মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখার দাবি

প্রকাশ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
সচিব কমিটির সুপারিশ বাতিল করে সব গ্রেডে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখার দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত সমাবেশে চাকরিতে কোটা সম্পকির্ত সাম্প্রতিক সুপারিশ বাতিল এবং ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহালসহ ৯ দফা দাবি জানানো হয়েছে। সমাবেশে বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী বতর্মান সরকার মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের মযার্দা সমুন্নত রাখার ব্যাপারে আন্তরিক ও সচেতন থাকলেও প্রশাসনের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা একশ্রেণির স্বাধীনতাবিরোধী কমর্কতার্ প্রতিটি পদক্ষেপে মুক্তিযোদ্ধাদের অসম্মান করার ব্যাপারে সচেষ্ট রয়েছে। সাম্প্রতিক সচিব কমিটির সুপারিশ এরই একটি নতুন সংস্করণ। সচিব কমিটির সুপারিশের পর দেশের বিভিন্ন এলাকায় জামায়াত-শিবিরের কমীর্রা মিষ্টি বিতরণ করেছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সাধারণ ছাত্র নামধারী কিছু দিকভ্রান্ত যুবকের দাবি মেনে নিয়ে রাষ্ট্রবিরোধী এই সুপারিশের ফলে স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের দীঘির্দনের আকাক্সক্ষার প্রতিফলন হয়েছে। বক্তারা আরও বলেন, প্রশাসনের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা স্বাধীনতাবিরোধীরা অনেকদিন থেকে এটাই চেয়েছিল মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যরা যাতে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে না পারে। তারা যাতে সারাজীবন পিয়ন, দারোয়ান ও সুইপারের মতো চাকরি করে। জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করে যে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করেছে, সেই বাংলাদেশে মুক্তিযোদ্ধারা তৃতীয় ও চতুথর্ শ্রেণির নাগরিক হয়ে থাকতে পারে না। সচিব কমিটির এই সিদ্ধান্ত সরকারের উন্নয়ন, অগ্রগতি ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশাসন গড়ে তোলার সম্পূণর্ পরিপন্থি দাবি করে তারা বলেন, এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এ ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত যাতে আগামী মন্ত্রিপরিষদ বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয় না। বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় এবং পরবতীর্ ২৯ বছর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে নিষ্পেষিত হয়েছে। কোটা সংস্কার বা বাতিল করার আগে এই ২৯ বছরের হিসাব দিতে হবে। এছাড়া এই ৩০% কোটা তাদের আত্মমযার্দা ও সম্মানের সাথে জড়িত। মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানের দিকে তাকিয়ে হলেও এই কোটা বহাল রাখা জরুরি। এ ব্যাপারে তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সমাবেশ থেকে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেয়ার কমর্সূচি ঘোষণা করা হয়। ঢাকায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে সকাল সাড়ে ১০টায় এবং জেলা ও উপজেলা পযাের্য় জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নিবার্হী অফিসারের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্বারকলিপি দেয়ার কমর্সূচি পালনের জন্যে ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’-এর সভাপতি সাজ্জাদ হোসেন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের প্রতি আহŸান জানানো হয়। সংগঠনের সভাপতি মো. সাজ্জাদ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং কোষাধ্যক্ষ ও দপ্তর সম্পাদক আহমাদ রাসেলের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন শহীদ সংসদ সদস্য নুরুল হক হাওলাদারের কন্যা ও সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য জোবায়দা হক অজন্তা, সহ-সভাপতি ওমর ফারুক সাগর, সম্পাদকমÐলীর সদস্য আনিসুর রহমান মোল্লা, আজহারুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক, জোবায়েদ আলম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি কেএম আবদুল্লাহ সোহাগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ অনলাইন কমান্ডের সভাপতি নাজমুল হক, সাধারণ সম্পাদক লামিয়া খানম, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান প্রজন্ম পরিষদের সদস্য সচিব কামরুজ্জামান শিমুল এবং বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যলয়ের সভাপতি মাহফুজ শাকিল ও সাধারণ সম্পাদক খালেদুজ্জামান ফরছিম।