মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১
বাজার-সদাই

চিনিসহ পাঁচ পণ্যের দাম বাড়তি

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৬ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০
দাম বাড়তি পাইজম ৫৬, নাজিরশাইল ৬৩ মিনিকেট ৬০ টাকা

চাল ও তেলের পর এবার বাজারে বেড়েছে চিনির দাম। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে কোম্পানিগুলো চিনির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি আদা, রসুন ও হলুদের দামও বেড়েছে।

চিনি :পাইকারি বাজারে গতকাল শুক্রবার চিনির দাম ছিল প্রতি কেজি ৬২ টাকার কিছু বেশি। দুই মাস আগেও তা ৫২ টাকার আশপাশে ছিল। ব্যবসায়ীরা বলছেন, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি খোলা চিনির দাম ৪৫ টাকা থেকে বেড়ে ৬৬ থেকে ৬৮ টাকায় দাঁড়িয়েছে।

ভোজ্যতেল :সপ্তাহের ব্যবধানে আরেক দফা বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বলছে, সাতদিনের ব্যবধানে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিনের দাম বেড়েছে ৫ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ। পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিনের দাম বেড়েছে ২ দশমিক ৬৮ শতাংশ। পাশাপাশি পাম অয়েল প্রতি লিটারে দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ২১ শতাংশ।

গতকাল রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি খোলা সয়াবিন ১২০-১২৫ টাকা, পাম তেল ১১০-১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেলের প্রতি লিটারের দাম ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। আর পাঁচ লিটারের এক বোতল তেল বাজারভেদে ৫৭০-৫৮০ থেকে ৬০০ টাকা দরে বিক্রি করেন খুচরা বিক্রেতারা।

মিরপুর শাহ আলী মার্কেটের ব্যবসায়ী ইমদাদ হোসেন যায়যায়দিনকে বলেন, তেলের বোতলের গায়ে লেখা সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) ৬১৫ থেকে ৬২৫ টাকা। বড় বাজারে বিক্রেতারা কমিয়ে বিক্রি করেন। পাড়ামহলস্নায় এ ছাড় পাওয়া যায় না।

আদা রসুন ও হলুদ : এছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে টিসিবির হিসাবে প্রতি কেজি দেশি আদার দাম ১০ দশমিক ৫৩ শতাংশ বেড়েছে। আমদানি করা আদা সাতদিনের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। প্রতি কেজি দেশি রসুন ৫ দশমিক ৫৬ এবং আমদানি করা রসুনের দাম বেড়েছে ১০ শতাংশ। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি দেশি হলুদের দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ৫৬ শতাংশ। গতকাল প্রতি কেজি দেশি আদা বিক্রি হয়েছে ১১০-১১৫ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ১০০-১১০ টাকা। গতকাল প্রতি কেজি দেশি

হলুদ বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ২৪০ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ২৩০ টাকা। প্রতি কেজি রসুন বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১২০ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ১১০ টাকা।

চালের দাম :অন্যদিকে চালের সরবরাহ বাড়ায় দাম কিছুটা কমেছে। তবে এখনও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব চাল। খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি কেজি বিআর-২৮ ও পাইজাম চাল বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ৫৬ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ৫৮ টাকা। মোটা চালের মধ্যে প্রতি কেজি স্বর্ণা জাতের চাল বিক্রি হয়েছে ৪৮ টাকা, যা সাতদিন আগে বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা।

রাজধানীর মালিবাগ কাঁচাবাজারের খালেক রাইস এজেন্সির মালিক ও খুচরা চাল বিক্রেতা দিদার হোসেন বলেন, সরবরাহ বাড়ায় চালের দাম কিছুটা কমতে শুরু করেছে। কিন্তু এখনো মিলপর্যায়ে বাড়তি দরে চাল বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে পাইকারি ও খুচরা বাজারে চালের দর বাড়তি।

সবজির বাজার : বাজারে ভালো মানের নতুন আলু ও পাকা টমেটোর সরবরাহ বাড়ায় এ দুটি পণ্যের দাম কমেছে। ২০ টাকা কেজি দরেই পাওয়া যাচ্ছে নতুন আলু ও দেশি পাকা টমেটো। ফলে ক্রেতাদের মধ্যে স্বস্তি দেখা দিয়েছে। কারণ বেশিরভাগ সবজি এখন ৩০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। এর সঙ্গে পেঁয়াজের দামও ক্রেতাদের স্বস্তি দিচ্ছে।

বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে এখন সব ধরনের শীতের সবজি ভরপুর। ফুলকপি, বাঁধাকপি, শালগম, মুলা, বেগুন, পাকা টমেটো কোনো কিছুর কমতি নেই। দিন দিন এসব সবজির সরবরাহ বাড়ছে। ফলে দাম কমছে। সামনে দাম আরও কমবে।

শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে ভালো মানের দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা। দুই কেজি নিলে কোনো কোনো বিক্রেতা ৭৫ টাকা রাখছেন। অথচ কিছুদিন আগেই দেশি পেঁয়াজের কেজি ছিল ৭০ টাকা।

এদিকে কিছুদিন আগে ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া নতুন আলু এখন মানভেদে ২০-২৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। সবচেয়ে ভালো মানের নতুন আলু কোনো কোনো বিক্রেতা দুই কেজি ৪৫ টাকায় বিক্রি করছেন।

মালিবাগ হাজীপাড়ার ব্যবসায়ী নূর আলী বলেন, কিছুদিন আগেও এক কেজি নতুন আলু ৫০ টাকা কেজি বিক্রি করেছি। এখন ৪৫ টাকা দিয়ে দুই কেজি আলু পাওয়া যাচ্ছে। এই আলু আগের চেয়ে অনেক বড় এবং মানও ভালো। আগে যে সাইজের আলু ৫০ টাকা কেজি ছিল এখন তা ১৮-২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

আলু-পেঁয়াজের মতো স্বস্তি দিচ্ছে পাকা টমেটো। কিছুদিন আগে পাকা টমেটোর কেজি ছিল ১০০ টাকার ওপরে। এখন তার থেকে ভালো মানের পাকা টমেটো ২০-৩০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে।

স্বস্তি দিচ্ছে অন্যান্য সবজির দামও। শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৪০ টাকা। ফুলকপি ও বাঁধাকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। এছাড়া মুলা ১০ থেকে ১৫ টাকা, গাঁজর ৩০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন ২০ থেকে ৩০ টাকা, উস্তা ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ৪০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে বড় লাউ।

কারওয়ানবাজারে সবজি কিনতে আসা ইদ্রিস আলী বলেন, ফুলকপি ১০ টাকা, বাঁধাকপি ১৫ টাকা, শিম ২০ টাকা, পাকা টমেটো ২০ টাকা। সবজির এমন দাম হবে কিছুদিন আগে ভাবাই যায়নি। বেশিরভাগ সবজির কেজি একশ টাকার কাছাকাছি ছিল। এখন ১০০ টাকা দিয়ে ব্যাগ ভরে বাজার করা যায়।

মালিবাগ হাজীপাড়া থেকে বাজার করা আলেয়া বেগম বলেন, কিছুদিন আগেও এক পোয়া, আধা কেজি করে সবজি কিনতেন। এখন সবজির দাম কমেছে। পছন্দমতো সবজি কিনে তৃপ্তি করে খেতে পাচ্ছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে