সুনামগঞ্জে আদালতের রায়ে ফের স্বামীর ঘরে ৫৪ স্ত্রী

প্রকাশ | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:০০

যাযাদি ডেস্ক
এ এক অন্যরকম রায়। আপস রফার মাধ্যমে ৫৪ যুগলকে ফের গাঁটবন্ধনে বেঁধে দিলেন আদালত। রায় অনুযায়ী সুনামগঞ্জের ৫৪ জন স্ত্রী স্বামীর ঘরে ফিরলেন। সোমবার দুপুরে এ রায় দিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবু্যনালের বিচারক জাকির হোসেন ৫৪টি মামলায় আপস রায়ের মাধ্যমে এ পদক্ষেপের কথা জানান। এর মাধ্যমে যৌতুক ও নারী নির্যাতন মামলা থেকে ৫৪ জন স্বামী এই রায়ের মাধ্যমে অব্যাহতি এবং একই সঙ্গে স্বাভাবিকভাবে সংসার করার সুযোগ পেলেন। দীর্ঘদিন বিচার প্রক্রিয়া শেষে যুগান্তকারী রায় দেন বিচারক জাকির হোসেন। মামলার হয়রানি, সংসার এবং দম্পতিদের সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। প্রথমে তাদের স্বামীদের ভালো হওয়ার জন্য সুযোগ দেন আদালত। পরে দুই পক্ষের মধ্যে আপস-মীমাংসার মাধ্যমে মিলিয়ে দেন তাদের। এতে দুই পক্ষই লাভবান হবেন এবং অনেক মামলাজট কমবে মনে করেন সুনামগঞ্জ আদালতের আইনজীবীরা। রায় ঘোষণা হওয়ার পর আদালত নিজ উদ্যোগে দম্পতিদের ফুল এবং শিশুদের চকলেট দিয়ে অভ্যর্থনা জানান। মূলত শিশুদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এবং পরিবারের বন্ধন অটুট রাখতে এই পদক্ষেপ নেন আদালত। এছাড়া ১১টি মামলায় আপস নিষ্পত্তি না হওয়ায় ১১ জন স্বামীকে দেড় বছরের কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। আসামিদের মধ্যে একজন ছাড়া সবাই পলাতক। দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- নূরুল ইসলাম, মো. শামীম, নজরুল ইসলাম, শাহেদ চৌধুরী, রকিবুল ইসলাম, ইমরান আহমদ, আল-আমিন, মো. সোহেল মিয়া, আল-আমিন, মইন উদ্দিন ও রিপন মিয়া। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবু্যনালের পিপি নান্টু রায় বলেন, 'এটি একটি যুগান্তকারী রায়। এর আগেও একইভাবে ৪৭টি মামলার রায় দেন আদালত। এরকম রায়ে আদালতে মামলা জট কমবে এবং মানুষ আদালতে ঘন ঘন হাজিরা দেওয়া থেকে রক্ষা পাবে। এভাবে দ্রম্নত মামলার রায় বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের জন্য ভালো দিক।' নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবু্যনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন বলেন, 'পরিবারগুলোকে বাঁচাতে এ ধরনের রায় দেওয়া হয়েছে। পরিবারে ঝামেলা থাকবে, অভাব থাকবে, সব কিছু মানিয়ে চলতে হবে। যদি আবার কোনো ঝামেলা হয় আপনারা লিগ্যাল এইডে অভিযোগ দেবেন, সেখানে আপনারা মামলা ছাড়াই বিচারকের মাধ্যমে অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে পারবেন। যদি কোনো জটিল ঝামেলা হয় তাহলে আপনারা আবার আদালতের কাছে আসবেন, আদালতের দরজা আপনাদের জন্য সব সময় খোলা।'