টাকা দেবে বিশ্বব্যাংক

৬০ হাজার রোহিঙ্গা শিশুকে ভাষা শেখাবে সরকার

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী ৬০ হাজার শিশু রয়েছে। এসব শিশুকে বামির্জ ও ইংরেজি ভাষা শিক্ষা দেয়া হবে

প্রকাশ | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

যাযাদি রিপোটর্
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত ৬০ হাজার রোহিঙ্গা শিশুকে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা দিতে ১৫০০ লানির্ং সেন্টার স্থাপন করা হবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত¡াবধানে সেখানে রাখাইন ও ইংরেজি ভাষা শিক্ষা দেয়া হবে। বিশ্বব্যাংকের অথার্য়নে এ কাযর্ক্রম পরিচালিত হবে-এমনটাই জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী ৬০ হাজার শিশু রয়েছে। এসব শিশুকে বামির্জ ও ইংরেজি ভাষা শিক্ষা দেয়া হবে। লানির্ং সেন্টারে শিশুদের আনন্দ দিতে টেলিভিশনসহ নানা রকম বিনোদন মাধ্যম থাকবে। শিশুদের আনন্দের সঙ্গে শিক্ষার মধ্যে নিয়ে আসতে এ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যেন তারা শিশুশ্রমে জড়িয়ে না পড়ে। জানা গেছে, বিশ্বব্যাংকের দেয়া ২৫ মিলিয়ন ডলার অনুদানে এ কাযর্ক্রম পরিচালিত হবে। এর অধের্ক অথর্ রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য লানির্ং সেন্টার স্থাপন ও পরিচালনা করা হবে। বাকি অথের্ক অথর্ দিয়ে রোহিঙ্গাদের বসবাসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো ও বিদ্যালয় যাতায়াতের সড়ক সংস্কার করা হবে। পুরো কাযর্ক্রমটি তদারকি করবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে শিক্ষক নিয়োগ দেবে জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থা ইউনিসেফ। তবে কোনোভাবেই রোহিঙ্গা শিশুদের বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভতির্র সুযোগ দেয়া হবে না। রস্ক প্রকল্পের মাধ্যমে দেশীয় এনজিওর সাবির্ক সহায়তায় স্কুলগুলো পরিচালিত হবে। গত ২৯ আগস্ট প্রকল্পের প্রি-একনেক হয়েছে। চলতি সপ্তাহে এটি একনেকের চূড়ান্ত সভায় ওঠার কথা রয়েছে। এ ছাড়াও চলতি মাসের শুরুতে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে আথির্ক বিষয়ে চুক্তি হয়েছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মো. গিয়াস উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিশ্বব্যাংকের অথার্য়নে পরিচালিত রস্ক (আউট অব স্কুল চিলড্রেন) প্রকল্পের অথর্ নিধাির্রত সময়ে শেষ না হওয়ায় তারা (বিশ্বব্যাংক) কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষায় ব্যয় করার পরামশর্ দেয়। ঋণের টাকা রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য ব্যয় করতে রাজি না হওয়ায় তারা নতুন করে ২৫ মিলিয়ন অথর্ অনুদান দিতে রাজি হয়। এ প্রস্তাবের পর আমরা তাদের বলেছি, রোহিঙ্গা শিশুদের অবস্থানের কারণে আমাদের ১৩১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামোর ক্ষতি হয়েছে। বিদ্যালয় যাওয়ার রাস্তাঘাটেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা দিতে হলে অনুদান হিসেবে বরাদ্দ দিতে হবে। অনুদানের অধের্ক টাকা রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষায় খরচ করা হবে। বাকি টাকা ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়ের অবকাঠামো ও রাস্তাঘাট নিমাের্ণ ব্যয়ের প্রস্তাবে রাজি হয়ে বিশ্বব্যাংক ২৫ মিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছে। অন্যদিকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ঝরেপড়া ও শিক্ষাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ দেয়া পঁাচ বছরেমেয়াদি রস্ক প্রকল্পের মেয়াদ এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। ব্যাপক অনিয়ম ও দুনীির্তর পরও প্রকল্পের বরাদ্দ অথর্ শতভাগ খরচ করতে পারেনি। প্রকল্পের কমর্কতাের্দর অদক্ষতাই এর জন্য দায়ী বলে সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেছেন। এরপরও প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানো হয়েছে। এ বিষয়ে অতিরিক্ত সচিব মো. গিয়াস উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রকল্পের ২৪ কোটি টাকা খরচ হয়নি। রস্ক প্রকল্পের মাধ্যমে পরিচালিত স্কুলের শেষ ব্যাচের শিক্ষাথীর্রা এখন তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। তাদের প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করতে আরও দুই বছর সময় লাগবে। প্রকল্প বন্ধ করে দিলে এ শিশুরা কোথায় পড়বে? এ বিবেচনায় প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর বাড়ানো হয়েছে।’ অথর্ খরচ না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রকল্পের শুরুতে স্কুল নিবার্চনে অনেক অনিয়ম হয়েছে। অনেকগুলো স্কুল আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। এসব স্কুলের জন্য বরাদ্দ অথর্ রয়ে গেছে।’