আশুগঞ্জে ড্রেন ভেঙে তলিয়ে গেছে শতাধিক বিঘা ইরি জমি

প্রকাশ | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:০০

স্টাফ রিপোর্টার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
আশুগঞ্জে সেচ প্রকল্পের ভেঙে যাওয়া ড্রেন দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে পানি -যাযাদি
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আশুগঞ্জ-পলাশ এগ্রো ইরিগেশন সেচ প্রকল্পের ড্রেন ভেঙে শতাধিক বিঘার রোপা ইরি ধানের জমি তলিয়ে গেছে। নষ্ট হয়ে গেছে সরিষা জমি। মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর এলাকার একটি ড্রেন ভেঙে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়। সেচ প্রকল্পের কুলিং রিজার্ভার পুকুর ভরাটের ফলে আয়তন কমে যাওয়ায় ও খাল- ড্রেন ভরাট করার কারণে ড্রেন ছোট হয়ে পানির চাপে ড্রেনটি ভেঙে যায় বলে জানিয়েছেন কৃষক ও সংশ্লিষ্টরা। সেচ প্রকল্পের প্রধান সুইচ বন্ধ করে ড্রেনে পানির প্রবাহ কমিয়ে ড্রেন মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিএডিসি কর্তৃপক্ষ। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ করে সেচ প্রকল্পের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে উপজেলার সোহাগপুর এলাকায় ড্রেনের উত্তর পাশের একটি অংশ ভেঙে পড়ায় তীব্র স্রোতে পানি ফসলি জমিতে ঢুকতে থাকে। এক পর্যায়ে ড্রেনের পাশে থাকার জনৈক জলফু মিয়ার একটি বালির ভিটি ও গাছপালা নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। পানির তোড়ে তলিয়ে যায় প্রায় শতাধিক বিঘা রোপা ইরি ধান ও পাকা সরিষা জমি। পানিতে ব্যাপক বালি থাকায় জমির ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। সংশ্লিষ্টরা জানান, সেচ প্রকল্পের আশুগঞ্জ উপজেলার রেলগেইট এলাকায় বিদু্যৎ বিভাগের পুকুরটি ছিল প্রধান রিজার্ভার। গত বছর এ পুকুরটির প্রায় ৭৫ ভাগ ভরাট করে ফেলে বিদু্যৎ বিতরণ বিভাগ। ফলে রিজার্ভার পুকুরটি ছোট হয়ে পানির ধারণক্ষমতা কমে যায়। এদিকে আশুগঞ্জ নদী বন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত মহাসড়ক ফোর লেনে উন্নীতকরণের কাজে মহাসড়কের পাশে প্রায় ১১ কিলোমিটার ড্রেন-খাল ভরাট-ভেঙে ফেলা হয়। অন্যান্য বছর যেখানে প্রায় ৩০/৪০ ফুট প্রশস্ত ড্রেন-খাল দিয়ে সেচের পানি প্রবাহিত হতো বর্তমানে সেই ড্রেনগুলো সংকুচিত হয়ে কোনো কোনো স্থানে ৪/৫ ফুট নালায় পরিণত হয়েছে। এছাড়া খালে বালি পড়ে গভীরতাও কমে গেছে। ফলে সেই ড্রেন দিয়ে তীব্র গতিতে পানি যাওয়ায় পানির চাপে ড্রেন ভেঙে যায়। চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে প্রকল্পের আওতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর, আশুগঞ্জ, সরাইল ও নবীনগর উপজেলার প্রায় ১৬ হাজার হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা প্রদান ও প্রায় ৭০ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যে গত ১৫ জানুয়ারি সেচের পানি অবমুক্ত করা হয়। পানিতে তলিয়ে যাওয়া জমির মালিক কৃষক হাজী আবুল কাসেম জানান, ড্রেন ভেঙে তার ১৮ বিঘা জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে রয়েছে ইরি ধান ও সরিষা। বিএডিসির (ক্ষুদ্রসেচ) সহকারী প্রকৌশলী খলিলুর রহমান বলেন, বিদু্যৎ কেন্দ্রের অভ্যন্তরে সেচ প্রকল্পের প্রধান সুইচ পয়েন্টে পানির বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পানি কমে গেলে ড্রেন মেরামত করা হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিএডিসির (ক্ষুদ্র সেচ) নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পের আওতা ব্যাপক। কিন্তু চার লেন প্রকল্পের কাজে সেচ প্রকল্পের ড্রেন ছোট হয়ে গেছে। উজানে পানি পৌঁছানোর জন্য ড্রেন এখন পানির চাপ বেশি পড়ায় তা ভেঙে গেছে।