বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
মাদক মামলায় আরও একটি ভিন্নধর্মী রায়

বাড়িতে থেকেই সাজা ভোগের আদেশ, পড়তে হবে দশটি বই

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর
  ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:০০

যশোরে মাদক মামলার আরও একটি ভিন্নধর্মী রায় দিয়েছেন আদালত। দুই বছরের দন্ডপ্রাপ্ত পারভীন বেগমকে বাড়িতে থেকেই সাজা ভোগের আদেশ দেন। তবে এ সময়ে বাড়িতে থেকে পড়তে হবে ১০টি বই। আর এটিসহ মানতে হবে ৮ শর্ত। সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসারের নজরদারিতে থেকে তাকে এই সাজা ভোগ করতে হবে। মঙ্গলবার যশোরের যুগ্ম দায়রা জজ ২য় আদলতের বিচারক শিমুল কুমার বিশ্বাস ভিন্নধর্মী এই রায় দিয়েছেন।

দন্ডপ্রাপ্ত পারভীন বেগম শহরের আশ্রম রোডের গাড়োয়ান পট্টির মৃত ওহাব মুন্সির মেয়ে। তবে শর্ত ভঙ্গ করা হলে তাকে ২ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও ১ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১ মাসের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হয়ে কারাগারে অন্তরীণ থাকতে হবে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুগ্ম দায়রা জজ ২য় আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) আইয়ুব খান বাবুল।

রায় অনুযায়ী ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের ওপর লেখা জাহানারা ইমামের একাত্তরের দিনগুলি, নীলিমা ইব্রাহিমের আমি বীরাঙ্গনা বলছি, মালেকা বেগমের মুক্তিযুদ্ধে নারী, মুহাম্মদ জাফর ইকবালের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, আনিসুল হকের মা, জহির রায়হানের আরেক ফাগুন, একুশের গল্প, সেলিনা হোসেনের নিরন্তর ঘণ্টাধ্বনি ও যাপিত জীবন, শওকত ওসমানের আর্তনাদ ও সৈয়দ শামসুল হকের আরও একজন। বই পাঠ করতে হবে। অন্য শর্তগুলো হলো, সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসারের নজরদারিতে বাড়িতে থেকে কোনো প্রকার অপরাধের সঙ্গে জড়ানো যাবে না। শান্তি বজায়

রাখতে হবে এবং সবার সঙ্গে সদাচরণ করবেন। আদালত অথবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কখনো তলব করলে যথাস্থানে হাজির হতে হবে। কোনো প্রকার মাদক সেবন, বহন, সংরক্ষণ এবং সেবনকারী, বহনকারী ও হেফাজতকারীর সঙ্গে মেলামেশা বা চলাফেরা করা যাবে না। আদালত কর্তৃক প্রবেশন অফিসারের তত্ত্বাবধানে থেকে নিজের বাসস্থান ও জীবন ধারণের উপায় সম্পর্কে অবহিত করতে হবে। এই সময়কালীন প্রবেশন অফিসারের লিখিত অনুমতি ব্যতীত নির্দিষ্ট এলাকার বাইরে যাওয়া যাবে না।

মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০০৬ সালের ১৫ জুন আসামি পারভীনকে আটক ও তার কাছ থেকে ২০ পুরিয়া হেরোইন উদ্ধার করে পুলিশ। এই মামলায় আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর দীর্ঘ ১৫ বছরের মধ্যে আদালতে হাজিরা মিস করেননি পারভীন। এ মামলা ছাড়া তার আর কোনো মামলাও নেই। স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগে প্রমাণিত হয়। আসামির সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত শর্তযুক্ত করে বাড়িতে থেকে সাজা ভোগের রায় দিয়েছেন বিচারক। এর আগে গত সোমবার আরেকটি রায়ে আজিমন বেগম নামে এক নারীকে দুই বছর কারাদন্ড দিয়ে একই ধরনের শর্তে বাড়িতে থাকার রায় দেওয়া হয়েছিল। তবে আজিমনকে বই পড়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে