সাক্ষাৎকার

পরিচ্ছন্ন পৌরসভা তৈরি করা আমার মূল লক্ষ্য

মেয়র আব্দুর রশিদ খাঁন, মহেশপুর পৌরসভা

প্রকাশ | ০২ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০

অনলাইন ডেস্ক
আব্দুর রশিদ খাঁন
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত ঝিনাইদহ জেলা। এ জেলার একেবারে ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা উপজেলা মহেশপুর। ১৮৬৯ সালে কপোতাক্ষ নদের তীরে প্রতিষ্ঠিত হয় মহেশপুর পৌরসভা বা টাউন কমিটি। প্রথম ইংরেজ মেয়র পিবি মার্টিনের হাত ধরে শুরু হয় ঐতিহ্যবাহী এ পৌরসভা বা টাউন কমিটির কার্যক্রম। বর্তমানে ২৪তম মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী আব্দুর রশিদ খাঁন। ১৯৫২ সালে আব্দুর রশিদের দাদা শাহজাহান আলী খাঁন ১১তম মেয়র হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। এরপর চাচা শামছুল হুদা খাঁন তিনবার এবং চাচাতো ভাই শফিকুল আজম খাঁন দুইবার এ পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হন। এ পৌরসভার উন্নয়ন আর অগ্রগতি নিয়ে যায়যায়দিনের কালিগঞ্জ (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি তারেক মাহমুদের সঙ্গে কথা বলেছেন পৌর মেয়র আব্দুর রশিদ খাঁন। যায়যায়দিন : মেয়র নির্বাচিত হওয়ার আগে অন্য কোনো নির্বাচন করেছেন কি? আব্দুর রশিদ খাঁন : ২০১১ সালে মহেশপুর পৌরসভায় মেয়র পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। সেবার ২৩২ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হই। ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে প্রায় সাত হাজার ভোটের ব্যবধানে মেয়র নির্বাচিত হই। যাযাদি : কখন থেকে রাজনীতিতে প্রবেশ করেছেন? রশিদ খাঁন : পারিবারিকভাবে আমি আওয়ামী লীগের আদর্শে বড় হয়েছি। ১৯৭৯ সালে ঝিনাইদহ কেসি কলেজে পড়ার সময় ছাত্রলীগের রাজনীতিতে হাতেখড়ি। এরপর ৯০ দশক থেকে মহেশপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি সম্পাদক ও মহেশপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। যাযাদি : মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর উলেস্নখযোগ্য কী কী উন্নয়ন করেছেন? রশিদ খাঁন : ড্রেন, রাস্তা, স্যানিটেশন, বিশুদ্ধ পানির লাইনসহ আর্সেনিক ও আয়রন রিমু্যভাল পানির পস্ন্যান্ট, সোলার স্ট্রিট লাইট, মাছ বাজার স্থাপনসহ প্রায় ৩১ কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করেছি। এর মধ্যে পৌরসভার নিজস্ব অর্থায়নে ২৮ কোটি ৭১ লাখ এবং এডিপি'র অর্থায়নে এক কোটি ৯০ লাখ টাকার উন্নয়ন কাজ করা হয়। যাযাদি : বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে ২৫ পৌরসভার তফশীল ঘোষণা করেছে। ধাপে ধাপে মেয়াদ উত্তীর্ণ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আপনি কি আবারও নির্বাচন করবেন? রশিদ খাঁন : আমি বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করছি। আসন্ন নির্বাচনে দল মনোনয়ন দিলে অবশ্যই নির্বাচন করব। তাছাড়া এ পৌরসভা এলাকাটি বিএনপি ও জামায়াত অধু্যষিত। এবার নির্বাচনে জামায়াতের কোনো প্রার্থী থাকবে না। যে কারণে নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী থাকলে জামায়াতের সমর্থকরা তাকে ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে ভালো প্রার্থী না হলে পৌরসভার নাগরিকরা যথাযথ সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যাযাদি : আপনি নিজেকে যোগ্য প্রার্থী মনে করেন কি? রশিদ খাঁন : অবশ্যই, যোগ্য বলেই দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছিল। আমি নির্বাচনে জয়ী হয়ে নাগরিকদের সেবা প্রদানের মধ্য দিয়ে যোগ্যতার সে প্রমাণও দিয়েছি। যাযাদি : আবারও নির্বাচিত হলে পৌরসভার উন্নয়নে আপনার পরিকল্পনা কি? কোন কোন কাজে অগ্রাধিকার দেবেন? রশিদ খাঁন : ঘণ্টায় ১ লাখ ৮০ হাজার লিটার পানি সরবরাহের ক্ষমতা সম্পন্ন আর্সেনিক ও আয়রন রিমোভাল বিশুদ্ধ পানির পস্ন্যান্ট স্থাপন করার কাজ চলছে। পস্ন্যান্ট থেকে তিন হাজার পরিবারকে বিশুদ্ধ পানি পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছি। জলাবদ্ধতা নিরসন ও ময়লা অপসারণে সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা হবে। যাযাদি : করোনাকালীন কী কী কাজ করেছেন? রশিদ খাঁন : করোনা সংক্রমণের শুরুতেই পৌর এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিটি করা হয়। কমিটির সদস্যরা এ পর্যন্ত পৌর এলাকার ৫০ মসজিদে মাস্ক বিতরণ করেছে। পৌর এলাকার লকডাউন করা ৩৩ জনের বাড়িতে খাবার ও ওষুধসহ প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। এছাড়া ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কর্মহীনদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়। যাযাদি : পৌরবাসীর জন্য ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী? আব্দুর রশিদ খাঁন : সুন্দর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন মহেশপুর পৌরসভা গড়ে তোলা। এছাড়া পৌরবাসীর চিত্তবিনোদনের জন্য একটি আধুনিক পার্ক তৈরি করার পরিকল্পনা রয়েছে।