বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পানিফল চাষে ভাগ্যের চাকা ঘুরেছে সাইদুরের

মাহবুবুজ্জামান সেতু, মান্দা (নওগাঁ)
  ০১ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০
পানিফল সংগ্রহ করছেন চাষিরা -যাযাদি

নিজের জমি বলতে কিছুই নেই, অন্যের জমি বর্গাচাষ করেন। আর এ থেকে সামান্য আয়ে ভরণ-পোষণ চলত পরিবারের তিন সদস্যের। পরে পানিফল চাষ করে ভাগ্য বদলে যায় সাইদুর রহমানের। তার বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলার গনেশপুর ইউনিয়নের পারইল গ্রামে। স্বল্প সময়ে পানিফল চাষে তিনি লাভবান হয়েছেন। সংসার থেকে দূর হয়েছে অভাব।

সাইদুর বলেন, স্থানীয় খাল-বিল, নদী, ডোবা ও পুকুরের পানিতে বাণিজ্যিকভাবে পানিফল চাষ করা হয়। যা বাজারের সবচেয়ে সস্তা ফল। স্বল্প সময়ে কম পরিশ্রমে অধিক ফলন হওয়ায় অনেকেই আগ্রহ করে চাষ করেন ফলটি। আষাঢ় মাসের বৃষ্টিতে যখন জলাশয়গুলোতে পানি জমে তখন ওই পানিতে পানিফলের চারা ছেড়ে দেওয়া হয়। পানিতে ছাড়ার তিন মাস পরই ফল পাওয়া যায়। ভাদ্র মাস থেকে গাছে ফল আসা শুরু করে। আর কার্তিক মাসের শেষ পর্যন্ত ফল বিক্রি করা যায়। শুরুতে ফল কম আসায় মাসে দু-তিনবার ফল সংগ্রহ করা যায়। তবে গাছে বেশি ফল আসা শুরু হলে প্রতি সপ্তাহেই সংগ্রহ করা হয়। জলাশয়ে পানি কম থাকলে নেমে আর পানি বেশি থাকলে নৌকায় চড়ে ফল সংগ্রহ করা হয়।

তিনি আরও জানান, ২০ বছর আগে বিয়ে করার পর তার সংসারে অভাব নেমে আসে। স্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করে বাড়ির পাশে অন্যের ডোবা বর্গা নিয়ে পানিফল চাষ করেন তিনি। ওই বছর ভালো লাভ পেয়েছিলেন। পরের বছর দেনা করে বেশি পরিমাণ জলাশয়ে পানিফল চাষ করেন।

এবার ১৭ হাজার টাকায় ১৬ বিঘা জমি লিজ নিয়ে দেশীয় জাতের পানিফল চাষ করেছেন। কীটনাশক, শ্রমিক ও সার বাবদ প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। যদিও নিজের বীজ থাকায় খরচ কিছুটা কম হয়েছে।

সাইদুর আরও জানান, পানিফল গাছে এক ধরনের লতি হয়, সেই লতি তুলে পানিতে সংরক্ষণ করে রাখা হয়। এছাড়া কাটিং থেকেও বংশবিস্তার হয়।

তিনি আশা করছেন এ মৌসুমে প্রায় ২ লাখ টাকার মতো বিক্রি হবে। পাশাপাশি আম, জলপাইয়ের ব্যবসাও করেন তিনি। তবে স্বল্প পরিশ্রমে ও কম সময়ে পানিফল একটি লাভজনক ব্যবসা।

তিনি আরও বলেন, চলতি বছর এ পর্যন্ত তিনবার পানিফল সংগ্রহ করে প্রায় ২০ হাজার টাকার মতো বিক্রি করেছেন। বাজারে এখন পানিফলের দাম ১ হাজার থেকে ১২শ টাকা মণ। রাজশাহীতে ফলটি পাইকারি বিক্রি করেন তিনি। এছাড়া স্থানীয় ব্যবসায়ীরা তার কাছ থেকে কিনে নিয়ে খুচরা বিক্রি করেন।

সাইদুরের স্ত্রী জাহানারা বেগম বলেন, আগে সংসারে অনেক অভাব ছিল। ধার করে চলতে হতো। ২০ বছর ধরে ফলের ব্যবসা করে ১৮ কাঠা ফসলি জমি বন্ধক ও আড়াই বিঘা জমি বর্গাচাষ করছেন। বাড়িতে নির্মাণ করেছেন টিনের ছাউনি দিয়ে ইটের দুটি ঘর। মেয়ে সুমাইয়াকে এসএসসি পাস করিয়েছেন। আলস্নাহ তাদের দিকে মুখ তুলে দেখেছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<117416 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1