এলপিজির দাম মাসে মাসে নির্ধারণের প্রস্তাব

প্রকাশ | ১৫ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট
দেশের বাজারে এলপিজির দাম মাসে মাসে নির্ধারণ করার সুযোগ তৈরির সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের কারিগরি কমিটি। বৃহস্পতিবার ঢাকার বিয়াম মিলনায়তনে প্রথমবারের মতো এলপিজির মূল্যহার নির্ধারণ ও দামে শৃঙ্খলা আনতে আয়োজন করা শুনানিতে এই প্রস্তাব করা হয়। এ সময় বিষয়টির আইন ও নীতিগত ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ক্যাব। প্রতিষ্ঠানটির জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, মাসে মাসে মূল্যবৃদ্ধির এই প্রস্তাব বিইআরসি আইনের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন। যদিও এ নিয়ে কারিগরি কমিটি কিংবা শুনানি পরিচালনাকারী বিইআরসির শীর্ষ ব্যক্তিরা তখন কোনো বক্তব্য দেননি। ক্যাব জ্বালানি উপদেষ্টা শুনানিতে বলেন, সম্প্রতি সংসদে আইন করে বছরে একাধিকবার জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির যে সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে তাও এভাবে নিশ্চিতভাবে মাসে মাসে মূল্যবৃদ্ধির উদ্যোগকে সমর্থন করে না। তাই কমিশন এ ধরনের চিন্তা পুনঃবিবেচনা করবে বলে আশা করি। আদালতের আদেশ পালন করা মানে এমন একটি সিদ্ধান্তে আসা নয়। মূল্যহার নির্ধারণের প্রস্তাবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এলপিজিএল সাড়ে ১২ কেজির দাম ৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭০০ টাকা প্রস্তাব করে। বিইআরসির কারিগরি কমিটি সারাদেশে একই মূল্যে বিক্রির সুবিধায় এর সঙ্গে ক্রস সাবসিডি ফান্ডের অর্থ যোগ করে ৯০২ টাকা করার প্রস্তাব হ পৃষ্ঠা ১৫ কলাম ১ করে। তবে সাবসিডি বাবদ ৩৩৩ টাকা যোগ করা না হলে দাম দাঁড়ায় ৫৬৯ টাকা। ক্যাবের জেরার জবাবে সাবসিডি বাবদ ওই অর্থ যোগ করার প্রয়োজন নেই বলে জানান এলপিজিএল'র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুর রহমান খান। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সম্মিলিত প্রস্তাবে বর্তমানে প্রতি কেজি ১০৪ টাকা ৯৩ পয়সা হিসেবে বিক্রি হচ্ছে বলে উলেস্নখ করে। বিইআরসি এই মূল্য ৭২ টাকা ২৪ পয়সা সুপারিশ করে। এছাড়া ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডার খুচরা পর্যায়ে ১২৫৯ টাকা করার প্রস্তাব করে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যা কারিগরি কমিটির বিবেচনায় ৮৬৬ টাকা হতে পারে বলে মত দিয়েছে। এছাড়া ৩৫ কেজির সিলিন্ডারের দাম ২৫২৫ টাকা, ৪৫ কেজি সিলিন্ডারের দাম ৩২৪৬ টাকা করার প্রস্তাব করে কারিগরি কমিটি। কমিটির ভাষ্য, সৌদি আরামকো কোম্পানির সিপি প্রতি টন ৫৩৮ ডলার বিবেচনায় নিলে ১২ কেজি সিলিন্ডারের দাম দাঁড়ায় ৯৫৪ টাকা, আর বর্তমান ৩৫৬ ডলার বিবেচনায় নিলে দাম দাঁড়ায় ৭৫৮ টাকা। সিপিবির প্রতিনিধি রুহিন হোসেন প্রিন্স শুনানিতে বলেন, রাষ্ট্রীয় খাতের উন্নয়ন না করে তাদের পণ্যের দাম এমন পর্যায়ে নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে, যাতে করে রাষ্ট্রীয় খাত ধ্বংস হয়, ব্যবসায়ীদের সুবিধা হয়। রাষ্ট্রীয় সুলভ মূল্যের গ্যাস সেনাবাহিনীকে দেওয়ার পর যা থাকে, তা পরিকল্পিতভাবে দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মধ্যে বণ্টন করা যেতে পারে। গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, এনার্জি কমিশনের যে নিজস্ব ক্ষমতা রয়েছে তার প্রয়োগ না ঘটার কারণে ভোক্তাদের তাদের দাবি আদায়ে আদালতের দ্বারস্থ হতে হয়। আশা করব, এই শুনানিতে সব পক্ষের স্বার্থ রক্ষা করা হবে। বিইআরসির চেয়ারম্যান ও সদস্যরা শুনানি পরিচালনা করেন। লাইসেন্সধারী বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ওমেরা গ্যাসের সিইও শামসুল হক আহমেদ, বেক্সিমকো এলপিজির সিএফও মুনতাসির আলম, বসুন্ধরা এলপিজির প্রতিনিধি জাকারিয়া জালাল শুনানিতে অংশ নেন।