শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
জনপদের সেতু বৃত্তান্ত

ব্রিজ নির্মাণে মহতী উদ্যোগ

ফরিদপুরের বোয়ালমারী
দীপঙ্কর পোদ্দার অপু
  ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:০০

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ময়না ইউনিয়নের বিলসড়াইল বটতলা নামক স্থানে চন্দনা-বারাশিয়া নদীর ওপর গ্রামবাসীর উদ্যোগে একটি ব্রিজ নির্মাণের কাজ চলছে। ব্রিজটির দৈর্ঘ্য ১০০ ফুট এবং প্রস্থ সাড়ে ৩ ফুট। চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি থেকে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। নির্মাণ কাজের সঙ্গে জড়িতদের ধারণা আগামী ২/৩ মাসের মধ্যে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে। তবে খরস্রোতা না হলেও একটি নদীর ওপর গ্রামবাসীর উদ্যোগে ব্রিজ নির্মাণ

করা যায় কি না তা নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

প্রকৌশলীদের অনুমোদন ছাড়া সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হবে কি না জানতে চাইলে উদ্যোক্তা হারুন-অর রশিদ বলেন, আমাদের সেতু দিয়েতো ভারি গাড়ি চলাচল করবে না। তাছাড়া যেসব মিস্ত্রি সেতুর কাজ করে তাদের মতামতের ভিত্তিতে বেজমেন্ট ও পিলারে ১৬ মিলি মাপের প্রয়োজনীয় সংখ্যক রড দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে বোয়ালমারী উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, 'যে কোনো নদীর ওপর কোনোভাবে প্রযুক্তিগত বিষয় না দেখে সেতু নির্মাণ সঠিক নয়। এটা ভালোর চেয়ে মন্দ হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। মানুষের জীবনের ঝুঁকি থাকবে।'

ব্রিজ নির্মাণের মূল উদ্যোক্তা বিলসড়াইল গ্রামের শেখ হারুন-অর রশিদ সাংবাদিকদের বলেন, 'প্রায় দুই মাস আগে এ ব্যাপারে এলাকাবাসীকে নিয়ে একটি সভা করি। ওই সভায় নিজেদের টাকায় ব্রিজটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই সভায় গ্রামের বিত্তশালীসহ সর্বস্তরের লোকদের কাছে ব্রিজ নির্মাণের জন্য আর্থিক সাহায্য চাওয়া হয়। ইতোমধ্যে শতাধিক গ্রামবাসীর মাধ্যমে প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা সংগৃহীত হয়েছে। এ অবস্থায় গত ২৯ জানুয়ারি থেকে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু হয়। এ কাজে নিয়োজিত স্থানীয় রাজমিস্ত্রিদের প্রতি বর্গফুট বাবদ দিতে হবে ৩৫০ টাকা। প্রতিদিন ১৪ জন রাজমিস্ত্রি ব্রিজ নির্মাণের কাজ করছে।'

এলাকাবাসী জানায়, গত ১৫ বছর ধরে তারা চন্দনা-বারাশিয়া নদীর ওই জায়গায় একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের কাছে ধরনা দিয়েছেন। ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমনকি স্থানীয় সাংসদের কাছে তারা এ সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন। এছাড়া কয়েকবার আবেদন করেছেন উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয়ে; কিন্তু তাতেও কোনো ফল জোটেনি। এ কাজে সরকারি-বেসরকারি কোনো সহায়তা না পেয়ে গ্রামবাসী স্বেচ্ছায় টাকা তুলে ব্রিজটির নির্মাণ কাজ শুরু করেছে। ব্রিজটি নির্মিত হলে ৮টি গ্রামের মানুষের যাতায়াত সহজ হবে।

সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির মো. সেলিম বলেন, 'ইউনিয়ন পরিষদে ব্রিজ নির্মাণের জন্য কোনো বাজেট নেই। ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে তাই ব্রিজ নির্মাণ করা সম্ভব নয়।'

উলেস্নখ্য, ৫/৬ বছর আগে বোয়ালমারী সদর ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামে অবস্থিত আরএমএস ইটভাটার পশ্চিম পাশে ওই একই নদীর ওপর অন্য একটি ব্রিজ নির্মিত হয়েছিল ব্যক্তিগত উদ্যোগে। ওই ব্রিজটি এখন জরাজীর্ণ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে