মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
সংসদে বিল পাস

দেওয়ানি আদালতের আর্থিক বিচারিক এখতিয়ার বাড়ছে

আগে একজন সহকারী জজ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত মূল্যমানের মামলা নিষ্পত্তি করতে পারতেন। এখন সেটা বাড়িয়ে ১৫ লাখ টাকা করার কথা বলা হয়েছে বিলে
যাযাদি ডেস্ক
  ২৮ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

দেওয়ানি মামলা বিচারের ক্ষেত্রে নিম্ন আদালতের বিচারকদের আর্থিক বিচারিক এখতিয়ার বাড়িয়ে আইন সংশোধন করতে সংসদে বিল পাস করা হয়েছে।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বুধবার 'দ্য সিভিল কোর্টস (সংশোধন) - ২০২১' সংসদে পাসের প্রস্তাব করেন। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর দেওয়া জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো এবং সংশোধনী প্রস্তাবগুলোর নিষ্পত্তি করেন স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। গত ১৯ জানুয়ারি বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী।

আগে একজন সহকারী জজ দুই লাখ টাকা পর্যন্ত মূল্যমানের (সম্পত্তি বা অর্থে যে অঙ্কের টাকা নিয়ে বিরোধ) মামলা নিষ্পত্তি করতে পারতেন। এখন সেটা বাড়িয়ে ১৫ লাখ টাকা করার কথা বলা হয়েছে বিলে। জ্যেষ্ঠ সহকারী জজের বিচারিক এখতিয়ার চার লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫ লাখ টাকা এবং আপিল শুনানির ক্ষেত্রে জেলা জজের এখতিয়ার পাঁচ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে পাঁচ কোটি টাকা করা হয়েছে।

পাঁচ কোটি টাকার কম মূল্যমানের কোনো মামলায় যুগ্ম-জেলা জজ আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আপিল বা কার্যক্রম হাইকোর্ট বিভাগে বিচারাধীন থাকলে তা জেলা জজ আদালতে স্থানান্তরের বিধান রাখা হয়েছে বিলে। আগে পাঁচ কোটি টাকার কোনো আপিল হলে হাইকোর্টে যেতে হলেও আইন সংশোধনের পর জেলা জজ সেই আপিল শুনানি করতে পারবেন বলে বিলে বিধান রাখা হয়েছে।

২০১৬ সালে আইন করে সিভিল কোর্টগুলোর বিচারিক এখতিয়ার বাড়ানো হলেও হাইকোর্ট তা স্থগিত করে দেয়। ফলে নতুন করে আইন সংশোধন করা হচ্ছে।

বিলে ২০১৬ সালের ওই সংশোধন রহিত করে একটি ধারা সংযোজন করা হয়েছে।

সরকার ২০১৬ সালেও টাকার অঙ্কে বিচারিক এখতিয়ার একই পরিমাণ বাড়িয়ে আইন সংশোধন করেছিল। কিন্তু তার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একটি রিট আবেদন হলে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ সরকারের ওই গেজেটের কার্যকারিতা স্থগিত করে দেয়।

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে আইনমন্ত্রী ২০১৬ সালের সংশোধনী উচ্চ আদালতে বাতিল হওয়ার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, প্রশাসনিক জটিলতাসহ বিচারপ্রার্থী জনগণের অসুবিধার কথা মাথায় রেখে সরকার আইনটি সংশোধন আবশ্যক মনে করছে।

বিলটি পাসের প্রক্রিয়ার সময় সংসদ সদস্য হারুনূর রশীদ (বিএনপি) ও ফখরুল ইমাম (জাতীয় পার্টি) প্রায় একই সুরে প্রশ্ন তুলে বলেন, '২০১৬ সালে হাইকোর্ট এটি স্থগিত করেছে। প্রায় ৫ বছর পর নতুন বিল কেন?'

জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু প্রশ্ন তুলে বলেন, 'আমরা একটা আইন করি। তারপর রিট হয়। পছন্দ না হলে সংসদে পাস হওয়া বিল বাতিল করে দেয়। এর একটা সুরাহা হওয়া দরকার।'

এসব প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, 'রিট করার অধিকার সংবিধান দিয়েছে। রিটে কোনো সমস্যা নেই।'

মন্ত্রী বলেন, ২০১৬ সালের বিলটি নিয়ে উচ্চ আদালতের সঙ্গে সরকারের 'আউট অব কোর্ট' সেটেলমেন্ট হয়েছে। সরকার জানিয়েছে তারা নতুন করে আইন প্রণয়ন করবে, তখন হাইকোর্ট জানিয়েছে, তারা নতুন আইন দেখে আগের বিষয়টির বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে