চুক্তিতে গাড়ি চালানো বন্ধ না হলে সড়কে শৃঙ্খলা অসম্ভব পরিবহন মালিকদের সভায় অভিমত

প্রকাশ | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০ | আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:১৯

যাযাদি রিপোটর্
পাল্লা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে ট্রিপ বাড়নো যায় না। অথচ চুক্তিতে গাড়ি চালানোর জন্যই বাসে বাসে এমন রেষারেষি চলছে। তাই এ পদ্ধতি বাতিল করা না গেলে এ ধরনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা বন্ধ করা সম্ভব হবে না। সড়কের শৃঙ্খলাও ফিরবে না। সোমবার বিকালে মহানগর নাট্যমঞ্চে ঢাকা মহানগরীতে সুশৃঙ্খলভাবে গণপরিবহন পরিচালনার লক্ষ্যে ঢাকা পরিবহন মালিক সমিতির বিশেষ সাধারণ সভায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার এনায়েত উল্যাহ এ সব কথা বলেন। তিনি এ সময় চুক্তিতে গাড়ি না চালানোর জন্য ঢাকায় চলাচলরত বিভিন্ন পরিবহনের প্রায় দুই হাজার মালিককে শপথ পাঠ করান। উপস্থিত বাস মালিকরা হাত তুলে একসঙ্গে বলেন, ‘এই সভায় আমরা প্রতিজ্ঞা করছি, চুক্তিতে আর গাড়ি চালাবো না’। সভাপতির বক্তব্যে খন্দকার এনায়েত উল্যাহ বলেন, সড়কে অনেক পরিবহন চলে। কখনো রিকশা-রিকশা বা প্রাইভেটকারে-প্রাইভেটকারে রেষারেষি হতে দেখা যায় না। কিন্তু বাসে বাসে কেন রেষারেষি হচ্ছে। এর জন্য মালিকরাই দায়ী। বিগত কয়েকদিন নিজে উপস্থিত থেকে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় চুক্তিতে গাড়ি চালাতে দেখেছেন। এ জন্য ৫টি কোম্পানির কাযর্ক্রম স্থগিত করেছেন। এরপর থেকে চুক্তিতে কোনো গাড়ি চলতে পারবে না। চালকদের নিয়োগপত্র দিয়ে ট্রিপ সিস্টেম বা মাসিক বেতন দিতেও সবাই রাজি। কিন্তু সমস্যা হলোÑ চালকরা এক গাড়িতে বেশিদিন থাকেন না। পরিবহন মালিক-শ্রমিক সংগঠনের নেতারা মিলে চারভাগে নগরীর সড়ক পযের্বক্ষণ করা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, পযের্বক্ষণের সময় ছোট বাচ্চার হতেও লাইসেন্স দেখেছেন। দাড়ি গোফ উঠেনি অথচ বড় বাস চালাচ্ছে। অনেক চালক নেশা করে। তাই মালিকদের এ সব বিষয়ে সচেতন হতে হবে। নিজের গাড়ির তদারকি নিজেকেই করতে হবে। ট্রাফিক পুলিশের মামলা দেয়ার বিষয়ে বাস মালিকদের বিভিন্ন অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গাড়ির ফিটনেস ঠিক করুন, ৫টি কাগজ নিশ্চিত করুন, চালকের লাইসেন্স নিশ্চিত করুন। এরপর মামলা দিলে আমি দেখব।’ সভায় উপস্থিত বাস মালিক ও বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিরা অভিযোগ করে বলেন, ট্রাফিক পুলিশ একচেটিয়াভাবে মামলা দিয়ে দিচ্ছে। গাড়ির সামনে দিয়ে মানুষ চলাচল করে, পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয় না। ঢাকায় গাড়ি দঁাড় করানোর কোনো জায়গা নেই। অথচ রং পাকির্ং বলে মামলা দিয়ে দিচ্ছে। তাছাড়া দক্ষচালক না থাকায় সড়কে শৃঙ্খলা আসছে না বলেও মত দেন তারা। স্কাইলাইন পরিবহনের মালিক মাসুদ আহমেদ বলেন, ‘কে কয়টা মামলা দিবে তা ট্রাফিক পুলিশকে নিধাির্রত করে দেয়া হয়। রাস্তার অবস্থা খুবই নাজুক। হাল চাষ করা রাস্তায় আমেরিকার গাড়ি চালাবো কিভাবে?’ বিকাশ পরিবহনের মালিক আনিসুর রহমান খান বলেন, টাকার বিনিময়ে রুট পারমিট নিতে হয়। সেখানে ভাড়া কমাবো কিভাবে। যাত্রী উঠানো বা নামানোর কোনো জায়গা নেই। যাত্রী উঠাতে বা নামাতে গেলেই সাজের্ন্ট মামলা দিয়ে দেয়। সভায় বাংলাদেশ পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি সাদিকুর রহমান হিরু, সায়দাবাদ টামির্নাল বাস মালিক সমিতির সভাপতি সাইদুল ইসলাম, মহাখালী টামির্নাল বাস মালিক সমিতির সভাপতি হাজী আবুল কালাম, সায়দাবাদ বাস-ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ নয়নসহ পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা বক্তব্য রাখেন।