বাংলাদেশের গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রিত :ফখরুল

প্রকাশ | ৩০ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
মির্জা ফখরুল ইসলাম
বাংলাদেশে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রিত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণের জন্য যেসব আইন হয়েছে, সেগুলো গণমাধ্যমের স্বাধীনভাবে কাজ করার জন্য কখনো উপযোগী নয়। বাংলাদেশে গণমাধ্যম, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ভিন্নমতকে সহ্য করার যে সহনশীলতা, সেটা ধীরে ধীরে একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সামনে সংগঠনটির রজতজয়ন্তী উপলক্ষে শোভাযাত্রার আগে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, সারা বিশ্বে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর একটা চাপ সৃষ্টি শুরু হয়েছে। বাংলাদেশে সেই চাপ অনেক বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শুধু রাজনৈতিক কারণে এ দেশে অনেক সংবাদকর্মীকে নিগৃহীত হতে হয়েছে, প্রাণ দিতে হয়েছে। অনেক সময় সাংবাদিকদের কারাগারে যেতে হয়েছে। সংবাদ প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক সময় বন্ধ করা হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্র এখন প্রায় অনুপস্থিত। র্ যাবের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মার্কিন সিনেট কমিটির নিষেধাজ্ঞা চাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'আমাদের দুঃখ হয়, আজকে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষিতে এ বিষয়গুলো বিদেশের কাছে যাচ্ছে, বিশ্বসভার কাছে যাচ্ছে, যা আমাদের জন্য কখনই সুখকর বিষয় নয়।' সংক্ষিপ্ত বক্তব্য শেষে বিএনপির এই প্রবীণ নেতা ডিআরইউ'র রজতজয়ন্তীর শোভাযাত্রা উদ্বোধন করেন। ডিআরইউ'র সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদের সভাপতিত্বে এই শোভাযাত্রার আগে হওয়া এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে ডিআরইউ'র সাধারণ সম্পাদক রিয়াজ চৌধুরী, সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, ইলিয়াস হোসেন, ডিআরইউ'র জ্যেষ্ঠ সদস্য শাহনেওয়াজ দুলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এদিকে দেশের সাংবাদিকরা বিচারহীনতার সংস্কৃতির মধ্যে রয়েছেন বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল। তিনি বলেন, ঢাকার বাইরের সাংবাদিকরা তুলনামূলকভাবে আরও বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহারের কথা উলেস্নখ করে এই সাংবাদিক বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ৫৭ ধারাসহ বিভিন্ন ধারা, উপ-ধারা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই আইন প্রণয়নের পর বিশ্ব গণমাধ্যম সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান তিন ধাপ নিচে নেমে গেছে। বৃহস্পতিবার ইনস্টিটিউশন অব ডিপেস্নামা ইঞ্জিনিয়ার্স-বাংলাদেশের (আইডিইবি) মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি মিলনায়তনে 'ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর পূর্তি' উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার প্রথমদিনে 'বাংলাদেশে সাংবাদিকতার সংকট ও সম্ভাবনা : বর্তমান প্রেক্ষিত' শীর্ষক স্মারক বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। ডিআরইউ'র সাবেক সভাপতি শাহজাহান সরদারের সভাপতিত্বে এবং সহ-সভাপতি নজরুল কবীরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ফিন্যান্সিয়াল হেরাল্ডের সম্পাদক রিয়াজউদ্দিন আহমেদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, বাংলাভিশনের হেড অব নিউজ ড. আবদুল হাই সিদ্দিক বক্তব্য রাখেন।