স্থপতি ইনস্টিটিউটের সংবাদ সম্মেলন খসড়া ড্যাপে শুভঙ্করের ফাঁকি

প্রকাশ | ২৫ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০

ম যাযাদি রিপোর্ট
কার্যকর ড্যাপ প্রণয়নে সরকারের কাছে পাঁচ দফা সুপারিশ তুলে ধরেছে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব আর্কিটেক্ট (আইএবি)। তারা বলছে, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সংশোধিত বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার (ড্যাপ) খসড়ায় শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইএবি'র কার্যালয়ে 'ঢাকা মহানগর বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ): প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি' শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি স্থপতি জালাল আহমেদ মঙ্গলবার এ কথা বলেন। আইএবি'র সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে, খসড়া ড্যাপ বিষয়ে সমস্ত পেশাজীবীদের নিয়ে ওয়ার্কশপের আয়োজন করে মতামত গ্রহণ করে খসড়া ড্যাপ সংশোধন করা। এছাড়া ড্যাপ, ডিএমডিপি ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালার ত্রম্নটি-বিচু্যতি বিশ্লেষণ করে ড্যাপ প্রণয়ন করা, সহজবোধ্য করে ড্যাপ জনগণের সামনে উপস্থাপন করা, খসড়া ড্যাপ প্রণয়নের সময় পাঁচ বছর ধরা হলেও দেড় থেকে দুই বছর এ পরিকল্পনা প্রণয়নে কাজ হয়েছে। এজন্য প্রয়োজন সময় ও ব্যয় বাড়িয়ে খসড়া ড্যাপকে যুগোপযোগী করতে হবে। এক্ষেত্রে প্রযুক্তির প্রয়াস সমৃদ্ধ ত্রিমাত্রিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করা। স্থপতি ইকবাল হাবিবের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন, স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি স্থপতি জালাল আহমেদ। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন, স্থপতি কাজী গোলাম নাসির, স্থপতি ও বুয়েটের অধ্যাপক ফরিদা নিলুফার, স্থপতি ইশতিয়াক জহির, স্থপতি মেরিনা তাবাসসুম, স্থপতি ড. আবু সাঈদ এম আহমেদ, স্থপতি এহসান খান প্রমুখ।     সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ড্যাপের খসড়া প্রস্তাবনার মধ্যে অসংলগ্ন তথ্যের সন্নিবেশ ঘটানো হয়েছে। স্কুলভিত্তিক, খালভিত্তিক উন্নয়নের কথা বলা হলেও সেটা কিভাবে করা হবে, সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। ত্রি-মাত্রিক মডেল ব্যবহার করে নগর পরিকল্পনা করা না হলে এর কোনো সমাধান মিলবে না। খসড়া ড্যাপে দরিদ্র মানুষের জন্য আবাসন করা যেতে পারে এমন প্রস্তাবনা রাখা হয়েছে। কিন্তু, কিভাবে সেটা করা হবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য নেই। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলা হয়, ড্যাপের খসড়ায় মিথ্যাচার করা হয়েছে। ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ২০০৮ এর কারণে শহরের সবুজের আধিক্য ও উন্মুক্ত স্থান বেড়েছে। ভবনে পার্কিং সুবিধার সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু, ড্যাপের খসড়ায় বলা হয়েছে, ইমারত নির্মাণ বিধিমালার কারণে শহরের জনঘনত্ব বেড়েছে। ২০১০ সালের ড্যাপে জনঘনত্ব নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা ছিল না, সে কারণে তার বাস্তবায়নও হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, উঁচু ভবন মানেই জনঘনত্ব না। খসড়া ড্যাপ এক চোখা পরিকল্পনা। এ ড্যাপে প্রতিবন্ধীদের সুবিধার ব্যাপারে একটি লাইনও বলা হয়নি। বিভিন্ন পেশাজীবীসহ শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে আলোচনা করা হলেও সেসব ড্যাপে গুরুত্ব দেয়া হয়নি। এছাড়া ঐতিহ্য রক্ষার ব্যাপারে খসড়া ড্যাপে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে জানানো হয়, ড্যাপের পরিকল্পনায় মূলত: বিনিয়োগ, জীবনমান উন্নয়ন, সহনশীল উন্নয়ন এবং বাসস্থানের ব্যাপারে আলোচনা করা হয়েছে। এ ড্যাপে নতুন কিছু বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হলেও সেসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়নি।