প্রাণস্পর্শী হলুদে ছেয়ে গেছে মাঠ

বাম্পার ফলনে কৃষকের হাসি

রিষার আবাদ এবার ভালো হয়েছে। বাম্পার ফলনের হাতছানিতে কৃষকের চোখে-মুখে আনন্দের রেখা ফুটেছে। মাঠজুড়ে এখন হলুদের সমারোহ। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জরণে মুখরিত হয়ে উঠেছে গ্রামবাংলা। পাবনা জেলাসহ তিন উপজেলা ডিমলা (নীলফামারী), মহাদেবপুর (নওগাঁ) ও বোচাগঞ্জের (দিনাজপুর) সরিষার আবাদ নিয়ে আমাদের এই আয়োজন

প্রকাশ | ১৯ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

ইউসুফ আলী সুমন, মহাদেবপুর (নওগাঁ)
দেশের উত্তর জনপদের খাদ্যভান্ডার হিসেবে পরিচিত নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলায় বিনামূল্যে সরকারি প্রণোদনার সার ও উন্নত বীজ পেয়ে সরিষা চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। বর্তমানে উপজেলাজুড়ে মাঘের হিমেল হাওয়ায় জমিতে দোল খাচ্ছে সরিষা। মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত মাঠ, সেই সঙ্গে বাম্পার ফলনের হাতছানিতে কৃষকের মুখে ফুটে উঠেছে হাসি। এ বছর সরিষাচাষিরা অধিক মুনাফা লাভ করবে বলে মনে করছেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। জানা গেছে, গত ৩ বছর ধরে কৃষি বিভাগ 'বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিটিউট' উদ্ভাবিত অধিক ফলনশীল (উফশি) বারি-১৪ ও বারি-১৫ জাতের সরিষা চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছে মৌসুমের শুরুতেই। উন্নত জাতের সরিষা মাত্র ৫৫-৬০ দিনেই ঘরে তোলা যায়। প্রতি হেক্টরে ফলন হয় প্রায় দেড় হাজার কেজি। সরিষা কাটার পর ওই জমিতে আবার বোরো ধান আবাদ করা যায়। এতে জমির সর্বাধিক ব্যবহারও নিশ্চিত হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাদেবপুর উপজেলা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে এবার সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ৪৩৫ হেক্টর। সেখানে আবাদ হয়েছে এক হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৫ হেক্টর বেশি। সরিষা চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে কৃষি বিভাগ প্রণোদনা হিসেবে বিনামূল্যে ৮৫০ জন কৃষককে এক কেজি উন্নত জাতের বীজ, ২০ কেজি ডিএপি (ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট) ও ১০ কেজি এমওপি (মিউরেট অফ পটাশ) সার সরবরাহ করছেন। উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের কয়েকজন কৃষক বলেন, আমন ধান কাটার পর জমি তৈরি করে সরিষা আবাদ করা হয়। ৫৫-৬০ দিনের মধ্যে সরিষার ফলন ঘরে আসে। এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করতে খরচ হয় ১৫০০-২০০০ টাকা। প্রতি বিঘায় ৭-৮ মণ সরিষার ফলন হয়, যা বর্তমান বাজার মূল্যে ১০-১২ হাজার টাকা। মহাদেবপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ অরুণ চন্দ্র রায় বলেন, তারা সরিষা চাষ বৃদ্ধিতে সরকারিভাবে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে প্রণোদনা কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। যথাযথ পরামর্শ ও পরিচর্যার বিষয়ে কৃষকদের দিকনির্দেশনাও দেওয়া হচ্ছে। কৃষকরা যতক্ষণ ফসল ঘরে না তুলছেন, ততক্ষণ কৃষি বিভাগ তাদের পাশে থাকবে।