শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
১০ মাস পর সশরীরে মন্ত্রিসভা বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী

জেল-জরিমানার বিধান রেখে বয়লার আইনের খসড়া অনুমোদন

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৬ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০
শেখ হাসিনা

শিল্প-কারখানায় ব্যবহৃত বয়লারের গা থেকে নিবন্ধন নম্বর অপসারণ, পরিবর্তন, বিকৃত বা অদৃশ্যমান করে অন্য বয়লার ব্যবহার করলে জেল-জরিমানার বিধান রেখে 'বয়লার আইন, ২০২০' এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে প্রায় ১০ মাস পর সোমবার মন্ত্রিসভা বৈঠকে স্বশরীরে অংশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন তিনি দুটি আইন এবং দুটি নীতিমালা অনুমোদন দিয়েছেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিং করেছেন।

সবশেষ গত বছরের ৬ এপ্রিল সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে গণভবনে মন্ত্রিসভার শেষ বৈঠক হয়েছিল। ওই বৈঠকেও অল্প কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও সচিব অংশ নিয়েছিলেন। এরপর থেকে মন্ত্রিসভার বৈঠকগুলো ভার্চুয়ালি হয়েছে।

তথ্য অধিদপ্তর (পিআইডি) থেকে সরবরাহকৃত মন্ত্রিসভা বৈঠকের ছবিতে দেখা যায় প্রধানমন্ত্রীর বাম পাশে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আর ডান পাশে কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বসেছেন। আর সামনের দিকে এক পাশে অন্য চারজন মন্ত্রী এবং আরেক পাশে মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ অন্য সচিবরা বসেছেন, সবার মুখেই মাস্ক।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ১৯২৩ সালের আইন দিয়ে বয়লার চালানো হতো। অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে বলে নতুন আইন করা হচ্ছে। শিল্প-কারখানার বয়লার দুর্ঘটনার ঝুঁকিহ্রাস, বয়লার ব্যবহারে সচেতনতা বৃদ্ধি; মানসম্মত বয়লার তৈরি, আমদানি, ব্যবহার ও পরিচালনা এবং শিল্প-কারখানার নিরাপদ কর্মপরিবেশ সৃষ্টির জন্য নতুন আইন করা হচ্ছে।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, কোনো মালিক বা ব্যক্তি বয়লারের গায়ে স্থায়ীভাবে চিহ্নিত বা সংযোজিত নিবন্ধন নম্বর অপসারণ, পরিবর্তন, বিকৃত ও অদৃশ্যমান করে অন্য কোনো বয়লার ব্যবহার করলে দুই বছরের কারাদন্ড, দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড দেওয়া হবে। মোবাইল কোর্ট আইনেও এক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধান বয়লার পরিদর্শক এবং বয়লার পরিদর্শক থাকবেন। বয়লার বোর্ড থাকবে, সেখানে একজন চেয়ারম্যান এবং দুইজন সদস্য থাকবেন। প্রধান পরিদর্শক শুনানির সুযোগ দিয়ে এক লাখ টাকা এবং দ্বিতীয়বার এই অপরাধ করার জন্য দ্বিগুণ জরিমানা করতে পারবেন।

শিল্প সচিব বোর্ডের চেয়ারম্যান হবে জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধান পরিদর্শক নিবন্ধন দেবে।

সচিব বোর্ডের প্রধান হলে বোর্ডপ্রধান হিসেবে তার জবাবদিহি কীভাবে নিশ্চিত হবে, সেই প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কেবল তো এটার নীতিগত অনুমোদন হলো, এ বিষয়টি আইন মন্ত্রণালয়কে লিখব।

সব করপোরেশনকে একটি কর্তৃপক্ষে অধীনে আনার প্রয়োজনীয়তা আছে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে আগের একটি কমিটি পুনর্গঠন করেছে মন্ত্রিসভা। সরকারি করপোরেশন (ব্যবস্থাপনা সমন্বয়) আইন প্রণয়নের আবশ্যকতা নিরূপণের বিষয়ে ২০১৫ সালের ৯ ফেব্রম্নয়ারি মন্ত্রিসভা থেকে গঠিত কমিটি পুনর্গঠনের প্রস্তাব মন্ত্রিসভা বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

১৯টি মন্ত্রণালয়ের ৫০টি করপোরেশন আছে জানিয়ে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সব করপোরেশনই আইন দিয়ে গঠিত হয়েছে। কিন্তু জেনারেল একটা স্ট্রাকচার, ব্যবস্থাপনা, দায়িত্ব-কর্তব্য এগুলোর যেন একটা মিল থাকে। সে জন্য এই কমিটি পুনর্বিন্যাস করে সেখানে কৃষিমন্ত্রীকে যুক্ত করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, আগের মতোই অর্থমন্ত্রীকে ওই কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। এখন কমিটি সভা করে দেখবে এ বিষয়টির আদৌ প্রয়োজন আছে কি না।

এছাড়া সভায় বাংলাদেশ টু্যর অপারেটর ও টু্যর গাইড (নিবন্ধন ও পরিচালনা) আইন-২০২০ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। মন্ত্রিসভায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় প্রণীত জাহাজ নির্মাণ শিল্প উন্নয়ন নীতিমালা-২০২০ এর খসড়া।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে