শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৯ প্রদান

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক আরও চলচ্চিত্র নির্মাণের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৮ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অনুষ্ঠান উপভোগ করেন -ফোকাস বাংলা

দেশের চলচ্চিত্র শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সম্ভব সবকিছু করার আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিজয়ের ইতিহাসকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য অধিকহারে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে। সঠিক ইতিহাস যাতে সবাই জানতে পারে। কারণ, আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনকারী বীরের জাতি। সেই বিজয়ের ইতিহাস প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন মনে রাখতে পারে, সেই ধরনের চলচ্চিত্র আরও নির্মাণ হওয়া দরকার।

'জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৯' অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তথ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে যুক্ত হন তিনি।

তথ্যমন্ত্রী ডক্টর হাছান মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্য সচিব খাজা মিয়া। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, চিত্রনায়ক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা প্রমুখ বক্তৃতা করেন। গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ডক্টর আহমদ কায়কাউসসহ গণভবন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

২০১৯ সালে ২৬টি ক্যাটাগরিতে ৩৩ জন শিল্পী এবং কলাকুশলীকে পুরস্কৃত করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তথ্য মন্ত্রী ডক্টর হাছান মাহমুদ পুরস্কার বিজয়ীদের মাঝে পদক, রেপিস্নকা, সম্মাননার চেক এবং সনদ বিতরণ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার অপচেষ্টা করা হয়েছে। আমাদের চলচ্চিত্রে শিল্প ও সংস্কৃতি যেমন থাকবে, তেমনি বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য উপকরণও থাকতে হবে। পাশাপাশি সেখানে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিজয়, নীতি-আদর্শ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতিফলন থাকাটা দরকার।

চলচ্চিত্রকে একটি শক্তিশালী গণমাধ্যম আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা রাজনীতিবিদরা যত কথাই বলি না কেন একটি নাটক, সিনেমা বা গান বা কবিতা দিয়ে অনেক কথা বলা যায় এবং মানুষের অন্তরে প্রবেশ করা যায়। মনের গহিনে প্রবেশ করা যায়। সেজন্য এর একটা আবেদন রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম চলচ্চিত্র। অথচ এটি কিন্তু দিনে দিনে শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া, এই ডিজিটাল যুগে, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে না করা হলে এর আকর্ষণ যেমন থাকে না, তেমনি বাজারও পাওয়া যায় না। সেজন্যই বিএফডিসিকে উন্নত করাতে সরকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।

ঢাকার কাছে কালিয়াকৈরের কবিরপুরে 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফিল্ম সিটি' নির্মাণের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়েছে। সেখানে আধুনিক সিনেমা তৈরি করতে যা যা প্রয়োজন সেই ধরনের সব সুবিধা রাখা হচ্ছে। যাতে আমাদের সিনেমা শিল্পটা যেন উপযুক্ত হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি, কেননা, এখন ডিজিটাল যুগ। আমাদের চলচ্চিত্র কেবল দেশে নয় বিদেশেও যাতে যেতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা সেন্সর সংক্রান্ত আইন ও বিধি আধুনিকভাবে তৈরি এবং সেগুলো কঠোরভাবে যেন মানা হয় সেদিকেও বিশেষভাবে দৃষ্টি দিচ্ছি।

শেখ হাসিনা বলেন, ১ হাজার কোটি টাকার একটি ফান্ড আমরা তৈরি করব। যেখান থেকে অল্প সুদে টাকা নিয়ে সংশ্লিষ্টরা সিনেমা হল বা সিনেপেস্নক্স তৈরি করতে পারবে। যাতে ঐ অঞ্চলের মানুষের বিনোদনের ব্যবস্থাটা হবে।

তিনি আরও বলেন, অনেকগুলো সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে। কাজেই সেগুলোকে পুনরায় চালু করা শুধু নয়, এর আধুনিকায়ন করা কারণ ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে এখন অনেক উন্নতমানের সিনেমা তৈরি করা যায়। সেই দিকেই আমরা বিশেষভাবে দৃষ্টি দিচ্ছি এবং সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি।

তেজগাঁও আসনের সংসদ সদস্য থাকার সময় বিএফডিসির সড়কটি নির্মাণ করেন উলেস্নখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর কাছেই থাকা কারওয়ান বাজারের পাইকারি বাজারও ধীরে ধীরে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করবে সরকার। কাছেই থাকা হাতিরঝিলসহ আশপাশের এই এলাকাটাকেও সরকার সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে চায়। এজন্য ৩২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারের বিএফডিসি কমপেস্নক্স নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে