কারাগারে আদালত কাক্সিক্ষত নয়: মন্তব্য ড. কামালের

প্রকাশ | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
বৃহস্পতিবার সুপ্রিমকোটের্র শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে আইনজীবী সমিতি আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বক্তৃতা করেন ড. কামাল হোসেন। পাশে সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন Ñযাযাদি
কারাগারে আদালত কাক্সিক্ষত নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট আইনজীবী ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেন, কোন কারণে জেলের ভেতর এত নাটক করা হচ্ছে? বেসামরিক সময়ের তথাকথিত কারাগারের আদালত এখন কাক্সিক্ষত নয়। সামরিক সময়ে কনের্ল তাহেরের বিচারালয় কারাগারের ভেতর স্থাপনও মানুষ ভালো চোখে দেখেনি। বৃহস্পতিবার দুপুরে সুপ্রিমকোটর্ আইনজীবী সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে আইনজীবী সমিতি আয়োজিত এক মতবিনিময়সভায় তিনি একথা বলেন। অনুষ্ঠানে সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনের সভাপতিত্বে বিএনপি নেতা ও আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বক্তব্য রাখেন। তিনি বলেন, সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে যারা অপমানিত করেছেন, তারা অসভ্য। তাদের বিচার একদিন হবেই। দুদকের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুনীির্ত মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনকে গত ৮ ফেব্রæয়ারি পঁাচ বছরের কারাদÐ দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক ড. আখতারুজ্জামান। রায়ের পর খালেদা জিয়াকে রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়েছে। অন্যদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টে দুনীির্তর অভিযোগে দুদকের করা আরও এক মামলা তার বিরুদ্ধে বিচারাধীন। সেই মামলার কাযর্ক্রম পরিচালনার জন্য নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্থায়ী আদালত বসানোর বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এরপর থেকে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্থায়ী আদালতে এ মামলার কাযর্ক্রম চলছে। নিবার্চনকালীন সবর্দলীয় ঐক্যে জামায়াতে ইসলামী থাকছে না বলেও স্পষ্ট করে জানিয়েছেন ড. কামাল হোসেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. কামাল হোসেন বলেন, সবর্দলীয় ঐক্যে জামায়াতকে নেয়া হবে না। এককথায় উত্তর ‘না’। সাংবাদিকদের প্রশ্নটি ছিল, ‘আগামী সংসদ নিবার্চনকে ঘিরে যে সবর্দলীয় ঐক্যের ডাক দেয়া হয়েছে সেখানে দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামী থাকছে কিনা স্পষ্ট করুন।’ ড. কামাল বলেন, জামায়াত দল হিসেবে স্বাধীনতাবিরোধী কাজ করেছে। দল হিসেবে করেছে, এটা তো বলা যায় না যে ব্যক্তি হিসেবে করেছে। জামায়াত নিয়ে তিনি যতদূর জানেন, ওই দল থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কেউ ছিলেন কিনা, তা জানতে পারলে তাদের কাজে লাগবে। সম্প্রতি সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী তার সম্পকের্ বলেছেন, ‘দেশের ক্রান্তিলগ্নে আপনাকে পাওয়া যায় না, আপনি বিমানের টিকিট কেটে রাখেন, ক্রান্তিলগ্নে আপনি তখন দেশের বাইরে চলে যান।’ প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের জবাবে ড. কামাল বলেন, ‘একটি ব্যাপারে ২০০৭-০৮-এ আমরা যে মামলা করেছিলাম, তাতে এক কোটি ৪০ লাখ ভুয়া ভোটার বাতিল করা হয়েছিল। নিবার্চন কমিশন পুনগর্ঠন করা হয়েছিল। সবোর্পরি ড. ইয়াজউদ্দীন আহমদকে যখন আমরা তত্ত¡াবধায়ক সরকারপ্রধান থেকে সরালাম, তখন আমাদের চারজনের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহীর মামলা হলো। এরপর ২০১০ সালে সে মামলা থেকে আমরা মুক্ত হলাম। তখন তো আমরা দেশ ছেড়ে চলে যাইনি। ২০০৮ এর নিবার্চন হতো না। আর হলেও এই ফলাফলও হতো না, যদি না এক কোটি ৪০ লাখ ভুয়া ভোটার বাতিল করা না হতো। তিনি বলেন, বতর্মান প্রধানমন্ত্রী অবাধ ও সুষ্ঠু নিবার্চনের জন্য ২০০৭ সালে ২৩টি শতর্ দিয়েছিলেন। ওই শতর্গুলো এখনো প্রযোজ্য হতো, যদি তিনি বতর্মানে বিরোধী দলে থাকতেন। বিরোধী দলে থেকে যখন শতর্গুলো সমথর্ন করেছিলেন, আশা করেন, সরকারে থেকেও তিনি সমথর্ন করবেন। সংবিধানের আরও কিছু সংশোধনী দরকার ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘সংবিধানের ৪৬ বছর পরে নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারেন সংবিধানের আরও কিছু সংশোধনী করা দরকার। এর মধ্যে কিছু ঘাটতি আছে, সেগুলো কীভাবে পুনরুদ্ধার করা যায়, সেগুলো লিখিত আকারে একত্রিত করে, একটি কমিটি করে যেগুলো বিবেচনাযোগ্য, সেগুলো তুলে ধরা যায়। এই সংশোধনের লক্ষ্যে একটি কমিশন গঠন করাও যেতে পারে। সরকারই এই কমিটি গঠন করতে পারে। আর সরকার না পারলে তারা কমিশন গঠন করতে পারেন।