মোহাম্মদপুরের বিহারিপট্টিতে ভয়াবহ আগুন

সাততলা বস্তির আগুনে ৭০ ঘরের সঙ্গে পুড়ল রকিবও

প্রকাশ | ২৫ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০

ম যাযাদি রিপোর্ট
ধ্বংসস্তুপ থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র খুঁজছেন ক্ষতিগ্রস্ত এক নারী -যাযাদি
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাবর রোডের বিহারিপট্টিতে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে পুড়ে গেছে ৩০ থেকে ৩৫টি টিনশেড ঘর। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল সোয়া ৪টার দিকে এই আগুন লাগে। ফায়ার ফার্ভিসের ১০টি ইউনিটের চেষ্টায় বিকাল ৫টার দিকে তা নিয়ন্ত্রণে আসে। মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক দুলাল হোসেন জানান, জহুরি মহলস্নার ওই পট্টিতে প্রায় ৪০টি বস্তিঘর রয়েছে। এছাড়া শতাধিক আধাপাকা ঘর রয়েছে। আগুনে ৩০ থেকে ৩৫টি টিনশেড ঘর পুড়ে গেছে। অগ্নিকান্ডে কেউ হতাহত হয়নি। কী করে আগুন লাগল বা কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা তদন্তের পর জানা যাবে বলে জানান ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে কর্তব্যরত কর্মকর্তা মো. রাসেল শিকদার। এদিকে সোমবার মধ্যরাতে রাজধানীর মহাখালীর সাততলা বস্তিতে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় মো. রকিব (১৫) নামের এক কিশোর দগ্ধ হয়েছেন। পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ৬০-৭০টি ঘর। সোমবার রাতেই দগ্ধ কিশোরকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন এবং পস্নাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। আগুনে ওই কিশোরের শরীরের ২৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। দগ্ধ রাকিব জানায়, তার বাবার নাম ইউনুস আলী। গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে। তিনি সাততলা বস্তিতে এক আত্মীয়ের বাসায় থেকে ট্রাকের লেবার হিসেবে কাজ করতেন। সোমবার রাতের খাবার খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। এর কিছু সময় পরই ঘুমন্ত অবস্থায় শরীরে আগুনের তাপ অনুভব করেন তিনি। তাকিয়ে দেখেন চারদিকে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। ঘর থেকে দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে আসার আগেই তার হাত, পা ও বুক আগুনে পুড়ে যায়। প্রসঙ্গত, সোমবার রাত ১১টা ৪৭ মিনিটে মহাখালীর সাততলা বস্তিতে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট। প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয় বলে জানান ফায়ার সার্ভিস কন্ট্রোলরুমের ডিউটি অফিসার এরশাদ হোসেন। আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত জাহাঙ্গীর আলম জানান, তার গ্রামের বাড়ি পিরোজপুর। বিয়ের পর সংসারের অভাব-অনটনের কারণে স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় চলে আসেন তিনি। ঢাকায় এসে প্রথমে ওঠেন মহাখালীর কড়াইল বস্তিতে। একমাস পরে বস্তির পাশেই সাততলা বস্তিতে একটি দোকান দেন। ১ হাজার টাকার পুঁজিতে হাঁড়ি-পাতিলের দোকান গত ১২ বছরে প্রায় ১৫ লাখ টাকায় দাঁড়ায়। এক যুগের তিলে তিলে গড়া সেই দোকার সোমবার রাতে এক ঘণ্টার আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুনে দোকান পুড়ে যাওয়ার পর তার স্ত্রী জুলেখা বারবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলছেন। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিলস্নুর রহমান জানান, আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ১১টা ৫০ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। তবে সরু পথ ও পানির উৎসের অপ্রতুলতার কারণে তাদের বেগ পেতে হয়েছে।