লাখো মানুষের ভরসা একটি বাঁশের সাঁকো

প্রকাশ | ২৬ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

মো. আহসানুল হক চন্দন, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী)
বাহাগিলী ইউপির চাড়াল কাটা নদীর ওপর বাঁশের সাঁকো -যাযাদি
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের বাহাগিলী ইউপির চাড়াল কাটা নদীর শামসুল চেয়ারম্যানের ঘাটে স্মরণাতীত কাল থেকে একটি সেতুর অভাবে ৮০ গ্রামের প্রায় লক্ষাধিক লোক চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। স্থানীয়দের সহায়তায় একটি বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করা হলেও গত বন্যায় তা বিলীন হয়ে যায়। ওই নদীতে সেতু না থাকায় জোড়াতালি বাঁশের সাঁকো দিয়ে চলাচলে বিপাকে পড়েছেন নদীর এপার-ওপারের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী, কৃষক, ব্যবসায়ী এবং পথচারীসহ অন্যরা। অনেক সময় ছোট-বড় দুর্ঘটনাসহ সাঁকো থেকে পড়ে গিয়ে পথচারীদের নাকানি-চুবানি খেতে হয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, সেতুর অভাবে বিশেষ করে বাহাগিলী ইউপির ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে দক্ষিণ দুরাকুটির ৬ ওয়ার্ডের ৫০ গ্রামের ৪৫ হাজার মানুষের উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগের দূরত্ব ৪ কিলোমিটার বাড়িয়ে দিয়েছে। সরকারি সব গুরুত্বপূর্ণ সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো ইউনিয়নের এক প্রান্তে হওয়ায় দক্ষিণ দরাকুটির লোকজনকে তারাগঞ্জ, কালুরঘাট সড়ক হয়ে ১৫ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করে ইউপি পরিষদ, ভূমি অফিস, সেটেলমেন্ট, উপজেলা পারিষদ, স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাটবাজার এবং থানায় আসতে হয়। ভ্যানচালক আনিছুল বলেন, সাঁকোর ওপর দিয়ে গেলে উপজেলা সদরের দূরত্ব ৪ কিলোমিটার। আর বিকল্প পথে ১৫ কিলোমিটার ঘুরে কৃষিপণ্য নিয়ে কিশোরগঞ্জের হাটে যেতে হয়। উত্তর দুরাকুটি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন দুলাল জানান, অনেক সময় স্কুল-কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীদের ৪ কি.মি'র স্থলে অতিরিক্ত ১৫ কি.মি. ঘুরে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে যেতে হয়। এতে করে শিক্ষার্থীদের সঠিক সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে হিমশিম খেতে হয়। উ. দুরাকুটি গ্রামের প্রভাষক সুজাউদ্দৌলা লিপটন বলেন, উপজেলার সামগ্রিক উন্নয়নের চিত্রে দক্ষিণ দুরাকুটি গ্রামটি অনেক অনুন্নত ও অবহেলিত শুধু যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতার কারণেই শত বছর বয়সি দক্ষিণ দুরাকুটির গ্রামটি সেতুর অভাবে মৃতপ্রায়। প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প 'গ্রাম হবে শহর' স্স্নোগনের বাস্তব রূপ দিতে এলাকাবাসী একটি সেতুর জন্য আবেদন জানিয়েছেন। দক্ষিণ দুরাকুটি গ্রামের আজিজুল, জয়নাল জানান, চৌদ্দ পুরুষ থেকে গরুর লেজ ধরে নদী পারাপারই ছিল একমাত্র ভরসা। বাপ-দাদার আমল থেকে নদীর ওপর সেতু হয়, আর হয় না। জনপ্রতিনিধিরা ভোটের সময় প্রতিশ্রম্নতির ফুলঝুরি আওড়িয়ে ভোট নিয়ে যায়, পরে আর দেখা মেলে না। এ ব্যাপারে বাহাগিলী ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমান শাহ্‌ দুলু বলেন, গত ১৫ বছর ধরে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের কাছে আবেদন করার পরও এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেননি তারা। উপজেলা প্রকৌশলী অফিসার মজিদুল ইসলাম জানান, সেতু নির্মাণের যাবতীয় কাগজপত্র ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে ওই ঘাটে সেতু নির্মাণ করা হবে।