বিজয় দিবসে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি রেলপথ ফের চালু হচ্ছে

বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উদ্‌যাপন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই লাইনে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করবেন

প্রকাশ | ২৮ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

জুলফিকার আলী ভুট্টো, ডোমার (নীলফামারী)
নীলফামারীর ডোমার উপজেলার চিলাহাটি ও ভারতের হলদিবাড়ী রেলপথ সংযোগের স্থাপন কাজ শেষ করেছে দুই দেশ। মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশের রেলওয়ের বিশেষজ্ঞ দল একটি রেলইঞ্জিন নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ট্রায়ালের জন্য বাংলাদেশ সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত যান। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর উদ্‌যাপন উপলক্ষে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই লাইনে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধন করবেন। ৫৫ বছর পর আবারও এই লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচলের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে যোগাযোগের নবদিগন্ত সূচনা হবে। নীলফামারী জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী ও রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল জোনের কর্মকর্তারা ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিকভাবে রেলইঞ্জিনের যাত্রার উদ্বোধন করেন। গত ৮ অক্টোবর বেলা ১১টার দিকে ভারতের রেলওয়ের বিশেষজ্ঞ দল একটি রেলইঞ্জিন পরীক্ষামূলকভাবে ভারত সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ১০ মিনিট অবস্থানের পর তারা ফিরে যান। রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চল জোনের প্রকল্প পরিচালক আবদুর রহিম জানান, মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাংলাদেশ থেকে একটি বিশেষজ্ঞ দল ট্রেনের একটি ইঞ্জিন নিয়ে ভারতীয় সীমান্ত এলাকা ডাঙ্গাপাড়ার ৭৮২ মেইন পিলারের সাব পিলার-৭৮২/৩-এস পিলারের পাশ দিয়ে হুইসেল বাজাতে বাজাতে ভারতের দিকে রওনা হন। বাংলাদেশের রেলইঞ্জিনটি বিভিন্ন রংয়ে সাজানো ছিল। এ সময় ভারতের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন উত্তর-পূর্ব রেলওয়ের প্রধান প্রকৌশলী জেপি শিং, উপপ্রধান প্রকৌশলী ভিকেমিনা, নির্বাহী প্রকৌশলী পিকেজে, ভারতীয় ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার সন্দ্বীপ কুমার, প্রকল্প পরিচালক তপন দাস প্রমুখ। বাংলাদেশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন নীলফামারী জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী, নীলফামারী ৫৬ বিজিবির লে. কর্নেল.মামুনুল হক মামুন, বাংলাদেশ রেলওয়ের চিফ ইঞ্জিনিয়ার আল ফাত্তাহ্‌ মোহাম্মদ মাসউদুর রহমান, বাংলাদেশ রেলওয়ের পাকশি ডিভিশনের প্রকল্প পরিচালক মো. আবদুর রহিম এবং ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স লিমিটেডের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। রেলওয়ে সূত্রমতে, ১৯৪৭ সালের ১৫ আগস্ট পাক-ভারত বিভক্তের পরও এই পথে রেল চলাচল চালু ছিল। সে সময় এই পথে দুই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চলাচল করত যাত্রী ও মালবাহী ট্রেন। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের পর বন্ধ হয় দুই দেশের মধ্যে রেল চলাচল। পরিত্যক্ত রেলপথটি চালুর উদ্যোগ নেন শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি সরকার। রেলপথটি চালু করতে ৮০ কোটি ১৬ লাখ ৯৪ হাজার টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নেয় বর্তমান সরকার। ২০১৯ সালের ২১ সেপ্টেম্বর চিলাহাটি রেলস্টেশন চত্বরে প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রেলপথমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন।