শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
একনেকে ৪ প্রকল্প অনুমোদন

কৃষিজমিতে নয়, শিল্পকারখানা হবে অর্থনৈতিক অঞ্চলে :প্রধানমন্ত্রী

শেখ হাসিনা বলেন, সরকারি ও বেসরকারি খাতে দেশে ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত রয়েছে সরকারের
যাযাদি রিপোর্ট
  ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার গণভবনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করেন -ফোকাস বাংলা

ফসলি জমি ও বসতবাড়ি রক্ষার্থে কৃষি জমিতে নয়, অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্পকারখানা নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সরকারি ও বেসরকারি খাতে দেশে ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত রয়েছে সরকারের। এসব অঞ্চলেই শিল্পকারখানা প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

মঙ্গলবার গণভবন থেকে সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে শেরেবাংলা নগর এনইসি সম্মেলন কক্ষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে প্রকল্পের সার্বিক বিষয় সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

এদিকে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ৭৯৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা খরচে চারটি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকার দেবে প্রায় ৬২৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা এবং বিদেশি ঋণ থেকে পাবে ১৭২ কোটি ৮০ লাখ টাকা।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমাদের কৃষি জমি কমে যাচ্ছে। তাই প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন যেখানে সেখানে শিল্পকারখানা নির্মাণ করা যাবে না। আমরা ইকোনমিক জোন করে দিচ্ছি। ইকোনমিক জোনেই শিল্পকারখানা নির্মাণ করতে হবে। এসব স্থানে শিল্পকারখানা নির্মাণের জন্য সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে।

একনেক সভায় প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, বিমান, বাস, ট্রেন ও লঞ্চসহ সব টার্মিনালে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আরও উন্নত করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি ছোট ছোট খাল উদ্ধার করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একইভাবে খালের পাড় বেঁধে দিতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন গ্রাম অঞ্চলে অধিকাংশ স্থানে মারামারি ও ঝগড়ার মূল কারণ জমি। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে জমির সব কাগজ ডিজিটাল হয়ে যাবে। তখন জমির নম্বর দেখে বলা যাবে জমিটা বসতভিটা না কৃষি। ফলে মারামারি ও ঝগড়া কমে যাবে।

অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে, মৌজা ও পস্নটভিত্তিক জাতীয় ডিজিটাল ভূমি জোনিং প্রকল্প। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। দেশের সব ভূমিকে জাতীয় ডিজিটাল ভূমি জোনিং করা হচ্ছে। ভূমির গুণাগুণ অনুযায়ী ভূমিকে পস্নটওয়ারি কৃষি, আবাসন, বনায়ন, জলমহাল, বাণিজ্যিক ও শিল্প উন্নয়ন, পর্যটন ইত্যাদি শ্রেণিতে বিভক্ত করে গ্রামাঞ্চলের জন্য মৌজা ও পস্নটভিত্তিক ডিজিটাল ভূমি জোনিং ম্যাপ প্রণয়ন করা হবে।

মাঠ পর্যায়ে ভূমি ব্যবস্থাপনার ওপর সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুবিধার্থে কেন্দ্রীয়ভাবে কম্পিউটারাইজড ভূমি তথ্য সংরক্ষণ পদ্ধতি স্থাপন করা এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য। প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদনের সময় প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনা দিয়েছেন।

আঞ্চলিক অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ উন্নয়ন ও নৌরুট সচল রাখতে চট্টগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ নৌরুটে ৯০০ কিলোমিটার ড্রেজিং করা হবে। পাশাপাশি টার্মিনালসহ আনুষঙ্গিক উন্নয়ন করবে সরকার। প্রকল্পের আওতায় চারটি প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল নির্মাণ ও উন্নয়ন করা হবে। পানগাঁও ও আশুগঞ্জ টার্মিনাল উন্নয়ন করা হবে। তিন হাজার ২০০ কোটি টাকা থেকে ব্যয় বেড়ে এখন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে তিন হাজার ৩৪৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এতে সময়ও বেড়েছে। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া প্রকল্পটির সময় দেড় বছর বাড়িয়ে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের 'ভৈরব নদ পুনঃখনন (দ্বিতীয় পর্যায়)' প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২৩৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। চলতি বছরের আগস্ট থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের 'নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ, চাটখিল, সেনবাগ ও সোনাইমুড়ি উপজেলার জলাবদ্ধতা দূরীকরণের লক্ষ্যে খাল পুনঃখনন' প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৭১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। চলতি বছরের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।

একনেক সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক; তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ; স্থানীয় সরকার, পলস্নী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম; শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন; স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক; ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। এছাড়া সংশ্লিষ্ট সচিবসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<113735 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1