বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

তোহামনি ধান চাষে সফল ইমদাদুল

তারেক মাহমুদ, কালীগঞ্জ (ঝিনাইদহ)
  ২২ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০
নিজ ক্ষেতে নতুন জাতের ধান দেখাচ্ছেন কালীগঞ্জের কৃষক ইমদাদুল হক -যাযাদি

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ইমদাদুল হক ইন্তা নামের এক কৃষক ভিন্ন জাতের নতুন এক ধান চাষ করে সফলতা পেয়েছেন। নতুন জাতের এ ধান এলাকায় কৃষকদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। প্রতিদিন এলাকার কৃষকরা তার ধান খেত দেখতে আসছেন। বিজাতীয় ধানের সঙ্গে অন্য জাতের ধানের পরাগায়নের মাধ্যমে তিনি নতুন জাত উদ্ভাবন করেছেন বলে দাবি করছেন ওই কৃষক। তার সংরক্ষিত নতুন জাতের এ ধানের নাম দিয়েছেন তোহামনি। তোহামনির ফলন দেশে চাষ হওয়া অন্য জাতের থেকে বেশি বলে দাবি ওই কৃষকের। চলতি আমন মৌসুমে তিনি সাড়ে তিন বিঘা জমিতে এই ধান চাষ করেছেন। এছাড়া একই এলাকার আরও দুই কৃষক দেড় বিঘা জমিতে নতুন জাতের এ ধান চাষ করেছেন। গত বছর ইরি বোরো মৌসুমে ৯ শতক জমিতে তোহামনি ধানের চাষ করে ১০ মণ ৭ কেজি ধান পেয়েছিলেন এই কৃষক। সেখান থেকে একমণ ধানের বীজ রেখে বাকি ধান চাল করা হয়েছে। ইমদাদুল হক কালীগঞ্জ উপজেলার মেগুরখিদ্দা গ্রামের মৃত আবুল হোসেন মন্ডলের ছেলে। কৃষক ইমদাদুল হক আগে

\হপেশায় সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী ছিলেন।

ইমদাদুলের ধানের আকার মাঝারি চিকন। একটি ধানের শীষে ৪২০ থেকে ৪৫০টি ধান হয়। এরমধ্যে ৬০ থেকে ৮০টি ধান অপুষ্ট হয়ে থাকে। কিন্তু দেশে চাষ হওয়া অন্য জাতের ধানে ২৫০ থেকে ৩০০টি ধান থাকে। এছাড়া তোহামনি ধান গাছের উচ্চতা মৌসুম ভেদে সাড়ে তিন থেকে সাড়ে চার ফুট উঁচু হয়ে থাকে। ইরি মৌমুমে এই ধানের জীবনকাল ১৫০ দিন এবং আমন মৌসুমে ১২০ থেকে ১৩০ দিন।

কৃষক ইমদাদুল হক জানান, ২০১৫ সালের কথা। আমার ধানের খেতে বিজাতীয় একটি ধান গাছ থেকে ছয়টি ধানের শীষ সংগ্রহ করি। পরে সুবল লতা ধানের সঙ্গে ৪০ গোছ ধানের চারা রোপণ করে পরাগায়নের পর আবার সংগ্রহ করি। পরের বছর বাসমতি ধানের আবার ৪০ গোছ ধানের চারা রোপণ করে সংগ্রহ করি। এরপরের মৌসুমে এক গোন্ডা জমিতে এই ধানের চারা রোপণ করে বীজ সংগ্রহ করি। ২০১৯ সালে ইরি বোরো মৌসুমে ৯ শতক জমিতে ধান রোপণ করি। এই জমিতে ১০ মণ ৭ কেজি ধান হয়। চলতি আমন মৌসুমে সেই বীজ থেকে সাড়ে তিন বিঘা জমি চাষ করা হয়েনে। দু'এক দিনের মধ্যে ধান কাটা হবে। মাঠে চাষ হওয়া অন্য ধানের থেকে আমার ধানের শীষ বড়, ধানও বেশি। সবার আগে পাক ধরেছে। আশা করি ৩৩ শতকের বিঘা জমিতে ৩০ মণ ধানের বেশি হবে।

গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য আক্তারুল ইসলাম জানান, কয়েক বছর ধরে ইমদাদুল হক এই ধান নিয়ে কাজ করছেন। এলাকার কেউ তাকে ধান গবেষক বলে রহস্য করতেন, কেউ আবার পাগলও বলতেন। কিন্তু গত ইরি মৌসুমে তার ধান দেখে সবাই অবাক। চলতি মৌসুমে সবাই তার ধান দেখতে আসছে। এখন সবাই তার ধান বীজ নেওয়া জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার শিকদার মো. মোহায়মেন আক্তার জানান, সংবাদ পেয়ে তার ধানখেত দেখতে গিয়েছিলাম। জমিতে নিয়ম মেনে চারা রোপণ বা সার কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়নি। তারপরও তার ধান চাষ সন্তোষজনক। ধানের শীষে যে পরিমাণ ধান রয়েছে তাতে ফলনও সন্তোষজনক হবে মনে করছি। কিন্তু জাত উন্নয়নের দাবি নিয়ে কিছু বলতে পারব না। বাংলাদেশ কৃষি ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরা আছেন, নিয়ম মেনে চাষ করছে তারা পরবর্তি মৌসুমে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বলতে পারবেন জাত উন্নয়ন হয়েছে কিনা বা আদৌ জাত উন্নয়ন সম্ভব কিনা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<116106 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1