কটিয়াদীতে ট্রিপল মার্ডার

হত্যার দায় স্বীকার ছোট ভাই দ্বীন ইসলামের

প্রকাশ | ০১ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০

কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে নিখোঁজের একদিন পর মাটিচাপা দেওয়া স্বামী-স্ত্রী ও শিশুপুত্রের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বাড়ির পাশ থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতের ছোট ভাই দ্বীন ইসলাম পুলিশের কাছে তিনজনকে একাই হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে। উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের জামষাইট গ্রামের কান্দাপাড়া এলাকায় এই লোমহর্ষক ঘটনাটি ঘটেছে। ট্রিপল মার্ডারের ঘটনায় নিহত আসাদুজ্জামানের বড় ছেলে তোফাজ্জল হোসেন বাদী হয়ে ৯ জনকে আসামি করে কটিয়াদী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। শনিবার এই মামলায় গ্রেপ্তারকৃত চারজনকে কিশোরগঞ্জ জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তারা হলো নিহত আসাদুজ্জামানের ছোট ভাই দ্বীন ইসলাম (৪০), বোন নাজমা বেগম (৩৫), মা কেওয়া খাতুন (৬৫) ও বোনের ছেলে আল আমিন (৩৫)। জিজ্ঞাসাবাদের সময় দ্বীন ইসলাম পুলিশকে জানায়, জমিজমা ও পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে তিনি একাই তিনজনকে হত্যা করেছে। বুধবার রাত ১টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় শাবল দিয়ে বড় ভাই আসাদকে হত্যা করার পর ভাবী পারভীন আক্তার ও ভাতিজা লিওনকে হত্যা করে। ঘরের পাশেই একটি গর্ত খুঁড়ে প্রথমে গর্তে ভাই আসাদুজ্জামান ও ভাবী এবং ভাতিজাকে রেখে মাটিচাপা দিয়ে রাখে। নির্মম এই হত্যাকান্ডটি সে একাই ঘটিয়েছে বলে দায় স্বীকার করলেও পুলিশ অধিকতর তদন্তের স্বার্থে অন্যদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং তদন্ত অব্যাহত রেখেছে। নিহত আসাদুজ্জামানের নিজ বাড়ি সংলগ্ন বাঁশঝাড়ের মাটি খুঁড়ে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনজনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। জানা গেছে, বুধবার রাত থেকে ওই গ্রামের আসাদুজ্জামান (৫০), তার স্ত্রী পারভীন আক্তার (৪০) ও শিশুপুত্র লিয়ন (১২) বাড়ি থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন। রাতেই নিখোঁজ দম্পতির মেজো ছেলে মোফাজ্জল এ ঘটনা কটিয়াদী মডেল থানা পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে বাড়ি ফিরে সন্ধ্যার পর ওই বাঁশঝাড়ের কাছে নতুন মাটি দেখে সন্দেহ হয় আসাদুজ্জামানের বড় ছেলে তোফাজ্জলের। আর সেখানে একটু মাটি খুঁড়তেই মা-বাবার সঙ্গে নিখোঁজ শিশু লিয়নের হাত বেরিয়ে আসে। খবর পেয়ে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। এ সময় মাটি খুঁড়ে একই গর্ত থেকে নিখোঁজ মা-বাবা ও শিশুসন্তানের মরদেহ উদ্বার করে পুলিশ। কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ জানান, ঘটনার প্রকৃতি দেখে মনে হয়েছে, পূর্ব পারিবারিক বিরোধের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। দ্রম্নততম সময়ের মধ্যে এই হত্যাকান্ডের রহস্য উদ্ঘাটন করা সম্ভব হবে বলেও আশা করেন পুলিশ সুপার। কটিয়াদী মডেল থানার ওসি এমএ জলিল জানান, নিহতের বড় ছেলে তোফাজ্জল হোসেন বাদী হয়ে ৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে তাদের কিশোরগঞ্জ জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।