বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

আ'লীগ নেতা ফারুক হত্যা ৬ বছর পলাতক থেকে আত্মসমর্পণ মুক্তির

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি
  ০৩ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০
সহিদুর রহমান খান মুক্তি

টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমদ হত্যা মামলায় ছয় বছর পলাতক থাকার পর সাবেক পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি বুধবার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। পরে টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সিকান্দার জুলকার নাঈম জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

এর আগে মুক্তি তার বাবা টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খান ও ভাই সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানার সঙ্গে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে প্রবেশ করেন। আদালতে আত্মসমর্পণ করে তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন প্রার্থনা করেন। রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি মনিরুল ইসলাম খান এবং বাদী পক্ষের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম জামিনের বিরোধিতা করেন।

এ সময় আদালতে উপস্থিত হয়ে নিহত ফারুক আহমদের স্ত্রী ও মামলার বাদী নাহার আহমদ ন্যায়বিচারের স্বার্থে সহিদুর রহমান খান মুক্তিকে জামিন না দেওয়ার জন্য আদালতের প্রতি অনুরোধ জানান। শুনানি শেষে বিচারক সিকান্দার জুলকার নাঈম ৩টার দিকে জামিন নামঞ্জুর করে মুক্তিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আদালত সূত্র জানায়, সর্বশেষ গত ৫ মার্চ এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। তারপর করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে দীর্ঘ প্রায় ছয় মাস পর গত ২৪ সেপ্টেম্বর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুন নাহারের সাক্ষী গ্রহণ করা হয়। চাঞ্চল্যকর এ মামলায় এ পর্যন্ত ২৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।

দলীয় সূত্রগুলোর মতে, আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে সহিদুর রহমান খান মুক্তি আবার সক্রিয় হয়েছেন। তাঁর অনুসারীরা টাঙ্গাইলে তৎপরতা শুরু করেছেন। আগামী নির্বাচনে তিনি দলীয় মনোনয়ন চাইবেন এজন্য তিনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি রাতে টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের নেতা ফারুক আহমদের গুলিবিদ্ধ লাশ তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার ৩ দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা দায়ের করেন। পরে গোয়েন্দা পুলিশ আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামে দুইজনকে ২০১৪ সালে গ্রেপ্তার করে। ওই দুই আসামির জবানবন্দিতে এই হত্যার সাথে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা এবং তার অপর তিন ভাই পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি বের হয় এলেই আমানুর রহমান খান রানা ও তার ভাইয়েরা আত্মগোপনে চলে যান। দীর্ঘ ২২ মাস পলাতক থাকার পর আমানুর রহমান খান রানা আদালত আত্মসমর্পণ করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগার পাঠানোর আদেশ দেন। প্রায় দুই বছর হাজতে থাকার পর তিনি জামিন মুক্ত হন। বুধবার এক ভাই সহিদুর রহমান খান মুক্তি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তার অপর দুই ভাই জাহিদুর রহমান খান কাকন ও সানিয়াত খান বাপ্পা এখনো পলাতক রয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে