দেশের বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোতে ৭৫ শতাংশ স্থায়ী শিক্ষক রাখার বাধ্যবাধকতা রেখে পরিচালনায় নতুন আইন করতে যাচ্ছে সরকার। এই লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার ভার্চুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে 'বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ আইন, ২০২০'-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই নীতিমালা অনুযায়ী রিজার্ভ ফান্ডে বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোকে তিন কোটি টাকা এবং ডেন্টাল কলেজগুলোকে দুই কোটি টাকা রাখতে হবে। মেট্রোপলিটন এলাকায় বেসরকারি মেডিকেল কলেজ করতে কমপক্ষে দুই একর জমি এবং অন্য জায়গায় স্থাপন করলে চার একর জমি থাকতে হবে বলে জানা গেছে। এছাড়া নতুন আইন পাস হলে মেডিকেল কলেজগুলোকে মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি রাখতে হবে। যে বিভাগে যে মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ থাকবে, সেই বিভাগের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সেগুলো পরিচালিত হবে। ঢাকা বিভাগের সব বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকবে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলো এতদিন দুটি নীতিমালার অধীনে চলত। নীতিমালা দিয়ে সব কিছু সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা যাচ্ছিল না, এ জন্য নতুন আইন করা হচ্ছে। বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের প্রত্যেক বিভাগে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অনুপাত হবে ১:১০। এসব প্রতিষ্ঠানে কমপক্ষে ৫০ জন শিক্ষার্থী থাকতে হবে। ২৫ শতাংশের বেশি খন্ডকালীন শিক্ষক রাখা যাবে না, ৭৫ শতাংশ স্থায়ী শিক্ষক থাকতে হবে। খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, বেসরকারি মেডিকেল কলেজে যতগুলো শয্যা থাকবে তার ১০ শতাংশ দরিদ্রদের বিনামূল্যে চিকিৎসার জন্য বরাদ্দ রাখতে হবে। মেডিকেল কলেজে কমপক্ষে ২৫০টি এবং ডেন্টালে কমপক্ষে ৫০টি শয্যা থাকতে হবে। আইন অমান্য করলে দুই বছর কারাদন্ড, ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দন্ড দেওয়া যাবে। এছাড়া অনুমোদন বাতিলও করা হতে পারে। নতুন আইন কার্যকর হওয়ার পর বর্তমানে যেসব মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ রয়েছে সেগুলোকে শর্ত পূরণ করতে সময় দেওয়া হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, খসড়া আইনে প্রয়োজনীয় বিধিমালা প্রণয়নেরও ক্ষমতা দেওয়া আছে। খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম ব্রিফিংয়ে জানান, বাংলাদেশে বর্তমানে ৭০টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ, ২৬টি ডেন্টাল কলেজ, ৩৬টি সরকারি মেডিকেল কলেজ এবং ১টি ডেন্টাল কলেজ রয়েছে।